নিজস্ব সংবাদদাতা- নবান্ন অভিযানের সামিল হয়ে পুলিশের লাঠির আঘাতে গুরুতর আহত হন ডিওয়াইএফআই নেতা মহিদুল ইসলাম মিদ্যা। পরে পার্ক স্ট্রিটের এক নার্সিংহোমে তিনি মারা যান। সেই নিয়ে রাজ্য প্রশাসন ও কলকাতা পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়ে বাম কর্মী সমর্থকরা। এখনও রাজ্য রাজনীতি এই মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হচ্ছে। কিন্তু যেদিন মইদুল মারা যান সেদিন বিকেলে সংবাদিক সম্মেলন করে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন এই বাম কর্মীর পরিবারের কাউকে রাজ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। সেই প্রতিশ্রুতি মতো এই মৃত কর্মীর স্ত্রীর হাতে হোম গার্ডের চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হল।
বাম ছাত্র ও যুব সংগঠনগুলি চাকরির দাবিতে ১১ ফেব্রুয়ারি নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছিল। সেই অভিযানের সামিল হয়েছিলেন বাঁকুড়ার কোতুলপুরের ডিওয়াইএফআই কর্মী মইদুল ইসলাম মিদ্যা। ঐদিন ধর্মতলার ডোরিনা ক্রসিংয়ের কাছে ব্যাপক লাঠিচার্জ করে কলকাতা পুলিশ। স্বাভাবিকভাবেই বাম কর্মীসমর্থকরা রাজ্য প্রশাসনের ওপর ওই ঘটনার পর ক্ষিপ্ত ছিল। কিন্তু মইদুলের মৃত্যু তাদের সেই ক্ষোভকে দাবানলে পরিণত করে। কিছুটা পরিস্থিতি সামলানোর জন্যই মুখ্যমন্ত্রী নিহতের পরিবারের একজনকে সরকারি চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। অন্তত বাম শিবিরের দাবি তাই।
মুখ্যমন্ত্রীর চাকরির প্রতিশ্রুতির কথা শুনে মইদুল ইসলামের স্ত্রী জানিয়েছিলেন তিনি কোনো কম টাকার চাকরি করতে চান না। তাকে চাকরি দেওয়া হলে যেন ঠিকঠাক মাইনের একটা চাকরি দেওয়া হয়, যাতে তিনি পাঁচজনের সংসারের যাবতীয় দায়ভার বহন করতে পারেন। প্রসঙ্গত পেশায় অটোচালক মইদুলের পরিবারে মা ও স্ত্রীয়ের পাশাপাশি দুই মেয়ে এবং এক ভাগ্নি আছে। তার মৃত্যুর ফলে গোটা পরিবারটি অকূলপাথারে পড়েছিল যে কিভাবে তারা খেয়ে পড়ে বাঁচবে। এই হোম গার্ডের চাকরির নিয়োগপত্র পাওয়ার ফলে সংসারে খাওয়া খরচের চিন্তা কিছুটা হলেও মিটল বলেই ধারণা ওয়াকিবহাল মহলের।
রাজ্যের গ্রামোন্নয়ন ও পঞ্চায়েত মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরা বাঁকুড়ার জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারকে সঙ্গে নিয়ে আজ বিকেলে মইদুল ইসলামের বাড়িতে যান। তিনি এই বাম কর্মীর স্ত্রীর হাতে হোম গার্ডের চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেন। জানা গিয়েছে আপাতত কোতুলপুর থানাতেই নিয়োগ করা হবে মইদুলের স্ত্রীকে। পরবর্তীতে নিয়ম অনুযায়ী তাকে অন্যত্র বদলি করা হতে পারে।