নিজস্ব সংবাদদাতা: একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে একের পর এক ইতিহাসের সাক্ষী থাকছে বঙ্গ রাজনীতি।একই মঞ্চে বাম-কংগ্রেস আর আইএসএফের যে ছবি এদিন ব্রিগেডে দেখা গেল, তা নিঃসন্দেহে অভূতপূর্ব। তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আগেই একজোট হয়েছে বাম-কংগ্রেস। আব্বাস সিদ্দিকীর ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্টের সঙ্গেও চলছে তাঁদের বোঝাপড়ার কথোপকথন। কিন্তু এই ত্রিফলা জোটের ভবিষ্যৎ যে খুব একটা উজ্জ্বল নয়, এদিন ব্রিগেডের মঞ্চ থেকে আরো একবার পরিষ্কার হয়ে গেল সেই ছবিই।

এদিন বামেদের ব্রিগেড মঞ্চে প্রকাশ্যেই দ্বন্দ্বে জড়ালেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী এবং পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকী। ভোটের আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। তার আগে এই দ্বন্দ্বের ছবি যে জোট সম্পর্কে মানুষের কাছে আশার বার্তা দেবে না তা বলাই বাহুল্য। এমনকি কংগ্রেস আইএসএফের এই দ্বন্দ্বে আখেরে লাভ হবে বিজেপির,এদিন তেমনটাই দাবি করেছেন তৃণমূল নেতা সুব্রত মুখোপাধ্যায়।

ঠিক কী হয়েছিল এদিন ব্রিগেডে? বস্তুত, পালা অনুযায়ী মঞ্চে দাঁড়িয়ে বক্তৃতা রাখছিলেন কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী। কিন্তু তাঁর ভাষণের মাঝেই ব্রিগেড মঞ্চে ওঠেন আব্বাস সিদ্দিকী। তিনি মঞ্চে ওঠার পর বাম নেতৃত্ব তাঁকে স্বাগত জানাতে গেলে জোট আবহের তাল কাটে। অধীর চৌধুরী অসন্তুষ্ট হয়ে ভাষণ না দিয়েই মঞ্চ ছেড়ে নেমে যেতে চান, প্রকাশ্যে আসে দুই শিবিরের চাপানউতোর। পরে অবশ্য বিমান বসু ও অন্যান্য বাম নেতারা অধীর চৌধুরীকে বুঝিয়ে স্বস্থানে ফেরত পাঠান।

কংগ্রেস আইএসএফ দ্বন্দ্ব অবশ্য শেষ হয়না এখানেই। এরপর আব্বাস সিদ্দিকী বক্তব্য রাখতে উঠলেও আরও এক চোট দ্বন্দ্বের আভাস পাওয়া যায়। মঞ্চে উঠে শুরুতেই বাম নেতৃত্বের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হন সিদ্দিকী। কিন্তু কংগ্রেসের নামই করেন না তিনি। বামেরা ৩০টি আসন আইএসএফকে ছেড়ে দিয়েছে জোটের স্বার্থে।তার জন্য বিমান বসুকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান আব্বাস। কিন্তু নাম না করে কংগ্রেসের প্রতি তাঁর বার্তা, “সমঝোতা করতে চাইলে, বন্ধুত্বের রাস্তা খোলা আছে। আগামী দিনে তাঁদের হয়েও গলা ফাটাবে এই আব্বাস।” কংগ্রেস আইএসএফ এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্বের মাঝে কোথায় দাঁড়িয়ে বামেদের জোট ভবিষ্যৎ? উঠছে প্রশ্ন।