নিজস্ব সংবাদদাতা: যেখানে করোনা সংক্রমণের শৃঙ্খল ভাঙতে গতকাল থেকে বাংলা জুড়ে লকডাউন জারি রয়েছে, তখন নারদ মামলায় নয়া মোড়। সোমবার সকাল ন’টা নাগাদ কলকাতার প্রাক্তন মেয়র, তৃণমূলের বিধায়ক এবং বর্তমানে পরিবহণ মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে সিবিআই। অন্তত ফিরহাদের তাই দাবি। বাড়ি থেকে বেরোনোর সময় সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, ‘নারদ মামলায় আমায় গ্রেফতার করা হল। সিবিআই গ্রেফতার করেছে। তবে এর বিরুদ্ধে আদালতে মোকাবিলা হবে।’ সূত্রের খবর, রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরের থেকে অনুমতি নিয়েই এই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সিবিআই।

এদিকে শুধু ফিরহাদ-ই নন, সোমবার সকালেই সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্র এবং শোভন চট্টোপাধ্যায়কেও নিজাম প্যালেসে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে সিবিআই সূত্রের খবর মিলেছে। একটা সূত্রে এমনও দাবি করা হচ্ছে, ইতিমধ্যেই চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। চার জনের বিরুদ্ধে এদিনই আদালতে চার্জশিট পেশ করা হবে। এদিকে, ফিরহাদকে গ্রেফতার করতে আসা মাত্রই চেতলায় বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা। ফিরহাদের সামনেই রাস্তায় শুয়ে পড়েন তাঁরা। তাঁদের কোনওভাবে সামাল দিয়ে সিবিআই-এর সঙ্গে বেরিয়ে যান ফিরহাদ। সম্প্রতি নারদ মামলায় অভিযুক্ত তৎকালীন চার বিধায়কের বিরুদ্ধে সিবিআইকে চার্জশিট পেশ করার অনুমতি দেন রাজ্যপাল।

প্রসঙ্গত, নারদে অভিযোগের তালিকায় আর যাঁদের নাম রয়েছে, তাঁদের মধ্যে শুভেন্দু অধিকারী এবং মুকুল রায় এখন বিজেপি বিধায়ক। কিন্তু, তাঁদের নাম চার্জশিটে দেওয়ার জন্য অনুমোদন চাওয়া হয়নি। যদিও সিবিআই জানিয়েছে, যে সময়ে মামলা শুরু হয়েছিল, সেই সময়ে শুভেন্দু এবং মুকুল, দুজনেই সাংসদ ছিলেন। তাঁর ক্ষেত্রে তাই অনুমোদন দেবেন লোকসভার ও রাজ্যসভার অধ্যক্ষ। এদিকে, সেই কথা মানতে নারাজ তৃণমূল। বিধানসভার অধ্যক্ষের সঙ্গে পরামর্শ না করেই বেআইনিভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে দাবি করেন রাজ্য বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। ক্ষোভের সুরে বিমান বাবু বলেন, ‘ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়দের যেভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ বেআইনি। কারণ, কলকাতা হাইকোর্ট জানতে চেয়েছিল, কাউকে গ্রেফতার করার ক্ষেত্রে অধ্যক্ষের অনুমতি নেওয়া হয়েছে কিনা। আদালত জানতে চাওয়ায় আমি বলেছিলাম, আমাদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই। আমাদের কাছে এ বিষয়ে সিবিআই কিছু জানতেও চায়নি। কোনও চিঠিও দেয়নি।’