নিজস্ব সংবাদদাতা: অক্সিজেনের অভাব বর্তমানে গোটা দেশজুড়ে। ঘাটতি পূরণে দিনরাত কাজ করে চলেছেন স্বাস্থ্যকর্মী থেকে শুরু করে যুবসমাজের অনেকেই। আর এবার গতকাল থেকে দক্ষিণ কলকাতার বেহালায় চালু হল ‘অক্সিজেন লঙ্গর’। সূত্রের খবর, বেহালা গুরুদ্বার প্রবন্ধক কমিটি ও ইন্ডিয়ান হিউম্যানেটেরিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে সেই লঙ্গর চালু করা হয়েছে।
গতকাল সকাল ১১ টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বেহালা গুরুদ্বারায় সেই পরিষেবা পাওয়া গিয়েছে। ১৮ জন সেই পরিষেবা নিয়েছেন। আজ থেকে সকাল ৯ টা থেকে এই পরিষেবা চালু হয়ে গিয়েছে। চলবে রাত ৯ টা পর্যন্ত। প্রয়োজন অনুসারে সেই সময়সীমা বাড়ানো হবে। এখানে অক্সিজেন নেওয়ার জন্য কী কী লাগবে? এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হবে বেহালা গুরুদ্বারার সাধারণ সম্পাদক সতনম সিং আলুওয়ালিয়া জানান, চিকিৎসকের পরামর্শের ভিত্তিতে অক্সিজেন দেওয়া হবে। পরিষেবা পাওয়ার জন্য প্রেসক্রিপশন আনতে হবে। তাতে বলা থাকতে হবে যে রোগীর অক্সিজেন লাগবে। সঙ্গে লাগবে রোগীর আধার কার্ড।
সতনম সিং আলুওয়ালিয়া আরও জানিয়েছেন যে, ‘ফার্স্ট-কাম-ফার্স্ট’-এর ভিত্তিতে পরিষেবা দেওয়া হবে। বিনামূল্যে অক্সিজেন প্রদান করা হবে। কোনও টাকা লাগবে না। গুরুদ্বারার তরফে জানানো হয়েছে, কোনও রোগী অক্সিজেনের জন্য আসার পর তাঁর শারীরিক পরীক্ষা করা হবে। সেজন্য চিকিৎসক এবং নার্স থাকবেন। রোগীর শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা এবং অন্যান্য শারীরিক মাপকাঠি পরীক্ষা করে দেখা হবে।
সতনম সিং আলুওয়ালিয়া জানিয়েছেন, আপাতত গুরুদ্বারায় গিয়ে পরিষেবা মিলবে। ভবিষ্যতে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে পরিষেবা দেওয়ারও পরিকল্পনা আছে। উল্লেখ্য, গত সপ্তাহেই অক্সিজেনের অভাবে ভুগতে থাকা রোগীদের জন্য ‘অক্সিজেন অন হুইলস’ নামক একটি বিশেষ পরিষেবা চালু হয়েছে। ফোন পেলেই শ্বাসকষ্টে ভোগা আক্রান্তের বাড়িতে তড়িঘড়ি পৌঁছে যাচ্ছে অ্যাম্বুলেন্স। ২৪ ঘন্টা এই পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে একেবারে নিখরচায়। এমনভাবেই অক্সিজেনের সঙ্কটকালে শহরের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে ‘কোভিড কেয়ার নেটওয়ার্ক’।
সংগঠনের তরফে বিশিষ্ট চিকিৎসক তথা লিভার ফাউন্ডেশনের কর্তা অভিজিৎ চৌধুরী বলেন, ‘রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগ আমাদের সাহায্য করছে দুটি অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে। সেই অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যেই থাকছে অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটরও। থাকছেন প্রশিক্ষিত কর্মীও।’ নির্দিষ্ট নম্বরে ফোন করে কেউ যদি জানান যে বাড়ির সদস্য শ্বাসকষ্টে ভুগছেন তাই এই গাড়ি পৌঁছে যাবে। অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর দিয়ে সেই ব্যক্তির কষ্ট লাঘব করার চেষ্টা হবে। কষ্ট কিছুটা লাঘব হলে তাঁকে কাছের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে সেই অ্যাম্বুলেন্সে করেই।