দুই বছর পর আবারও ভারত ও চীনের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে। যাইহোক, সীমান্তে অচলাবস্থা এখনও শেষ হয়নি।গালভান উপত্যকার সংঘর্ষের দুই বছর পর, মনে হচ্ছে ভারত ও চীন পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নত করার নতুন প্রচেষ্টার দিকে এগোচ্ছে। ভারতের অনেক সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হচ্ছে, আগামী দিনে উভয় দেশের সর্বোচ্চ নেতা একে অপরের দেশ সফর করতে পারেন। এই রিপোর্ট অনুযায়ী, এই মাসেই ভারতে আসতে পারেন প্রথম চিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। এরপর বেইজিং যেতে পারেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।

এরপর আরও অনেক উচ্চ পর্যায়ের সফর ও বৈঠক সম্ভব। উত্তেজনা বজায় রয়েছে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকা দাবি করেছে যে এই সমস্ত পদক্ষেপের পিছনে চীনের উদ্দেশ্য হল কয়েক মাস পরে চীনে অনুষ্ঠেয় ব্রিকস সম্মেলনে অংশ নিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও চীনে যান। যদিও ভারত ও চীনের সরকার এসব কর্মসূচির কোনো অনুমোদন দেয়নি। বর্তমান পরিস্থিতি দেখে দুই দেশের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে এমন কর্মসূচির সম্ভাবনা কম বলেই মনে হচ্ছে। 2020 সালের মে মাসে লাদাখের গালভান উপত্যকায় দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে হিংসাত্মক সংঘর্ষের পর, দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্কের এমন পর্যায়ে অবনতি হয়েছিল যে পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসেনি। আজও সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্টে উভয় দেশের সেনাবাহিনী মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে।

ভারত

অচলাবস্থার অবসান ঘটাতে দুই দেশের সামরিক কমান্ডারদের মধ্যে ১৫ দফা আলোচনা হয়েছে, কিন্তু অচলাবস্থা এখনো রয়ে গেছে। ভারত অনেক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ফোরামে বলেছে যে দুই দেশের সম্পর্কের উন্নতির জন্য সীমান্ত এলাকায় শান্তি প্রয়োজন। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ শ্রিংলা ইউক্রেন যুদ্ধের ছায়া না হয়ে সর্বশেষ আলোচনার ঠিক আগে একই কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি আরও বলেন যে “পারস্পরিক শ্রদ্ধা, পারস্পরিক সংবেদনশীলতা এবং পারস্পরিক স্বার্থ” দুই দেশের সম্পর্কের অগ্রগতির ভিত্তি হবে। নেতৃবৃন্দের মধ্যে এই সম্ভাব্য বৈঠক নিয়ে গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে স্পষ্ট নয় যে, চীন যদি তাদের প্রস্তাব করে থাকে, তাহলে এর উদ্দেশ্য কী। বর্তমানে ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে পশ্চিমা দেশগুলোর ক্ষোভের মুখে থাকা রাশিয়াকে শুধু ভারত ও চীন- এই দুটি বড় দেশই সমালোচিত করেনি।

এ কারণে রাশিয়া, ভারত ও চীন পাশাপাশি পাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু ভারত অত্যন্ত সতর্কতার সাথে এগোচ্ছে এবং এখন পর্যন্ত কোনো দলে যোগদানের আগ্রহ দেখায়নি। ভারতও ইউক্রেনে হামলার জন্য রাশিয়ার সমালোচনা করেনি এবং জাতিসংঘে রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রস্তাবে ভোট দেওয়া থেকে সরে এসেছে। এই উন্নয়ন আগামী দিনে ভারত-চীন সম্পর্কের ওপর কতটা প্রভাব ফেলবে, সেটাই দেখতে হবে।