নিজস্ব প্রতিবেদন :আগামীকাল ১৩ই জানুয়ারী কলেজ খোলার দাবিতে পথে নামছে প্রেসিডেন্সির পড়ুয়ারা।দীর্ঘ দশমাস ধরে বন্ধ রয়েছে ক্যাম্পাস কেন্দ্রিক পঠন পাঠন। এই অবস্থায় জরুরী কাজের জন্যও ক্যাম্পাসে ছাত্রছাত্রীদের প্রবেশাধিকার নেই।লাইব্রেরি বন্ধ, ল্যাবরেটরি বন্ধ।স্কলারশিপ সংক্রান্ত প্রশ্নেও প্রতিদিন বিবিধ সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে আবেদনকারীরা।ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে সমস্ত কর্মক্ষেত্র। খুলে দেওয়া হয়েছে সিনেমাহলও।তবে কেন খুলছে না ক্যাম্পাস? এই প্রশ্নেই ভারতের ছাত্র ফেডারেশন প্রেসিডেন্সি ইউনিটের ডাকে অবস্থানের পথে নামছে ছাত্রছাত্রীরা।
বেশ কিছুদিন আগেই সময়োপযোগী একাধিক দাবী নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনের কাছে ডেপুটেশন জমা দেয় তারা, প্রসঙ্গত উল্লেখ্য এর আগে বহুবার ছাত্রদের স্বার্থ জড়িত একাধিক বিষয়ে ইমেলের মাধ্যমে অভিযোগ জানায় নির্বাচিত ছাত্র সংসদ। কতৃপক্ষের তরফে দীর্ঘদিনের টালবাহানার ফলে ছাত্রছাত্রীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করে ডেপুটেশনের হার্ড কপি তারা ডিন অফ স্টুডেন্টসের কাছে পেশ করতে চায়।কিন্তু প্রথমেই ক্যাম্পাসে ঢুকতে তারা বাধাপ্রাপ্ত হয় নিরাপত্তা রক্ষীদের দ্বারা এবং ডেপুটেশন নিতে অস্বীকার করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অফ স্টুডেন্টস। পরবর্তীতে ছাত্র বিক্ষোভের ফলে সেই ডেপুটেশন ডিনের তরফে জমা নেওয়া হয়।
ডেপুটেশনে যে দাবী গুলি তারা পেশ করে সেগুলি হলঃ
ক। ছাত্র ছাত্রীদের সুবিধার্থে ক্রমশ ল্যাব লাইব্রেরী এবং অফিস খুলতে হবে।

WhatsApp Image 2021 01 12 at 8.41.32 PM

খ।ক্যাম্পাস এ অফলাইন ক্লাস করানোর প্রস্তুতি অবিলম্বে শুরু করতে হবে।

গ।প্রাথমিকভাবে গবেষক সহ সমস্ত ফাইনাল বর্ষের ছাত্র ছাত্রীদের দাবিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

ঘ।স্কলারশিপ এর কাজ এবং পাস করা ছাত্র ছাত্রীদের মার্কশিট এর হার্ড কপি মাইগ্রেশন সার্টিফিকেট সহ প্রয়োজনীয় সব অন্যান্য জরুরি কাজের জন্য ক্যাম্পাস খুলতে হবে।

কর্তৃপক্ষের তরফে কলেজ খোলা নিয়ে এখনো পাওয়া যায়নি কোনো সদুত্তর এমত অবস্থায় আগামীকাল প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের গেটে একাধিক দাবীতে অবস্থান বিক্ষোভ করতে চলেছে পড়ুয়ারা। ভারতের ছাত্র ফেডারেশন প্রেসিডেন্সি ইউনিটের অন্যতম সদস্য ও প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ছাত্র অরণ্য চৌধুরী এই বিষয়ে বলেছেন “প্রায় আড়াই মাস হতে চললো ট্রেন চালু হয়ে গিয়েছে; সিনেমা হল, শপিং মল, সমস্ত কিছুই খুলে গেছে; রাজনৈতিক দলগুলোর মিছিল, মিটিং ইত্যাদি সব কিছুই হচ্ছে…শুধু ক্যাম্পাসগুলো বন্ধ রয়েছে। আমাদের ন্যূনতম দাবি যে ছাত্রদের সুবিধার্থে অবিলম্বে ল্যাব এবং লাইব্রেরি খোলার দাবি, এবং phase by phase ক্যাম্পাসে অফলাইন পঠন-পাঠন শুরুর দাবিরও কোন সদুত্তর মেলেনি। গত এক মাস যাবত এসএফআই-এর তরফ থেকে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের সামনে আমরা বারবার বিক্ষোভ দেখাই। গত ১৮ই ডিসেম্বর ক্যাম্পাসের ভিতরে ঢুকে পর্যন্ত আমরা বিক্ষোভ দেখিয়েছি, ডিন অফ স্টুডেন্টসের কাছে দাবীর ডেপুটেশন জমা দিয়েছি। কিন্তু কর্তৃপক্ষ-এর তরফ থেকে কোন উত্তর পাওয়া যায়নি।
আসলে গোটা ব্যাপারটাই একটা বড় চক্রান্তের অংশ বলে আমরা মনে করছি। কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার প্যান্ডেমিক পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থা:যা কিনা আদর্শ ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক বিরোধী, তা চাপিয়ে দিতে চায়। শিক্ষার বাজারিকরণ এবং বেসরকারিকরণ-এর ব্লু প্রিন্ট ছাড়া এটা আর কিছুই নয়।
তবে এসএফআই রাজ্যের সমস্ত কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট খোলার দাবি জানিয়েছে এবং এই স্বার্থে রাজ্যজুড়ে আন্দোলন করছে। প্রেসিডেন্সিতেও তাই হচ্ছে, এবং ক্যাম্পাসে ছাত্রদের ঢুকতে না দেওয়া পর্যন্ত, ল্যাব লাইব্রেরি না খোলা পর্যন্ত ছাত্র বিক্ষোভ চলবে। SFI পরিচালিত প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ ইতিমধ্যে এই দাবিতে সংহতি জানিয়েছে। সমস্ত CRকে দিয়ে গণ-ডেপুটেশন কর্মসূচি গতকাল গ্রহণ করা হয়েছে।”