ফুটবলের দুনিয়ার বেতাজ বাদশা বলা হয় পেলেকে। তবে পেলে যদি রাজা হন, রাজপুত্র নিঃসন্দেহে ডিয়েগো মারাদোনা। আর্জেন্টিনার প্রবাদপ্রতিম এই খেলোয়াড় সদ্য শেষ নিঃশ্বাস ফেলেছেন, তাঁর ষাট বছর বয়সে। কিন্তু ভক্তদের মনে ফুটবল যতদিন রয়েছে, মারাদোনাও ততদিনই রয়ে যাবেন, তাতে দ্বিমত নেই কারোরই। এই কিংবদন্তী মানুষটির জীবনের ওঠাপড়া, নানান সমাপতন, বিভিন্ন জানা অজানা তথ্যের দিকে এই প্রতিবেদনে অল্প কিছুটা নজর দেওয়ার চেষ্টা করা যেতেই পারে।https://scroll.in/field/979480/watch-diego-maradonas-goal-of-the-century-against-england-in-1986-world-cup

মারাদোনা
pinterest
মারাদোনার নানান কথা
  • ১৯৭৬ এর অক্টোবরে, ১৫ বছর বয়সী মারাদোনা আর্জেন্টিনস জুনিয়রের হয়ে প্রফেশনালি শুরু করেন ফুটবল খেলা।
  • ১৯৮৬ সালের ফুটবল বিশ্বকাপে মারাদোনার খেলা আজ এত বছর পরেও ফুটবলপ্রেমীদের মুখে মুখে ফেরে। কোয়ার্টার ফাইনাল খেলায় ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তাঁর জীবনের সবচাইতে বিতর্কিত গোল যা তিনি নিজেই পরে স্বীকার করেছিলেন যে তিনি সেটি হাত দিয়ে করেছিলেন, তা তাঁর পারফরম্যান্সকে পৌঁছে দেয় তুঙ্গে।
  • দুনিয়ায় অনেকেই মেসিকে আজ ভগবানের চোখে দেখেন, কিন্তু মারাদোনা আজও ফুটবল জগতের অবিসংবাদিত ঈশ্বর। অথচ নিজের দেশের হয়ে সর্বোচ্চ গোলদাতাদের মধ্যে তিনি পঞ্চম স্থানে। তাঁর আগে আছেন মেসি, বাতিস্তুতার মতন খেলোয়াড়েরা।https://www.goal.com/en-in/news/maradona-greatness-no-sportsmanship-england-shilton-hand-of/sdx1qzvif8i81205fsrxa2k1u
মারাদোনা
daily mail
  • আর্জেন্টিনার হয়ে চারটি বিশ্বকাপ খেলেছেন মারাদোনা। বারবার এই বিশ্বকাপের মাঠে একই সঙ্গে পুরস্কৃত এবং তিরস্কৃত হয়েছেন এই খেলোয়াড়। তবু হারিয়ে যাননি কখনও। বাধা মানেননি। নিজেকে বেঁধে ফেলেননি একবারও।
  • ফুটবলের এই ঈশ্বর ফুটবলের জগত থেকে বিতাড়িতও হয়েছেন একাধিকবার। ১৯৯১ এ নাপলিতে ১৫ মাসের জন্য ফুটবল থেকে তাঁকে বহিষ্কার করা হয় মাদক নেবার জন্য। এমনকি ১৯৯৪এর বিশ্বকাপ চলাকালীন মাদক নেবার জন্য ১৭ বছরের জন্য আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে নির্বাসন দেওয়া হয় মারাদোনাকে।
youtube
বিতর্কিত মারাদোনা
  • নিজেই একবার এক ইন্টার্ভিউতে মারাদোনা জানান যে বারো বছর বয়সেই প্রথম নারীসঙ্গ করেন তিনি।
  • বহুনারীসঙ্গের জন্যে বরাবর খবরের শিরোনামে থেকেছেন ফুটবলের এই তারকা খেলোয়াড়। স্ত্রী ক্লদিয়ার সঙ্গে দীর্ঘ বিশ বছরের দাম্পত্য সম্পর্কেও ইতি পড়ে যায় এই জন্যই। বান্ধবীর সন্তানকে বহু টালবাহানার পর অনেকটা সময় পর পিতৃপরিচয় দেন মারাদোনা। সরকারি মতে তাঁর সন্তানের সংখ্যা ৫। তবে সমালোচক ও সাংবাদিকদের মতে তিনি এগারোটি সন্তানের পিতা।
  • সাংবাদিককে গুলি করার জন্য, কর ফাঁকি দেবার অপরাধে, এক ব্যক্তির পায়ের উপর দিয়ে গাড়ি চালানোর জন্য —এমন নানান ঘটনায় বারবার তাঁকে যেতে হয়েছে পুলিসের হেফাজতে।করেছেন নানান বিতর্কিত মন্তব্যও। মেসি, রোনাল্ডো প্রভৃতি প্রবাদপ্রতিম খেলোয়াড়ের ক্ষমতা নিয়ে বারবার প্রশ্ন তুলেছেন মারাদোনা।
  • বাঁ পায়ের জাদুতে গোটা ক্রীড়াবিশ্বকে মুগ্ধ করে রাখা এই খেলোয়াড় নিজের জীবনে বারবার নিয়েছেন নানান বিতর্কিত সিদ্ধান্ত। মাদক সেবন তার মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য। বারবার নানান রিহ্যাবে যেতে হয় তাঁকে এর জন্যই। একসময় নিজের দেশের দরজা পর্যন্ত বন্ধ হয়ে গিয়েছিল আর্জেন্টিনার এই সেলিব্রিটি ফুটবলারের। এই সময় তাঁকে বিশেষ সাহায্য করেছিলেন যিনি, তার নাম ফিদেল কাস্ত্রো। মারাদোনার কাছে ইনিই হয়ে উঠেছিলেন পিতার মতন।
  • মারাদোনার মতন বুকের পাটা বহু বাঘা বাঘা তারকারও যে থাকে না, একবাক্যে আজ তা স্বীকার করেন অনেকেই। কলম্বিয়ার কুখ্যাত ক্রিমিনাল পাবলো এসকোবারের সঙ্গে তিনি পার্টি করেছিলেন একেবারে জেলের ভেতরেই, হাজির ছিলেন নানান লাস্যময়ী রমণীও। ভাবতে পারা যায়!
tumblr pay7s4yWXa1rjev45o1 1280
football is my aesthetic

আদ্যন্ত প্যাশনেট এক ব্যতিক্রমী মানুষ ছিলেন ডিয়েগো মারাদোনা। একইসঙ্গে অনেক গুলো দিকে নিজেকে ছড়িয়ে দিতে চেয়েছিলেন তিনি। যার ফলে একসময় নানান সমস্যাও তৈরি করেছিলেন নিজের জন্যে নিজে নিজেই। কিন্তু নানান ওঠা পড়া, প্রতিকূলতা, নিন্দা, প্রশংসা এই সমস্ত কিছুর বাইরে একজন প্রতিভাবান কিংবদন্তী খেলোয়াড় ছিলেন এই মানুষটি। যাকে আপামর ক্রীড়াবিশ্ব মনে রাখবে সসম্মানে।

আরও পড়ুন-

https://banglakhabor.in/2020/11/01/%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%82%e0%a6%b2%e0%a6%be-%e0%a6%a5%e0%a7%87%e0%a6%95%e0%a7%87-%e0%a6%9c%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a7%80%e0%a7%9f-%e0%a6%95%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%bf%e0%a6%95%e0%a7%87%e0%a6%9f/”