ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিয়ে শুধুমাত্র আমেরিকা নয় গোটা বিশ্বের রাজনীতি এই মুহূর্তে উত্তাল। সাধারণত তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর এবং ক্ষমতা হস্তান্তরের সময় যে ধরনের পরিস্থিতি দেখা যায় বর্তমান সময়ে সেরকম অবস্থার মধ্যে দিয়েই যাচ্ছে আমেরিকা! সে দেশের বিদায়ী রাষ্ট্রপতি ট্রাম্পের ক্ষমতা চলে যাবে এই বিষয়টিই যেন মেনে নিতে পারছেন না তার ভক্তরা। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গিয়ে দাঁড়িয়েছে আমেরিকার আইন সভার সদস্যরা ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়ার মাত্র আট-দশ দিন আগেও ট্রাম্পকে ইমপিচ করার বিষয়ে চিন্তা ভাবনা করতে বাধ্য হচ্ছেন। এমনকি রাষ্ট্রসঙ্ঘের পক্ষ থেকেও নাম না করে পরিস্থিতি শান্ত রাখার এবং সমর্থকদের নিয়ন্ত্রণ করার আবেদন জানানো হয়েছে ট্রাম্পকে।

ট্রাম্প সর্মথকরা গত সপ্তাহে যখন আমেরিকার সংসদ ভবন ক্যাপিটলে হামলা করেন তখন একটি বিষয় প্রকাশ্যে আসে, ‘কিউঅ্যানন’ তত্ব। ২০১৬ সালের মার্কিন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রচার পর্ব থেকেই এই তত্ব সামনে নিয়ে আসা হয় ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রচার দলের পক্ষ থেকে। খুব দ্রুত একদল সমর্থক এই তত্বকে বিশ্বাস করে নিয়ে চারিদিকে প্রচার করতে শুরু করেন।

ভিত্তিহীন এবং বিদ্বেষমূলক কিউঅ্যানন তত্বে দাবি করা হয় সে দেশের একাধিক শীর্ষস্তরের ডেমোক্র্যাট রাজনীতিবিদ এবং বেশকিছু উচ্চপদস্থ সরকারি আমলা ও সাংবাদিক শিশু নির্যাতনের ঘটনার সঙ্গে ওতোপ্রোতভাবে যুক্ত! এই ব্যক্তিরা নাকি নিয়মিতভাবে শিশুদের যৌন পীড়নের পাশাপাশি তাদের বিভিন্ন জায়গায় পাচার করে থাকে। এই তত্ব ছড়িয়ে দিয়ে ট্রাম্পের প্রচার দলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় ডোনাল্ড ট্রাম্প একা এই শিশুকামী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন!

কিউঅ্যানন,
এক কিউঅ্যানন সমর্থক

২০১৬ এর রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ট্রাম্প ডেমোক্র্যাট দলের প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনকে নির্বাচনে পরাজিত করে আমেরিকার রাষ্ট্রপতি হন। এর পর থেকেই তার সমর্থকরা আরও বেশি করে কিউঅ্যানন তত্ব প্রচার করতে শুরু করেন। তাদের মতে ট্রাম্প অল্প সংখ্যক বিশ্বস্ত গোয়েন্দাদের নিয়ে শিশুদের ওপর যৌন অত্যাচার চালানো ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছেন। খুব দ্রুত ডেমোক্র্যাট পার্টির শীর্ষ নেতাদের গ্রেফতার করে শাস্তি দেওয়া হবে। এমনকি প্রাক্তন মার্কিন ফার্স্ট লেডি এবং ২০১৬ রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী হিলারি ক্লিনটন এই বিষয়ে জড়িত বলে দাবি জানানো হয় ট্রাম্প ভক্তদের পক্ষ থেকে!

যদিও সাম্প্রতিক সময়ের অশান্তির পর ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউবের মতো প্ল্যাটফর্মগুলির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে তারা কিউঅ্যানন তত্বের সমর্থকদের একাউন্ট ও ভিডিওগুলি নিজেদের প্লাটফর্ম থেকে সরিয়ে দেবেন। এই ধরনের ভিত্তিহীন এবং মনগড়া তত্ব সমাজে হিংসা ও বিদ্বেষ ছড়িয়ে দেয়, তাই এই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।