#হাথরস হরর শক ইণ্ডিয়া…. দুদিনের সোশাল মিডিয়া ট্রেন্ডের শীর্ষে এই বেনামী গ্রামের ঘটে যাওয়া ভয়ার্ততা। হাথরস গণধর্ষণ, নির্যাতিতার মৃত্যু মনে করিয়ে দিচ্ছে ২০১২ সালের এমনই এক ভয়ার্ত রাতের ইতিহাসতফাত টা শুধু স্থান-কাল-পাত্রের। হাথরসের ক্ষেত থেকে দিল্লির রাজপথযেন কোনো এক অদৃশ্য সুতোয় বেঁধে দিয়েছে নিয়তি, যেই সুতোর বুনোট কোনো এক নির্যাতিতার রেহাই পাওয়ার জন্য ব্যর্থ আর্তনাদে তৈরী।
নেটিজেনের স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদ স্বরে মুখর প্রত্যেকটা টাইমলাইন। হাথরস নিয়ে আঁকা, লেখা,গান জানান দিচ্ছে, প্রমাণ দিচ্ছে যে সমাজ বারবার আলোড়িত করে শিল্পকে।এ যুগের হ্যাশট্যাগ তীক্ষ্ণ হাতিয়ারের সমান জানি, কিন্তু বাস্তব বলছে অন্য কথা। এসব কিছুর পরেও আমাদের তাৎক্ষণিক আবেগের আড়ালে সুপ্ত যুক্তিবোধ জানে যে এই প্রতিবাদ মিছিলের মাঝেই এই দেশের কোনো এক ফালি জমি তৈরী হচ্ছে আরো একবার হাথরসের পুনরাবৃত্তির অপেক্ষায়।
ধর্ষণচক্র,ছোটোবেলায় ভূগোল বইয়ের জলচক্রের ধারণার সাথে মিল খায়এমনই এক ধারণা হয়তো এটি। চক্রাকারে ঘুর্নায়মান ধারা,যার কোনো শেষ নেই।শুধু স্থান-কাল-পাত্র-নামের ভেদ। সামাজিক মাধ্যমের স্বাভাবিক নিয়মেই এই সমবেত সোশাল মিডিয়া ট্রেণ্ড ফুরিয়ে আসবে সপ্তাহ বা মাস পেরোলেই আর আমরা আবার ফিরে যাবো সেই সব ‘ইউটিউবার’ বা ‘Social Media Influencer'(?) দের ভিডিও শেয়ারে যাদের কনটেন্টের বেশীরভাগটাই ধর্ষণের ইঙ্গিতবাহী মনোরঞ্জক গালিতে সাজানো। কিংবা আমাদের টাইমলাইন ভরে উঠবে সেইসব মিম শেয়ারে যেখানে মিমের মূল বিষয়বস্তু সেই মেয়েটাকিছুদিন আগেই যার নিজের প্রিয় মানুষটার সাথে কাটানো একান্ত মুহুর্ত তার অজান্তেই ভাইরাল হয়ে গেছে কোনো অনিবার্য কারণে। কমেন্ট বক্সের ‘লিংক চাই’ আবদার, পোস্ট দাতা মেনেও নেবে হাসিমুখে।
বলতে দ্বিধা নেই, সমাজের বুকে যে ধর্ষণ নামক বিষ ফসলটির আবাদ হচ্ছে, জ্ঞানে-অজ্ঞানে আমরাই তাতে সার মিশিয়ে এসেছি বারবার। ধর্ষণ কোনো ঘটনা বিশেষ নয় কেবল_ ‘ধর্ষণ’ একটা মারাত্মক মানসিক প্রবণতা। এই অতিমারির চেয়েও দুরন্ত বেগে বিস্তার প্রাপ্ত প্রবণতাকে কোনো ট্রেন্ডের ঝড় থামাতে পারেনি,পারবেও না। পাল্টাবে শুধু হ্যাশটাগের নাম,পাল্টাবে পুলিশি ফাইলের নির্যাতিতার নাম_পরিবর্তন বলতে যেটুকু আশা করা যায়।
-তৃষা ব্যানার্জী
Good work trisha