নিজস্ব সংবাদদাতা- করোনা মহামারী যে কেবলমাত্র লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন ছিনিয়ে নিয়েছে তাই নয়, তা দীর্ঘদিনের অনেক ঐতিহ্যের ওপর‌ও আঘাত হেনেছে। এই মারণ রোগের প্রাদুর্ভাবে যে তীব্র অর্থনৈতিক সংকট পৃথিবী জুড়ে শুরু হয়েছে তার ধাক্কায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ইংল্যান্ডের ৪৫০ বছরের পুরানো ঐতিহ্যশালী পাব ল্যাম্ব অ্যান্ড ফ্ল্যাগ।

১৫৬৬ সালে ল্যাম্ব অ্যান্ড ফ্ল্যাগ নামে এই ঐতিহ্যশালী পাবটি পথ চলা শুরু করে। এরপর বারবার স্থান পরিবর্তন করার পর ১৬১৩ সালে অক্সফোর্ডের প্রাণ কেন্দ্রে অবস্থিত সেন্ট গিলিতে উঠে আসে ল্যাম্ব অ্যান্ড ফ্ল্যাগ। পরবর্তী সময়ে ঐতিহ্যবাহী কলেজ সেন্ট জনসের হাতে এই পাবটির মালিকানা হস্তান্তরিত হয়। প্রসঙ্গত অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত যে ৪৫ টি কলেজ আছে তার অন্যতম কলেজ সেন্ট জনস।

সেন্ট জনস কলেজের ডেপুটি বার্সার স্টিভ এলসটন একটি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন আর্থিক দুরাবস্থার কারণে আগামী ৩১ জানুয়ারি থেকে ল্যাম্ব অ্যান্ড ফ্ল্যাগ বন্ধ হয়ে যাবে। ওই বিবৃতিতে তিনি বলেন, “করোনা মহামারীর ফলে অন্যান্য হসপিটালিটি ক্ষেত্র যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তেমনি ল্যাম্ব অ্যান্ড ফ্ল্যাগ‌ও এই মহামারীর ধাক্কায় আর্থিকভাবে সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। শেষ ১২ মাসে এই পাবটি আর্থিকভাবে লাভজনক হওয়া তো দূরের কথা, এর যাবতীয় আর্থিক শৃঙ্খলাই সম্পূর্ণভাবে ভেঙে গিয়েছে।”

দীর্ঘ চার শতকের‌ও বেশী প্রাচীন এই পাবটিতে টিভি সহ আধুনিক যুগের বিনোদনের কোনো কিছুই নেই। কিন্তু ঐতিহ্যের টানে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত কলেজগুলির ছাত্রছাত্রীরা ছাড়াও স্থানীয় মানুষজন কেবলমাত্র বসে গল্প করার নেশায় এখানে ছুটে আসতো। কিন্তু ২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে দফায় দফায় ব্রিটেনে লকডাউন শুরু হওয়ায় সে দেশের বাকি রেস্তোরাঁ ও পাবগুলির মতোই ল্যাম্ব অ্যান্ড ফ্ল্যাগ‌ও বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে যায়।

১৯৯৭ সাল থেকে ল্যাম্ব অ্যান্ড ফ্ল্যাগের লাভের টাকায় সেন্ট জনস কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদের স্নাতক স্তরের ছাত্র-ছাত্রীদের স্কলারশিপ দিত। তবে কলেজ কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে জানানো হয়েছে পাব বন্ধ হলেও ছাত্র-ছাত্রীদের স্কলারশিপের ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব পড়বে না।