নিজস্ব সংবাদদাতা- বারুইপুর এবং ঠাকুরপুকুরে জোড়া সভা করার মধ্য দিয়ে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনায় এক কঠিন চ্যালেঞ্জ নিল রাজ্য বিজেপি। এই জেলার মতো রাজ্যের অন্য আর কোনো জেলায় বিজেপির সাংগঠনিক পরিস্থিতি এতোটা দুর্বল নয়। সবচেয়ে আশ্চর্যের ব্যাপার ৩১ আসনের বিধানসভা কেন্দ্রের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা হল মুর্শিদাবাদের পর রাজ্যের একমাত্র জেলা যেখানে গত লোকসভা নির্বাচনে বিধানসভা ওয়াড়ি একটি কেন্দ্রেও এগিয়ে যেতে পারেনি বিজেপি।

আগামী বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যের ক্ষমতা দখল করতে হলে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনায় বিজেপিকে ভালো ফল করতেই হবে। সবচেয়ে বড় কথা মুর্শিদাবাদে তৃণমূলের আধিপত্য কিন্তু একচেটিয়া নয়। সেখানে বাম-কংগ্রেস জোট রাজ্যের শাসক দলকে কড়া টক্কর দিচ্ছে। অথচ গত লোকসভা নির্বাচনে বিধানসভা অনুযায়ী ফলাফল দেখলে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রে এগিয়ে ছিল তৃণমূল।

এই জেলা বরাবরই তৃণমূলের গড় হিসাবে পরিচিত। বামফ্রন্ট আমলেই কলকাতা লাগোয়া এই জেলায় ভালো ফলাফল করতে শুরু করে তৃণমূল। অবশ্য অনেকে মনে করেন তৃণমূলের সেই ভালো ফলাফলের অন্যতম মূল কান্ডারী ছিলেন শোভন চ্যাটার্জি। কলকাতার এই প্রাক্তন মহানাগরীক দীর্ঘদিন দক্ষিণ চব্বিশ পরগনায় তৃণমূলের জেলা সভাপতি ছিলেন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার আগে পর্যন্ত শোভন চ্যাটার্জি ছিলেন এখানকার শেষ কথা।

ঘটনাচক্রে সেই শোভন চ্যাটার্জি এখন বিজেপিতে। তাদের দাবি শোভন সক্রিয় হয়ে ওঠায় দক্ষিণবঙ্গের এই জেলার রাজনৈতিক ‘খেলা’ সম্পূর্ণ বদলে গিয়েছে। রাজনৈতিক মহলের মতে গেরুয়া শিবিরের এই দাবিকে পুরোপুরি নস্যাৎ করে দেওয়া যাবে না। কারণ এই জেলায় শোভন চ্যাটার্জীর প্রচুর অনুগামী আছে। তিনি যেখানেই প্রচারে যাচ্ছেন বেশ ভালো সাড়াও পাচ্ছেন।

এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলের ভোট ব্যাঙ্কে বিজেপি যে ভালোমতোই থাবা বসাবে তা অনেকটাই পরিষ্কার। তবে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রাজ্যের শাসকদলের মাথা ব্যাথা বাড়িয়েছে ফুরফুরা শরীফের পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকীর তৈরি ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট নামের নতুন রাজনৈতিক দলটি সংখ্যালঘু প্রধান এলাকায় যে পরিমাণ জনসমর্থন পাচ্ছে তাতে শেষ পর্যন্ত দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা থেকে তৃণমূল কংগ্রেস কটি আসন ধরে রাখতে পারবে সেটাই এখন দেখার।