নিজস্ব সংবাদদাতা: আজ, শুক্রবার থেকে দেশের কৃষকদের জন্য ১৯ হাজার কোটি টাকা অনুমোদন করল নরেন্দ্র মোদী সরকার। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শুক্রবার সকাল ১১ টা নাগাদ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন রাজ্যের কৃষকদের সঙ্গে কথা বলেন এবং এই টাকা রিলিজ করার কথা আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করেন। সূত্রের খবর, বাংলার চাষীরাও এবার প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান যোজনার আওতায় ডাইরেক্ট বেনিফিট ট্রান্সফার তথা সরাসরি তাঁদের অ্যাকাউন্টে টাকা পাবেন। ভোটের সময়ে প্রচারে এসে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, বাংলায় বিজেপি ক্ষমতায় এলেই প্রত্যেক কৃষকের অ্যাকাউন্টে এ বছর ১৮ হাজার টাকা করে ট্রান্সফার হবে। বাংলায় পিএম-কিষাণ প্রকল্প চালু করতে দেয়নি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার। তাই আগের দু’বছর ৬ হাজার টাকা করে ১২ হাজার টাকা বাংলার চাষীরা পায়নি। সেই সঙ্গে এ বছর পাওয়ার কথা ৬ হাজার টাকা। অর্থাৎ মোট ১৮ হাজার টাকা।
তবে বাংলার ভোটে বিজেপি জিততে পারেনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃতীয়বার সরকার গড়েছেন। তবে এবার মুখ্যমন্ত্রী পিএম কিষাণ প্রকল্প শুরু করার অনুমোদন দিয়েছেন। ফলে বাংলার যে ২৭ লক্ষের বেশি চাষীর এই টাকা পাওয়ার জন্য আবেদন করেছেন তাঁরা এ বার টাকা পান কিনা সেটাই কৌতূহলের বিষয় ছিল। সেদিক থেকে এখনও অবধি সদর্থক বার্তাই দিয়েছে মোদী সরকার। ভোটের সময়ে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার বাংলায় এই প্রকল্প চালু করতে না দিলেও ২৭ লক্ষের বেশি কৃষক অনলাইনে কেন্দ্রের পোর্টালে নাম নথিভুক্ত করিয়েছেন। তবে রাজ্য সরকার তাঁদের নাম ও অ্যাকাউন্টও ভ্যালিডেট করে দেয়নি। ফলে কেন্দ্র চাইলেও টাকা পাঠাতে পারছে না।
তবে থেমে থাকেননি মমতাও। গতকাল পিএম কিষান যোজনার কথা বলতে গিয়ে রাজ্য সরকারের প্রকল্প কৃষক বন্ধুর কথাও টেনে আনেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। তিনি বলেন, দীর্ঘ টালবাহানা করে নানা অজুহাত দেখিয়ে কেন্দ্র সরকার কিষান সম্মান নিধি টাকা দিচ্ছিল না। ২০১৮ সালে এ রাজ্যে কৃষক বন্ধু যোজনা চালু হয়েছে। যার দেখাদেখি পরবর্তীতে ২০১৯ সালে পিএম কিষান যোজনার প্রচলন করে কেন্দ্র সরকার। তার মতে, পিএম কিষানের তুলনায় কৃষক বন্ধুর সুবিধা যে অনেক বেশি একথাও জানিয়ে দেন তিনি। তিনি লেখেন, ‘তুল্যমূল্য বিচারে আমাদের কৃষকবন্ধু প্রকল্পে সুযোগ-সুবিধা অনেক বেশি। এতে ভাগচাষি ও বর্গাদাররা অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন। ভবিষ্যতে এর সুযোগ সুবিধা আরও বাড়ানো হচ্ছে’।
রাজ্য সরকারের এই লড়াইয়ের জন্যই পিএম কিষান সম্মান নিধির টাকা কৃষকদের অ্যাকাউন্টে পৌঁছেছে বলেও এই চিঠিতে দাবি করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, ‘আপনাদের প্রত্যেকের প্রাপ্য ছিল ১৮ হাজার টাকা। কিন্তু পাচ্ছেন অনেক কম। এইটুকুও পেতেন না যদি না আমরা আপনাদের হয়ে লড়াই করতাম। আপনারা চিন্তা করবেন না। আপনাদের প্রাপ্য বকেয়া আদায়ের জন্য আমরা সর্বদা লড়াই করব। যতক্ষণ না পুরো বকেয়া মেটানো হচ্ছে, ততক্ষণ আমরা এই লড়াই বন্ধ করব না।’