নিজস্ব সংবাদদাতা- টলিউড অভিনেত্রী সায়নী ঘোষ একসময় প্রতিবাদ করে বলেছিলেন, “চলচ্চিত্র উৎসবের সর্বত্র একজনের ছবি থাকবে কেন? এটা অত্যন্ত দৃষ্টিকটু বিষয়। আমি এই ঘটনার প্রতিবাদ জানাচ্ছি।” পরিষ্কার বোঝা গিয়েছিল তিনি চলচ্চিত্র উৎসবের সর্বত্র মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি থাকার বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন। সেই সময় খুব অল্পসংখ্যক সহকর্মী তার পাশে দাঁড়ালেও বামপন্থীরা সামাজিক মাধ্যমে সায়নী ঘোষের এই মন্তব্যকে সমর্থন জানান। কিন্তু সেই তিনি যখন বন্ধ ডানলপ কারখানার ময়দানে আয়োজিত তৃণমূল নেত্রীর সভায় উপস্থিত হয়ে জোড়া ফুল পতাকা হাতে তুলে নেন, তখন যে অল্প সংখ্যক সহকর্মীরা তার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তাদের কারোর কারোর কাছ থেকে তাকে শুনতে হয়েছে, “তুইও বিক্রি হয়ে গেলি সায়নী”?

তিনি সত্যিই বিক্রি হয়েছেন কি বিক্রি হননি, কিংবা যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একসময় বিরোধিতা করেছিলেন তার দলেই কোন হিসেবে যোগদান করলেন তা নিয়ে আজ সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খোলেন। সেখানে সায়নী ঘোষ স্বীকার করে নেন মুখ্যমন্ত্রীর ছবি লাগানো নিয়ে মন্তব্য করে তিনি তখন ভুল করেছিলেন। আজ তিনি বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি ঢের ভালো। অন্তত অন্য রাজ্যের নেতা-মন্ত্রীদের ছবি দেখতে হচ্ছে না। নিজের ঘরের মানুষের ছবি দেখতে পেলে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু বাইরের রাজ্যের মানুষের ছবিতে চারিপাশ ভর্তি হয়ে গেলে আমার এই বাংলাটাকেই আমি চিনতে পারিনা।”

তৃণমূলে যোগ দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে এই টলিউড অভিনেত্রী বক্তব্য বর্তমান পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে তার মনে হয়েছে সংগঠিতভাবে থাকলে তবেই কোনো কাজ করা যাবে। তাই তিনি রাজনীতিতে যোগদান করার সিদ্ধান্ত নেন। এর পাশাপাশি সিপিএম সমর্থকদের প্রতি তার কোনো ক্ষোভ না থাকলেও তিনি বলেন, “বামপন্থীরা এখনও পর্যন্ত আসল শত্রু চিহ্নিত করতে পারেনি। বিজেপির মোকাবিলা করতে গিয়ে সিপিএম,তৃণমূল, কংগ্রেস এই তিনজন একসঙ্গে জোট বাঁধলে আমি সবচেয়ে খুশি হব। সিপিএম ভাবছে যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাদের ক্ষমতা থেকে সরিয়েছিল, ওরা তাকেই ক্ষমতা থেকে সরাবে। কিন্তু পরিস্থিতি যখন ভয়ানক হয়ে ওঠে তখন ক্ষতিকারক শত্রুর বিরুদ্ধে কে শক্তিশালী সেইটা চিহ্নিত করা সবার আগে জরুরী। তার পাশে গিয়ে দাঁড়াতে হয়।”

এর পাশাপাশি সায়নী ঘোষ দৃঢ়তার সঙ্গে জানিয়েছেন তার বিশ্বাস আগামী বিধানসভা নির্বাচনের পর তৃণমূল‌ই এই রাজ্যের ক্ষমতায় থাকবে। তিনি বলেন, “মানুষ এখন একটু ভয় পেয়ে আছে। কিন্তু ভোট দেওয়ার সময় সমস্ত অপপ্রচারের জবাব দিয়ে দেবে তারা।”