দুর্গাপুজো যেতে না যেতেই এবার হাজির বাঙালি অন্যতম প্রিয় উৎসব, দীপাবলি। দীপাবলী আলোর উৎসব,রোশনাই এর উৎসব। মাটির প্রদীপ, মোমবাতি,ডিজিটাল লাইট,ইলেকট্রিক লাইট-এর সম্ভারে সেজে ওঠে প্রত্যেকটা বাড়ির প্রত্যেকটা কোনা। করোনার পরিস্থিতিতে দীর্ঘ সাত-আট মাস ধরে মানুষ গৃহবন্দি, উৎসবই পারে একমাত্র এই একঘেয়েমি থেকে মুক্তি দিতে। কিন্তু সোশ্যাল ডিসটেন্সিং এর কারণে প্রত্যেকটা উৎসব বাড়িতেই কাটাতে হচ্ছে আমাদের। কিন্তু তাতে মন খারাপ করার মতন কিছু নেই, এবারের দীপাবলিতে বাড়িতে থেকেই সুন্দর করে সাজিয়ে নেওয়া যাক নিজের প্রিয় বাসাটিকে। এবারের দীপাবলি হোক না অন্যরকম তবে অন্যরকমভাবেই সুন্দর হোক এই দীপাবলি ।আসুন দেখে নেওয়া যাক এই দীপাবলিতে নিজের ঘর সুন্দরভাবে সাজিয়ে তোলার কয়েকটি সহজ উপায়।
রঙ্গোলী

উৎসবের দিনগুলিতে বিশেষত অবাঙালি পরিবারগুলি বাড়ির সামনেটা রঙ্গোলী দিয়ে সাজায়, কিন্তু বর্তমানে বিভিন্ন বাঙালি পরিবারেও এই রংগোলীর প্রচলন অবাধ। রঙ্গোলীর উজ্জ্বল রঙ গুলো বয়ে আনে একটা ইতিবাচক আকর্ষণ। যদিও রঙ্গোলী বানানোর জন্য শৈল্পিক দক্ষতা প্রয়োজন। কিন্তু না,তা নিয়ে ভাবার কিছু নেই।ফ্লিপকার্ট অ্যামাজন এর মতন অনলাইন শপিং সাইট গুলোতে পাওয়া যায় রঙ্গলি আঁকার জন্য স্টেনসিল, যার সাহায্যে ছাপ তুলে সহজেই মেঝের উপর ফুটিয়ে তোলে যায় অপূর্ব রঙ্গোলীর কারুকার্য। একটু সময় থাকলে নিজের হাতে বানিয়ে নেওয়া যায় এই স্টেনসিল। একটু মোটা কার্টিজ পেপার বা আর্ট পেপার নিয়ে সেটার মধ্যে বিভিন্ন রকমের কলকা এঁকে সেগুলো কাঁচি দিয়ে কেটে নিলেই তৈরি নিজস্ব স্টেনসিল। ব্যাস তারপর শুধু বাজার থেকে রঙ্গলি রং কিনে নেই সেগুলো কে ভরাট করার অপেক্ষা। সুন্দর রঙ্গোলী মিনিটে তৈরি।
মাটির প্রদীপ

মাটির প্রদীপের সাথে দীপাবলি অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। কোন বাঙালি পরিবারে দীপাবলীর দিন প্রদীপ জ্বালানো হয় না, এরকমটা হতেই পারে না।এই মাটির প্রদীপ হয়ে উঠতে পারে অসাধারণ ঘর সাজানোর সরঞ্জাম। বাজার থেকে খুব সস্তায় মাটির প্রদীপ কিনে নেই সে গুলোকে পোস্টার কালার ফেব্রিক কালার দিয়ে রং করে নিজের পছন্দমত ডিজাইন এ সাজিয়ে তোলা যায়। ঘরের প্রত্যেকটা কোনে থাকুক আপনার নিজের পছন্দের ডিজাইনের বিভিন্ন রংয়ের ছোট্ট ছোট্ট মাটির প্রদীপ। দীপাবলির রাতে সেগুলো জ্বালিয়ে ছবি তুলে তাক লাগিয়ে দিন আপনার ফ্রেন্ডলিস্টের সবাইকে।
ঝুলন্ত লণ্ঠন

বাতিল প্লাস্টিকের বোতল, পুরনো কার্ডবোর্ড এগুলোর সাহায্যে খুব সহজেই বানিয়ে ফেলুন অসাধারণ সব ডিজাইনের লন্ঠন। উজ্জল রঙ,অভ্র এগুলোর সাহায্যে দিয়ে দিন একেবারে মনমুগ্ধকর রূপ। লন্ঠন বানানো হয়ে গেলে ভিতরে টুনি বাল্ব ভরে কানেকশন নিয়ে নিন। তারপর দড়ির সাহায্যে তা ঝুলিয়ে দিন সদর দরজায় বা বারান্দায়।এরকম লন্ঠন বানানোর ভিডিও ইউটিউবে প্রচুর রয়েছে প্রয়োজন মনে করলে একবার এক ঝলক দেখে নেবেন না হয়। যাতে বাড়ির সবাই এক বাক্যে বলে Waste থেকে একেবারে Best জিনিস হয়েছে।
ফ্লোটিং ক্যান্ডেল

একটু বড় আকারের একটা গোল পাত্র নিয়ে তাতে জল ভরে তার উপরে বাজার থেকে কিনে আনা তরতাজা ফুলের পাপড়ি ছড়িয়ে দিন। বাজারে খুব অল্প মূল্যে পাওয়া যায় ফ্লোটিং ক্যান্ডেল।সেই ক্যান্ডেল কয়েক প্যাকেট কিনে এনে জ্বালিয়ে ভাসিয়ে দিন সেই জলে ফলাফল দেখে নিজেই স্তম্ভিত হয়ে যাবেন। এক কথায় অসাধারণ লাগবে।
ফুলের সাজ

ফুলের কোন বিকল্প হয় না।তাই দীপাবলিতে ঘর সাজানোর লিস্টে অবশ্যই রাখুন রকমারি ফুলের নাম।বানানো মালার দাম বেশি হতে পারে তাই একসাথে অনেকগুলো কুচো ফুল কিনে এনে সে গুলোকে বাড়িতেই নিজের পছন্দ মতন গেঁথে নিন তারপর সেই মালা ঘরের প্রত্যেকটা দেওয়ালে বা ঘরের সদর দরজায় ঝুলিয়ে দিন নিজের ইচ্ছা মতন। ফুলের সাজে সেজে উঠবে আপনার বাড়ি।
তাহলে আর ভাবনা কিসের নিজের বাড়িটাকে সুন্দরভাবে সাজিয়ে প্রিয়জনদের সাথে বাড়িতেই উপভোগ করুন দীপাবলীর দিনটা। অঢেল সেলফি আর প্রাণভরে খাওয়া-দাওয়ায় উদযাপন করুন অন্যরকম দীপাবলি, সুরক্ষিত দীপাবলি। বাড়িতে থাকুন, সুস্থ থাকুন।