নিজস্ব সংবাদদাতা: প্রায় তিন মাসের লড়াই শেষে ফলাফল এখন পরিষ্কার। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে জয় পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ২০০-র বেশি আসনে জিতে তৃতীয় বারের জন্য বাংলায় সরকার গড়ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গেরুয়া ঝড় থামিয়ে নবান্নের রং সবুজ।
কিন্তু শাসকদল নবান্নের ক্ষমতায় ফিরলেও গতকালের নির্বাচনী গণনা নিয়ে উঠে গেছে বেশ কিছু প্রশ্ন। বিশেষত নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা এক্ষেত্রে নানা মহলে আলোড়নের সৃষ্টি করেছে। মাথা চারা দিয়ে উঠেছে একাধিক সন্দিহান জিজ্ঞাসা। নন্দীগ্রামের ফলাফল নিয়ে প্রশ্ন তো অনেকেই তুলেছেন। এখন চোখ রাখা যাক আরও এক গুরুতর প্রশ্নে।
গতকাল ভোট গণনা শুরু হওয়ার প্রায় প্রথম থেকেই মিলে যাচ্ছিল অধিকাংশ বুথ ফেরত সমীক্ষার নিদান। হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলছিল তৃণমূল বিজেপির মধ্যে। এমনকি বেশ কিছু কেন্দ্রে বড় ব্যবধানে এগিয়েও ছিল গেরুয়া শিবির। কিন্তু বেলা গড়াতেই ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে যায় বাংলার মানুষের রায়। আর তাতেই কি অস্বস্তির কাঁটা বেঁধে গণনাকারীদের মনে?
না হলে কেন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বিজেপি প্রার্থীরা দৌড়ে পিছিয়ে পড়তেই বসে যায় খোদ নির্বাচন কমিশনের সার্ভার? কেন বিকল হল অনলাইন ফল প্রকাশের পদ্ধতি?
বস্তুত গতকাল প্রথম থেকে নির্বাচন কমিশনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে ফল প্রকাশে বিশেষ সমস্যা না হলেও বেলা বাড়তেই তার সার্ভার ডাউন হয়ে গিয়েছিল। আর নানা মহল থেকেই তা নিয়ে প্রশ্ন উড়ে এসেছে। এমনিতেও এ রাজ্যে শুরু থেকেই নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতার দিকে আঙুল উঠেছে একাধিক বার। কেউ কেউ সরাসরি কমিশনকে দেগে দিয়েছেন কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপির ‘দালাল’ হিসেবে। অনেকেরই অভিযোগ, বিজেপির অঙ্গুলিহেলনেই অ-গেরুয়া রাজ্যে আট দফার দীর্ঘ নির্বাচন আয়োজন করেছে কমিশন। আর গতকাল ভোটের ফলাফলে গেরুয়া দল পিছিয়ে পড়ছিল বলেই তা যাতে দেশের অন্যান্য এলাকায় সহজে ছড়িয়ে না পড়তে পারে তাই ইচ্ছাকৃতভাবে সাময়িক সার্ভার ডাউন করা হয়েছিল।
অভিযোগের সত্যতা অবশ্য প্রমাণ সাপেক্ষ। কিন্তু যে কারণেই সার্ভার ডাউন হোক, আদতে বাস্তব চেপে থাকেনি। আট দফার ভোটের পরেও ক্ষমতায় ফিরেছেন মমতাই। নন্দীগ্রামের ফলাফল ব্যতিক্রম মাত্র। বর্তমানে একেবারেই অপ্রাসঙ্গিক।