মোটা হওয়া অপরাধ নয়! বিভেদের মধ্যে ঐক্য এটি আমাদের ধর্ম। আর সকল ধর্মকে নিয়েই একত্রিত হয়েছে আমাদের দেশ ও অভিনয় জগত।
ছোটবেলা থেকে নানান বিধিনিষেধ নিয়মকানুনের সঙ্গে আমাদের প্রায় সবাইকেই একটা কথা শেখানো হয় বিশেষ করে। আমরা যেন কখনও অতিরিক্ত মোটা বা রোগা না হয়ে পড়ি, সেটা নিয়ে বারবার অভিভাবকরা ব্যতিব্যস্ত হতেই থাকেন। তাছাড়া সত্যি কথা বলতে খুব রোগা টিংটিঙে হলে মানুষকে যতটা বিদ্রূপের শিকার হতে হয়, শরীরের ওজন বেশি হলে ব্যঙ্গের মুখে পড়তে হয় আরও অনেকটাই বেশি। একদম ছোট্ট বয়স থেকে ভারী গড়নের শিশুরা অব্দি বন্ধুবান্ধব, পাড়াপ্রতিবেশী, আত্মীয়স্বজন ইত্যাদি সবার কাছেই ঠাট্টার বিষয় হয়েই থাকে। বয়স বাড়লে চলতে থাকে ওজন নিয়ে নানান কথা। আর এই মোটাসোটা চেহারার মালিক যদি কোনও মহিলা হন, তবে তো রক্ষে নেই আর!
নানান অদ্ভুত বিশেষণে তার প্রাণ ওষ্ঠাগত করে ছাড়েন পরিচিতেরা। এর পিছনে একটা প্রধান কারণ অবশ্যই আমাদের সবার চেনা গ্ল্যামারের দুনিয়াটা। পছন্দের সেলিব্রিটিদের চেহারার প্রতি কমবেশি সবাইই আকৃষ্ট হয় । ফলে সমস্ত মানুষেরই এই কিছুদিন আগে অব্দিও এই ধারণা ছিল যে ঠিকঠাক চেহারা মানেই স্লিম, ছিপছিপে, মেদহীন, একটা কাঠামো। কিন্তু আজকের সেলিব্রিটিরা সেই স্টিরিওটাইপ ভাবনাচিন্তা একেবারে ভেঙে দিয়েছেন। বর্তমানে বলিউডের প্রথম সারির কিছু নায়িকার ভারী শারীরিক গড়ন তাঁদের আবেদন বৃদ্ধি করেছে কয়েক গুণ। একটু দেখে নিই তাঁদের কয়েকজনকে–
বিদ্যা বালান~ হিরোইন মানেই কোনমতে অল্প কিছু খেয়ে প্রায় জিরো ফিগার ধরে রাখতে হবে, এই ভাবনাচিন্তা বিদ্যা বালানের জন্যেই বদলাতে শুরু করে আমজনতার। প্রথাগত মেদহীন ছিপছিপে চেহারা না হলেও কার্ভি শরীরের এই নায়িকার আবেদন কারোর চাইতে কোনও অংশে কম নয় বরং ‘ডার্টি পিকচার’ ইত্যাদি সিনেমা দেখলে বোঝা যায় ভারি গড়নের নায়িকাও পর্দায় বাজিমাত করতে সক্ষম।
সোনাক্ষী সিনহা~ বর্ষীয়ান অভিনেতা এবং রাজনীতিবিদ শত্রুঘ্ন সিনহার মেয়ে সোনাক্ষী বলিউডে পা রাখার সময় থেকেই ব্যতিক্রমী চেহারার জন্য খবরের শিরোনামে থেকেছেন বারবার। তন্বী, এবং মেদহীন চেহারার বদলে তাঁর গড়নও অনেকটা মোটার দিকেই। কিন্তু তা সোনাক্ষীর আবেদন কোনও অংশেই কমাতে পারেনি।
কাজল~ বলিউডি পরিবারের মেয়ে কাজল এই ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করছেন প্রায় ২৫বছর হতে চলল। প্রথম দিকে রোগা, ছিপছিপে গড়ন থাকলেও ক্রমশ তাঁর চেহারায় চলে আসে কার্ভি লুক। সৌন্দর্যের এই নতুন সংজ্ঞা বহন করেই কিন্তু একের পর এক হিট ছবি উপহার দিয়ে চলেছেন কাজল। ভাঁটা পড়েনি তার জনপ্রিয়তাতেও।
