নিজস্ব সংবাদদাতা- পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের দিকে লক্ষ্য রেখে সিএএ চালু করার বিষয়ে তৎপর হয়ে উঠল বিজেপি। লোকসভা দাঁড়িয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই আজ জানান দ্রুত সিএএ বিধি প্রণয়ন করবে কেন্দ্র।

সিটিজেনশিপ আমেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট বা সিএএ এবং এনআরসি নিয়ে গতবছর উত্তাল হয়ে উঠেছিল সারা দেশ। দিল্লির শাহীনবাগে সিএএ-এনআরসি বিরোধী আন্দোলনকারীরা যেভাবে আন্দোলন চালিয়ে আসছিল তা একসময় কেন্দ্রীয় সরকারের গভীর দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু বিশ্বজোড়া করোনা সংক্রমণ এসে পড়ার ফলে খানিকটা বাধ্য হয়েই আন্দোলনকারীদের প্রতিবাদ স্থল ছেড়ে আসতে হয়।

এদিকে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা ভোটে মতুয়া সম্প্রদায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টরে পরিণত হয়েছে। মতুয়াদের দাবি কেবলমাত্র সিএএ বিল সংসদে পাস করিয়ে তা আইনে পরিণত করলেই হবে না, দ্রুত সিএএ কার্যকরী করতে হবে। মতুয়াদের মতে সিএএ কার্যকরী হলে তবেই তারা ভারতের চিরস্থায়ী নাগরিক হিসাবে স্বীকৃতি পাবে।

গত লোকসভা নির্বাচনের সময় মতুয়ারা ঢেলে ভোট দেয় বিজেপিকে। সেই সময় বিজেপির তরফ থেকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল সিএএ প্রণয়নের মাধ্যমে তারা মতুয়াদের নাগরিকত্বের বিষয়টি নিশ্চিত করবে। এদিকে করোনারি প্রভাবে গত এক বছরে পিছে বিধি তৈরি করে উঠতে পারেনি কেন্দ্র। ইতিমধ্যেই মতুয়া সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে যদি সিএএ দ্রুত কার্যকর করার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ না নেয়া হয় তবে বিধানসভা নির্বাচনে তারা বিজেপির বিরুদ্ধে ভোট দেবে।

রাজনৈতিক মহলের মতে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখেই মূলত সিএএ বিধি প্রণয়ন করার দিকে ঝুঁকেছে বিজেপি। ঘটনা হল পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ৩০ টি বিধানসভা কেন্দ্রের জয় পরাজয় নির্ধারণ করে মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষজন। এছাড়াও আরও ৩০ টি বিধানসভা কেন্দ্রে গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর মতুয়ারা। এই সমস্ত বিষয় মাথায় রেখেই সম্ভবত শেষ পর্যন্ত সিএএ কার্যকর হতে চলেছে।

তবে কেন্দ্রীয় সরকার সিএএ কার্যকর করার বিষয়ে সংসদে দাঁড়িয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করলেও পুরো ব্যাপারটা এতোটা সহজে হবে না। কারণ দেশের জনগণের একটা বড় অংশ সিএএ-এনআরসির বিরুদ্ধে। আবার অনেকে মনে করছেন কৃষক আন্দোলন ভেঙে দিতে এবং আন্দোলনরত কৃষকদের মধ্যে বিভাজন তৈরী লক্ষ্যেই সিএএবি নিয়ে হঠাৎ এই তোড়জোড় শুরু করা হয়েছে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে।