মাসাজের নাম শুনলেই আরামে চোখ বুজে আসে অনেকের। বিশেষত আরামপ্রিয় বাঙালি তো মাসাজের বহু পুরোনো ভক্ত। আগেকার দিনের সাহিত্য হোক কিংবা হাল আমলের ফ্যাশান, মাসাজের চর্চা পাওয়া যায় সর্বত্রই।
সাধারণত মাসাজ সেন্টারে গেলে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মীদের হাতে বিলাসবহুল উপকরণের মাধ্যমে মেলে রাজকীয় মাসাজ। দৈনন্দিন জীবনের ক্লান্তি,অবসাদ কিংবা কাজের চাপকে মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলতে মাসাজের বিকল্প নেই। সুযোগ পেলেই তাই হাতের কাছের পার্লার কিংবা মাসাজ সেন্টারে ঢুঁ মেরে আসি আমরা।
এহেন মাসাজের আবার অনেক রকমফেরও আছে। বিউটি পার্লারের আলো আঁধারির মধ্যে ফুল বডি ম্যাসাজ যেমন হয়, তেমনই হয় ফেসিয়ালের সময় শুধু মুখেই হয় সমস্ত কারসাজি। দেশ বিদেশের নানা ধরণের মাসাজের কায়দার কথা ভাবলে মনে আসে অভিনব ফিস মাসাজ বা ফিস স্পা (Fish Spa)-এর কথা। শখ করে পায়ের পাতায় মাছের কুটুস কুটুস কামড় খেয়ে থাকেন অনেকেই। কিন্তু সব তো হল, তাই বলে সাপের? মাসাজ? একেবারে বিষধর? শুনতে অবাক লাগলেও সাপের মাসাজ কিন্তু একেবারেই নতুন নয়। মিশরের একটি মাসাজ সেন্টারে বহুদিন ধরেই চলে আসছে অভিনব এই পরিষেবা।
জানা গেছে, অভিনব এই মাসাজের নাম ‘স্নেক মাসাজ’ (Snake Massage)। আফ্রিকা মহাদেশের মিশরে এই মাসাজ রীতিমতো বিখ্যাত। রাজধানী কায়রোতে একটি বিলাসবহুল স্পা-তে গেলেই মেলে স্নেক মাসাজ। স্নেক মাসাজ অর্থে শরীরের উপর সাপেদের ছটফটানি। সেই সাপ অবশ্যই বিষহীন।
স্নেক মাসাজে আরামপ্রার্থী ব্যক্তিকে উপুড় করে শুইয়ে দিয়ে পিঠের ওপর বেশ কয়েকটা সাপ এক সঙ্গে ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর তারা ওই ব্যক্তির শরীরের উপর দিয়েই ওঠানামা করে। কিলবিল করে। ইচ্ছেমত ঘুরে বেড়ায়। সাপ নিয়ে শরীরচর্চার এই অভিনব বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত হলেও সম্প্রতি তা সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে সামনে এসেছে বৃহত্তর জনসম্মুখে। আর তাতেই রীতিমতো সাড়া পড়ে গেছে নেট নাগরিকদের মধ্যে।
জানা গেছে, কায়রোর ওই স্পা সেন্টারে নাকি স্নেক মাসাজই একমাত্র আকর্ষণ নয়। আরো একাধিক ধরণের মাসাজের সুবিধা পাওয়া যায় সেখানে। তবে সাপেদের এই মাসাজই যে সবচেয়ে জনপ্রিয় তা বলাই বাহুল্য।
স্নেক মাসাজের যে ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়েছে, তাতে দেখা গেছে এক ভদ্রলোকের গায়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে ২৮ রকমের সাপ। অজগর প্রভৃতি সাপও সেখানে ব্রাত্য নয়। প্রথমে একটি তেল কোমরে মালিশ করা হয়। আর তারপরেই শুরু হয় সাপেদের কারসাজি। প্রায় আধঘন্টা ধরে নাকি চলে এই মাসাজ।
স্নেক মাসাজ কিন্তু শরীরের পক্ষে দারুণ উপযোগী, অন্তত তেমনটাই মত বিশেষজ্ঞদের। এর ফলে মাংসপেশী আর গাঁটের ব্যথা এক্কেবারে কমে যায় বলে দাবি করা হয়েছে। সঙ্গে ভাল হয় রক্ত প্রবাহ।
কী ভাবছেন? ঘরের কাছে এমন একটা সুযোগ থাকলে একবার চেষ্টা করে দেখলে মন্দ হত না, তাই তো? তবে কোনোদিন সুযোগ পেলেই স্নেক মাসাজের দরজায় হাজির হওয়ার আগে একটা কথা কিন্তু মাথায় রাখবেন। দুর্বল হৃদয়ের মানুষ হলে এই স্নেক মাসাজের ফল হতে পারে হিতে বিপরীত। সুখে থাকতে ভূতের কিল খাওয়ার কী দরকার!