বর্তমান পরিস্থিতি ঘিরে  চলছে করোনা দমন যুদ্ধ।  অপরদিকে ভারতের সাথে চিনের সম্পর্ক যুদ্ধং দেহি তাই মানুষ এই যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে বিনোদনকে বেঁছে নেয়। আর প্রতিটি ঘরের মা বউএর কাছে বিনোদনের সংজ্ঞা হল  বাংলা সিরিয়াল। আগেও যা ছিল আজও তাই আছে ঐ গন্ডী থেকে তারা বেরতে পারেনি আর বোধ করি ভবিষ্যতেও পারবে না। রিমোটের বোতাম টিপে  বাংলা চ্যানেল থেকে যদি ভুলবশত হিন্দী কিংবা ইংরাজী চ্যানেলে পরিনত হয় তালেই প্রলয় নেমে আসে। তখন গৃহযুদ্ধ থেকে কেউই নিস্তার পায়না। এটা প্রতি বাড়ির ‘ঘর ঘর কি কাহানী’। কিন্তু খোস মেজাজে যে বাংলা চ্যানেল দেখবে তারই বা উপায় কথায়  ওখানেও যে নিস্তার নেই  যুদ্ধের দামাদা যে ওখানেও বেজেছে।  না  এ যুদ্ধ ভাইরাস বা গুলি গালার যুদ্ধ নয়। এ হল টি আর পি যুদ্ধ। কোন চ্যানেল তার টি আর পি কত উঁচুতে নিয়ে যেতে পারে তাই নিয়ে চলে রেষারেষি।

টি আর পি অর্থাৎ টেলিভিশন রেটিং পয়েন্ট যার দ্বারা কোন চ্যনেলের জনপ্রিয়তা ঠিক কতটা তা মাপা হয়।

যদি  একটি বাংলা চ্যানেল কোন রিয়ালিটি শো উপস্থাপন করছে তাহলে আর রক্ষ্য নেই। প্রতিদ্বন্দ্বী চ্যানেল কোমর বেঁধে মাঠে নেমে পড়ে । সেই একই জিনিষ একটু অন্যভাবে উপস্থাপন করে, যদি কেউ সোজা ভাবে নাক ধরে তো অন্যজন ঘুরিয়ে নাক ধরবে।  যদি উদাহরণ দেওয়া হয় তাহলে অনেকটা এমন দাঁড়াবে  পায়েসের স্বাদ ও সৌন্দয্যের জন্য কেউ  রান্না করার সময়  কাজু কিশমিশ দিল তো কেউ রান্না শেষে গার্নিশিংএর জন্য উপর দিয়ে ছড়িয়ে দিল। খেতে কিন্তু একই হয়, শুধু উপস্থাপনার মধ্যে উনিশ-বিশের তফাৎ । ব্যাপারটা ঠিক এই রকম। কিন্তু এখন বিষয়টা ১০০ ডিগ্রী ঘুরে গেছে, দুজনেই একই ভাবে পায়েস রান্না করছে শুধু পাত্র আলাদা। বর্তমানে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি এতটাই গুরুগম্ভীর যে একই সিরিয়াল একই ভাবনা ২টি নামকড়া বাংলা চ্যালেনই বার করেছে শুধু কলাকুশুলী আলাদা। তাঁদের লক্ষ্য একটাই টি আর পি যুদ্ধে কে জয়ী হবে। কিন্তু এটা তো বাস্তব যে যুদ্ধে নামলে  হার জিত থাকবেই। এক্ষেত্রেও সেটার ব্যাতিক্রম ঘটেনি।  একটি চ্যানেলের সিরিয়াল খুব প্রাধান্য পেয়ে এখন সমান গতিতে ধাবমান অপরদিকে বিপরীত পক্ষের দৌড় মাঝপথেই স্তগিত।  

 

শুধু বাংলা সিরিয়ালের চ্যানেল বললেও ভুল হবে, আমরা ভূ -ভারতে ঘটমান সকল তথ্য, আকাশ থেকে পাতাল, দেশ থেকে বিদেশের, রাজ্যে থেকে জেলার  হাড়ির সকল খবর যেখান থেকে পাই অর্থাৎ বাংলা সংবাদমাধ্যম। যাদের কর্তব্য নিরপেক্ষতা বজায় রেখে সংবাদ প্রেরন করা কিন্তু তাঁদের মধ্যেও এই টি আর পির ভাইরাস লেগে গেছে। তারাও রনক্ষেত্রে নেমে গেছে।  এই ভাইরাস আবার বাংলা চ্যনেলগুলির দিকে হাত বাড়িয়েছে।

এইভাবেই চলে আসছে টি আর পি যুদ্ধ। আগে যদিও বাঙ্গালে এতটা প্রভাব বিস্তার করেনি। কিন্তু যুগের সাথে চলতে গিয়ে তারাও নিজেদের মধ্যে মারামারি শুরু করেই দিল। আগে সকলের সামনে প্রকাশ করত না আর এখন যা করে খোলাখুলি তফাৎটা এখানেই ।  এখন দেখার বিশয় কতদিন চলে এই যুদ্ধ।