নিজস্ব সংবাদদাতা- বিধানসভা নির্বাচনের মুখে কিছুটা হলেও স্বস্তি পেল তৃণমূল। প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের ওপর কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের সিঙ্গেল বেঞ্চ যে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল তা খারিজ করে দিল ডিভিশন বেঞ্চ। আপাতত শর্তসাপেক্ষে নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করার ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। যদিও আদালত জানিয়ে দিয়েছে নিয়োগ প্রক্রিয়ার চূড়ান্ত ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে সিঙ্গল বেঞ্চের রায়ের ওপর।

১৬,৫০০ শূন্য পদে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছিল। অনেক চাকুরিপ্রার্থী নিয়োগপত্র পেয়ে কর্মস্থলে যোগ পর্যন্ত দিয়ে দিয়েছিলেন বলে খবর। কিন্তু একদল চাকুরিপ্রার্থী নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে আদালতে মামলা করেন। কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের পক্ষ থেকে রাজ্য সরকারের কাছে বেশ কিছু বিষয়ের ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছিল। বিচারপতি রাজ্য সরকারকে প্রশ্ন করেছিলেন কেন মাঝরাতে মেধা তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল? কেন সম্পূর্ণ মেধা তালিকা প্রকাশ করা হল না? যদিও রাজ্য সরকারের উত্তরে সন্তুষ্ট হয়নি কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চ। তার ফলে গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে দিয়েছিল আদালত।

আজ কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সৌমেন সেন ও সৌগত রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ শর্তসাপেক্ষে প্রাথমিক শিক্ষকদের নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করার নির্দেশ দেন। আপাতত ১৫,২৮৪ পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করা যাবে। বাকি পদগুলি ফাঁকা রাখতে হবে মামলাকারীদের জন্য। তবে মেধাতালিকা সম্পূর্ণ প্রকাশ করতে হবে এবং জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের অফিস ও ডিআই অফিসে সম্পূর্ণ মেধাতালিকা টাঙিয়ে দিতে হবে। কোনো চাকরিপ্রার্থীর সংশয় থাকলে মেধাতালিকা মিলিয়ে নিতে পারবেন। তবে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হল ডিভিশন বেঞ্চ প্রাথমিক শিক্ষা সংসদকে নির্দেশ দিয়েছে চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগপত্রে যেন লেখা থাকে হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের রায়ের ওপর তাদের ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে। সেক্ষেত্রে সিঙ্গেল বেঞ্চ যদি শেষ পর্যন্ত নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে দেয় তবে এই চাকরিপ্রার্থীদের মাঝপথে কাজ চলে যাবে।

কলকাতা হাইকোর্টের এই রায়কে স্বাগত জানানো হয়েছে শাসকদল তৃণমূলের পক্ষ থেকে। কুনাল ঘোষ বলেছেন, “কলকাতা হাইকোর্টের রায় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। এর ফলে চাকরিপ্রার্থীরা সুবিচার পেলেন।”