কেনাকাটা
সতর্কতা
অনলাইনে এখন জীবনের বেশিরভাগ অংশ কেটে যায় আমাদের সবার। তাছাড়া একুশ শতকের পৃথিবীতে ক্রমশ যে বদল ঘটছে তার মধ্যে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ হল অর্থনীতি আর সমাজব্যবস্থা। বিশ্বায়ন পরবর্তী সময়ে মানুষের চাহিদা এবং চাহিদার পূরণের প্রক্রিয়ায় এসেছে নানান গুরুতর বদল। এখন যেমন ইন্টারনেটের মাধ্যমে লহমায় পৃথিবীর যে কোনও প্রান্তের খবর চলে আসে আমাদের কাছে তেমনই বিভিন্ন জিনিসের সঙ্গে পরিচিত হবার ফলে প্রয়োজনেও এসেছে কিছু গুরুতর পরিবর্তন।
এই মুহূর্তে হাতের মুঠোয় ইন্টারনেট আর ব্যাঙ্কে কিছু টাকা থাকলেই কিনে ফেলা যায় যে কোনও জিনিস, যে কোনও মুহূর্তেই। জামাকাপড়, তরিতরকারি, গয়নাগাটি, বিভিন্ন গ্যাজেট এমনকি মঙ্গলগ্রহে জমি পর্যন্ত মানুষ কিনে ফেলছে অনলাইনেই। আর বিশেষ করে বিশ্বজুড়ে এই অতিমারী মানুষকে ঘরবন্দি করে ফেলেছে আজ , ফলে নিত্য প্রয়োজনীয় সমস্ত জিনিসই আনতে হচ্ছে অনলাইনেই। কিন্তু ইন্টারনেটের মাধ্যমে কেনাকাটার সময় ভীষণ সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন, কারণ এটা এমন ধরনের লেনদেন যেখানে কেনার আগে সেই বস্তু ক্রেতা সচক্ষে সামনাসামনি দেখতে পাচ্ছেন না। যে সব জায়গায় আমাদের তাই সাবধান হতে হবে, তা হল—
অনলাইন লেনদেন
অনলাইনে জিনিস কিনে ইদানিং বস্তু হাতে পাবার আগেই পেমেন্ট করে দিতে হয় বেশিরভাগ সময়। কোনও কোনও বিক্রেতার এই পলিসি থাকলেও কিছু কিছু জায়গায় ক্রেতা ভয়ানকভাবে ঠকেও যান। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য, কার্ডের পিন ইত্যাদি প্রকাশ করে ফেলার ফলে কখনও কখনও নিজের টাকা গায়েব হয়ে যায় এমন ঘটনাও আকছার শোনা যায় এখন। ফলে ক্যাশ অন ডেলিভারির রাস্তা এই ক্ষেত্রে ভীষণ উপকারী। আর তা সম্ভব না হলে বিক্রেতার সম্পর্কে একশ শতাংশ নিশ্চিত না হওয়া অব্দি কোনও ক্রেতার উচিত নয় নিজের জরুরি তথ্য প্রকাশ করা। এছাড়াও ক্রেডিট কার্ড বিল ও ব্যাংক স্টেটমেন্টে লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে অনাকাঙ্ক্ষিত কোন ট্রানজেকশন থাকলে শীঘ্রই ব্যবস্থা নেওয়া যায়।

ইন্টারনেট সংক্রান্ত সাবধানতা-– এমন কোন ওয়েবসাইটে লেনদেন উচিত নয় যার ফিডব্যাক সম্পর্কে সঠিক কোনও তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। কোনও লিঙ্কে ক্লিক করার আগে সাবধান হতে হবে যাতে কোনও ব্যক্তিগত তথ্য অন্যের হাতে না পড়ে। লোভনীয় কোন ই-মেইলে যাচাই না করে ক্লিক বা লেনদেন করা যাবে না একেবারেই। লোভনীয় কোন পপ-আপেও দেখেশুনে ক্লিক করাই ভালো। সুখ্যাতি-সম্পন্ন অনলাইন প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য কোনও জায়গায় বিশেষ সতর্ক হয়ে কেনাকাটা করতে হবে।

লুকনো দাম–
https://www.amazon.in/Womens-clothing/b?ie=UTF8&node=1953602031
কখনও কখনও কোনও জিনিসে প্রচুর ছাড় দেখে লোভে পড়ে অর্ডার দেবার পর যখন প্রোডাক্টটি হাতে এল, তখন হয়তো দেখা গেল, ডেলিভারি চার্জ বা শিপিং চার্জ বাবদ এত টাকা খসাতে হচ্ছে যে প্রোডাক্টটির মূল দামের তুলনায় অনেকটাই বেশি টাকা দিতে হচ্ছে ক্রেতাকে। সুতরাং অনলাইন শপিং-এ কোনও অর্ডার দেওয়ার আগে একটু ভাল করে দেখে নেওয়া দরকার যে কোথাও ছোট হরফে কোনও ডেলিভারি চার্জের উল্লেখ রয়েছে কি না। উল্লিখিত দামের পাশে স্টার (*) চিহ্ন দিয়ে সেই বস্তুর জন্য আদপে কত দাম দিতে হবে, সেটা লেখা রয়েছে কি না, সেদিকেও দৃষ্টি রাখতে হবে।

ডেলিভারির সতর্কতা– কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পণ্য দিতে বললে নির্দিষ্টভাবে পণ্য সরবরাহ যেন করা হয় এবং কেনার রসিদ দেওয়া হয়, তা বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে। ইদানিং দামি কোনও গ্যাজেট অর্ডার করে পার্সেলের মধ্যে থান ইট পাবার ঘটনাও শোনা গিয়েছে। ফলে কোন কুরিয়ার কোম্পানি থেকে জিনিস আসছে, তার সম্পূর্ণ তথ্য ক্রেতার হাতে থাকা জরুরি।

আসল পণ্য-– অধিকাংশ নাম করা ব্র্যান্ডের কসমেটিকস, মেকআপ, জুতো, গ্যাজেট এবং ক্ষেত্রবিশেষে কাপড়ের ব্র্যান্ডের রেপ্লিকা আর ডুপ্লিকেট অর্থাৎ একই নামে কম দামের প্রোডাক্টের ছড়াছড়ি রয়েছে বাজারে। ডুপ্লিকেট এবং রেপ্লিকার মধ্যে পার্থক্য হিসেবে বলা যায় যে রেপ্লিকা বাইরের দেশ থেকে আমদানি করা হয়, ফলে একদম অরিজিনাল না হলেও সেগুলোর মান নিম্নমানের উপাদান দিয়ে তৈরি ক্ষতিকারক বস্তুর থেকে বা ডুপ্লিকেটের থেকে উন্নত। তাই অবশ্যই খোঁজ রাখা উচিত যে ক্রেতা আসল পণ্য কিনছেন, রেপ্লিকা কিনতে চলেছেন নাকি ডুপ্লিকেট! এটা জানার জন্য ব্র্যান্ডগুলোর নিজস্ব ওয়েবসাইট দেখা দরকার।

https://banglakhabor.in/2020/11/10/%e0%a6%95%e0%a6%ae%e0%a6%b2%e0%a6%be-%e0%a6%b9%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a6%bf%e0%a6%b8-%e0%a6%95%e0%a7%87/