নিজস্ব সংবাদদাতা: সাম্প্রদায়িক মন্তব্য, বিতর্কিত কথাবার্তা, হাস্যকর দাবি- একজন বিজেপি নেতাকে সাধারণত এই কয়েকটি বিষয় দিয়েই চেনা যায়। ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব কিংবা বঙ্গ বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, এঁরা প্রত্যেকেই কখনও না কখনও অযৌক্তিক এবং হাস্যকর কথাবার্তা বলেছেন। আবার বিতর্কিত মন্তব্য করে বিতর্কেও জড়িয়েছেন। যেই কথাগুলো সোশ্যাল মিডিয়ায় সবসময়ই ভাইরাল। এবার তাঁদেরকেই টেক্কা দিতে শুরু করেছেন উত্তরাখণ্ডের নবনিযুক্ত মুখ্যমন্ত্রী তীরথ সিংহ রাওয়াত। মুখ্যমন্ত্রীত্বের চেয়ারে বসার পরেই ভারতীয় মেয়েদের ছেঁড়া জিন্স পরা নিয়ে তাঁর মন্তব্য উস্কে দিয়েছিল বিতর্ক।
গত রবিবারই এক ভিডিওতে তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘ভারতকে ২০০ বছর শাসন করেছে আমেরিকা। তাঁদের এখন করোনার জেরে দুর্দশা দেখা দিয়েছে।’’ তিনি যে ইংরেজদের সঙ্গেই আমেরিকানদের গুলিয়ে ফেলেছেন, তা ওঁর বক্তব্যের মাধ্যমেই পরিষ্কার। তবে লকডাউন চলাকালীন কেন্দ্রীয় সরকারের খাদ্যশস্য দেওয়ার প্রকল্পের বেশি সুবিধা পেতে পরিবারের সদস্য সংখ্যা বাড়ানো নিয়ে তীরথ যা বলছেন, তা কেন্দ্রের মোদী সরকারকেও যথেষ্ট অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে।
করোনা ভাইরাস অতিমারির জেরে লকডাউন জারি হয়েছিল গতবছর ঠিক এই দিনেই লকডাউন জারি হয়েছিল গোটা দেশজুড়ে। কাজ হারিয়ে কঠিন অবস্থার মধ্যে দিন কাটিয়েছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। সে সময় প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনায় রেশন বিলি করা হয়েছিল সাধারণ মানুষের মধ্যে। লকডাউনের সময়ে রেশনে মাথাপিছু পাঁচ কেজি খাদ্যশস্য দেওয়ার প্রসঙ্গে বলতে গিয়েই ওই মন্তব্য করেছেন তীরথ। বলেছেন, “মাথাপিছু ৫ কেজি করে রেশন দেওয়া হয়েছে। যদি পরিবারে ১০ জন সদস্য হয়, তাহলে ৫০ কেজি রেশন পাবে। ২০ জন থাকলে ১ কুইন্টাল। কোনও পরিবারের ১ কুইন্টাল রেশন পাওয়া নিয়ে এখন কেউ যদি হিংসা করে, তাহলে বলতে হয় দু’টির বদলে তোমরা ২০টি সন্তানের জন্ম দাওনি কেন?”
সম্প্রতি দেহরাদুনে শিশু অধিকার রক্ষা কমিশনের অনুষ্ঠানে তীরথ বলেছিলেন, বিমানে এক জন মহিলাকে তাঁর শিশুদের নিয়ে সফর করতে দেখেছিলেন তিনি। সেই সময়ে ওই মহিলা ছেঁড়া জিনস পরে ছিলেন। সেই ঘটনার কথা উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘ওই ঘটনা দেখে আমি আঘাত পেয়েছি। সমাজে আমরা কী বার্তা দিচ্ছি।’’ তীরথের মন্তব্য ঘিরে সেইসময় দেশের বিভিন্ন মহল থেকে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। গত কাল এই বিষয়ে আরএসএস নেতা হোসাবলেকে প্রশ্ন করা হয়েছিল। সাংবাদিকদের হোসাবলে বলেন, ‘‘আপনারা যাঁর কথা বলছেন, তিনিই এ ব্যাপারে জবাব দিতে পারবেন। অনেকেই মতামত জানিয়েছেন। তবে সেটা ঠিক না ভুল- সে সব ওঁদেরকেই জিজ্ঞাসা করতে হবে। অন্যের মতামত এক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য নয়।”

