হুমা কুরেশি~ অন্য ধারার অভিনেত্রী হিসেবে খ্যাত এই হুমা কুরেশির সৌন্দর্য গড়পড়তা হিরোইনদের মতন একেবারেই নয়। তাঁর চেহারা যে বেশ ভারি এবং তিনি যে জিরো ফিগার চানও না তা স্পষ্ট বুঝতে পারেন দর্শক। অথচ এতদিনের স্টিরিওটাইপ বলিউডি সৌন্দর্যের ছক ভেঙে বেরিয়ে একের পর এক প্রজেক্টের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন এবং তাতে সফলও হচ্ছেন হুমা। বলাই বাহুল্য যে তাঁর চেহারার যে আদলে তিনি অভ্যস্ত, তার আবেদন সাংঘাতিক।
জারিন খান~ প্রথম ছবিতেই সালমান খানের হিরোইন হিসেবে সুযোগ পান জারিন। একসময় বলিউডে টিঁকে রইবার জন্য শরীরের সমস্ত বাড়তি মেদ ঝরিয়ে তন্বী হতে চাইলেও অচিরেই দর্শক এবং তিনি নিজেও বুঝতে পারেন তার ভারী চেহারার মিষ্টত্বই দর্শকের মন সহজে জয় করে নিয়েছে।
যে পাঁচজন নায়িকার কথা বলা হল, তাঁরা ছাড়াও রানী মুখার্জি, পরিণীতি চোপড়া, সানি লিওন, ভূমি পেডনেকর প্রমুখ অনেক অভিনেত্রীই রয়েছেন যাঁদের শরীরের গড়ন বেশ ভারী। কিন্তু ওজন বেশি হওয়া সত্ত্বেও জনপ্রিয়তার শীর্ষে উঠতে অসুবিধা এঁদের হয়নি তাঁর একমাত্র কারণ নিষ্ঠা এবং পরিশ্রম। অনেকেই হয়তো মনে করেন মোটাসোটা চেহারা ফলে খাওয়াদাওয়ায় কোনও বিধিনিষেধ হয়তো এঁদের নেই। এই ধারণা আগাগোড়াই ভুল, কারণ শরীরের কার্ভ ধরে রাখতে গেলেও সঠিক ডায়েট প্রয়োজন। ঠিকঠাক ডায়েট আর প্রয়োজনীয় শরীরচর্চা ছাড়াও এই বলিউডের নায়িকারা বুঝতে পেরেছেন ব্যতিক্রমী চেহারাই তাঁদের আরও মোহনীয় করে তোলে দর্শকের কাছে। ফলে কারোর কারোর তা মোটা বলে মনে হলেও ভারি গড়নেই এদের সঠিক মানিয়ে যায়, তা সবাই স্বীকার করেন একবাক্যেই। আপনারা কি বলেন?!
[…] এই রোগের তীব্রতা আঁচ না করে এই নেতা জনগণকে ভদকা খেয়ে সুস্থ থাকার পরামর্শ […]
[…] • পাওলি দাম- একই সঙ্গে জনপ্রিয় এবং বিতর্কিত এই অভিনেত্রীও কিন্তু পোশাক বেছে নেবার বেলায় ভীষণই খুঁতখুঁতে। সর্বোপরি কথা ইনি জানেন কোন চরিত্রে কেমন পোশাকে তাঁর আবেদন সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পাবে। ‘এলার চার অধ্যায়’এ যখন ইনি ব্রাহ্ম ধাঁচের শাড়ি প্লিত করে পরেছেন, দর্শক তা যেমন নিয়েছে সহজভাবে, বলিউডের ‘হেট স্টোরি’তে যখন পাওলি বেশ্যার এসকর্টের চরিত্রে স্বল্পবাস পরেছেন, মানিয়ে গিয়েছে তাও। […]