নিজস্ব সংবাদদাতা- মানভঞ্জনের পালা চলছে তৃণমূলে! শতাব্দী রায়ের পর এবার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, ভারতীয় ফুটবল দলের প্রাক্তন খেলোয়াড়ের ক্ষোভ প্রশমনে আজ তাকে ক্যামাক স্ট্রিটের অফিসে ডেকে পাঠিয়েছিলেন অভিষেক। তার সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে হাওড়ার সাংসদ প্রসূন বন্দোপাধ্যায়ের দাবি তিনি তৃণমূলে ছিলেন, তৃণমূলে আছেন এবং তৃণমূলেই থাকবেন!

শতাব্দী রায় যেদিন বেসুরো হন তার ঠিক পরের দিন সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে প্রসূন জানান দলে কেউ তার কথা শোনে না। তাকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ডাকা হয় না, এই নিয়ে গভীর দুঃখ আছে। তখনই গুঞ্জন শুরু হয়েছিল তাহলে কি বিজেপির দিকে পা বাড়াতে শুরু করেছেন এই খেলোয়াড় তথা রাজনীতিবিদ? এই জল্পনা আরও জল বাতাস পায় রাজ্য বিজেপির যুব মোর্চার সভাপতি তথা সাংসদ সৌমিত্র রায়-এর বক্তব্যের পর। তিনি সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “প্রসূন মুখোপাধ্যায় আমাদের তালিকায় আছেন। রাজ্যে ভোট ঘোষণা হলেই তিনি ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগদান করবেন।”

যদিও তারপর হুগলি নদী দিয়ে বেশ কিছুটা জল বয়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই শতাব্দী রায়ের ক্ষোভ প্রশমন করতে সক্ষম হয়েছে তৃণমূল। তাকে দলের অন্যতম সহ-সভাপতি পর্যন্ত করা হয়েছে। এদিকে রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ দলীয় আলোচনায় সৌমিত্র খাঁ-কে ধমক দিয়ে জানিয়ে দেন দলের অনুমতি ছাড়া এই ধরনের কথা বলা যাবে না। এমনকি সংবাদমাধ্যমের কাছে আলাদা করে বক্তব্য রাখার ওপর ‘সেন্সরশিপ’ পর্যন্ত জারি করা হয়। বিজেপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে কেবলমাত্র দলের মুখপাত্ররা সংবাদমাধ্যমের কাছে কোনো বিষয় সম্বন্ধে প্রতিক্রিয়া দিতে পারবেন।

আজ সন্ধ্যাবেলায় প্রসূন মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে বেশ খানিকক্ষণ বৈঠক করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠক থেকে বেরোনোর পর হাওড়ার সাংসদকে দৃশ্যত হাসিখুশি দেখাচ্ছিল। তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, “অভিষেক তরুণ প্রজন্মের ভালো ছেলে। আমার সঙ্গে কি ভালো ব্যবহার করল! বলল দাদা তোমরাইতো দলের নেতা। যখন যা সমস্যা হবে আমাকে বলবে, সব ঠিক হয়ে যাবে। আমার কথা মন দিয়ে শুনেছে। কোনো সমস্যা নেই, আমি তৃণমূলে ছিলাম-আছি-থাকব।”

বিক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বার্তা দিয়ে প্রসূন বলেন, “এখন দল ছাড়ার সময় নয়, এক হয়ে লড়াইয়ের সময়। বিজেপি বাংলা দখল করার জন্য ময়দানে নেমেছে। এই মুহূর্তে নিজেদের ক্ষোভ বিক্ষোভ ভুলে এক হয়ে লড়তে হবে আমাদের। ভোট মিটে যাওয়ার পর দিদি সমস্ত সমস্যার সমাধান করে দেবেন।”