জল
জল
সৌজন্যে: bangla hunt

জল মানুষের কাছে যে অর্থবহন করে তা হলো জীবন। আর এই জল কম খাওয়ার জন্য শরীরে জলের অভাব দেখা দেয়। তাই এই জীবনেকে সঠিকভাবে সুস্থ ভাবে চালিত করতে গেলে আমাদের নিয়মিত জল খেতে হবে। আমরা অনেকেই জল খুবই কম খেয়ে থাকি আবার এই শীতকালে অনেকেরই জল খাওয়ার পরিমান কমে যায়। শীতের বাতাস যখন থেকে বয়তে থাকে তখন থেকেই আমাদের জল পান করার সাথে একটা দূরত্বতা তৈরি হয়ে ওঠে।জল শুধু মাত্র তেষ্টায় মেটায় না, আমাদের দেহের জলের মাত্রা বা পরিমানের ভারসাম্যও বজায় রাখে।তাই এখন জল আমাদের পরিনামমতো খেতে হবে। আমাদের শরীরে জল অপরিহার্য উপাদান তাই আজ থেকে এই ভুল আর নয় আমাদের দৈনিক জল পান করতে হবে তিন – চার লিটার। না হলেই বাসা বাঁধবে আমাদের শরীরে নানান ধরণের মারাত্মক সব রোগ। তাহলে আমরা দেখি জলের অভাবে কী কী রোগের সম্মুখীন হবো আমরা –

১.কিডনির সম্যসা :

dr inner 120180210031734
সৌজন্যে:Ekushey Television

শরীরে জলশুন্যতার কারণে আমাদের শরীরে প্রথম যে লক্ষণ দেখা দেয় তা হলো শরীরে জলের অভাব হলে মূত্রের রং হলুদ বা লালচে হয়ে যায়। এই সব লক্ষন দেখা দিলে সাথে সাথে জল পান করুন পরিমাণমতো। আমরা অনেকেই মূত্রের রং হলুদ বা লালচে দেখে হয়তো গ্রাহ্য করিনা বা বুঝতে পারিনা কিন্তু এইসব পর্যায় থেকে আরো বড়ো আকার ধারণ করে আমাদের শরীরে। তার সাথে সাথে কিডনির পরিচালনাও ব্যাহত হয় । তাই শরীর জলের অভাবে প্রথম যে সম্যসা হতে পারে তা হলো কিডনির সমস্যা। আমরা জানি আমাদের দেহের টক্সিন জলের সাহায্যে কিডনি ছেঁকে বের করে দেয়। তাছাড়া ইউরিন ইনফেকশন ইত্যাদি নানা রোগ তো আছেই এমনকি অনেক সময় কিডনি নষ্ট হয়ে যাবারও সম্ভাবনা থাকে ।

২.লিভারের সমস্যা :

liver20181007105330 20200124101912
সৌজন্যে: Bangladesh Times

জল কম খাওয়ার জন্য আমাদের পরিপাকতন্ত্র সঠিক ভাবে কার্য সম্পন্ন করতে পারে না তাই আমাদের দেহে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে। কোষ্ঠকাঠিন্য হলে আমাদের তরল খাবার এবং বেশি পরিমানে জল পান করা অত্যন্ত দরকার। কোষ্ঠকাঠিন্য – এ দীর্ঘ দিন ভুগলে সেখানে থেকে আরো বড়ো আকার ধারণ করতে পারে এই রোগ।জল পরিমান মত শরীরে প্রবেশ না করলে আমাদের হজম শক্তি কমে যাই ফলে গ্যাস্ট্রিক, আলসার ,পাইলসের সমস্যা , লিভারের সম্যসা ইত্যাদি দেখা দেয়।

৩.ডিহাইড্রেশন :

জলের অভাবে আমাদের দেহে ত্বক শুস্ক হয়ে যায়। জলশুন্যের কারণে আমাদের শরীরে স্বাভাবিক কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলে ফলে শরীরকে তাড়াতাড়ি ক্লান্ত করে তোলে , মাথাব্যাথা ,মাথাঘোরা শরীরকে করে তোলে দুর্বল। এছাড়া দেহে জলের ঘাটতির কারণে পেশিতে টান ধরে যাওয়া এই সব লক্ষণ দেখা যাই শরীরে। এইরকম ভাবে চলতে থাকলে নানান রোগ বাসা বাঁধে শরীরে।

৪.চুলের সম্যসা :

shutterstocknormal1558334688
সৌজন্যে: femina.in

নারী পুরুষ উভয়ের সৌন্দর্য বৃদ্ধির একটি দিক হলো আমাদের চুলের সৌন্দর্যতা। আমরা এখন চুল পড়ার সম্যসা নিয়ে প্রায় ছোটো থেকে বড়ো সবাই ভুক্তভুগি। এই চুল পড়ার যে সম্যসা তাও কিন্তু হয় পরিমাণমতো জল এবং স্বাস্থ্যসম্মত খাবার না খাওয়ার কারণে। এখন আমরা বাইরে গিয়ে খেয়ে থাকি নানা ফাস্টফুড জাতীয় খাবার কিন্তু তার পরিবর্তে জল একদমই পান করিনা বলেই চলে। তাই ফাস্ট ফুড,জাঙ্ক ফুড না খাওয়াটাই শরীরের পক্ষে ভালো। কিন্তু লোভের বশবর্তী হয়ে আমরা তা খেয়ে ফেলি কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে এইসব খাবার পর জল কিন্তু পান করতে হবে পরিমানমতো। আর তা নাহলেই খুশকি,ফাঙ্গালের মতো নানা ইনফেকশন হতে পারে আর যার দরুন আমাদের প্রিয় চুল নষ্ট হয়ে গিয়ে টাকে পরিণত হয়। যা আমরা প্রায় কেউই চাই না তাই জল পান করুন।

৫.ওজন বৃদ্ধি :

thumb
সৌজন্যে : Bangla hunt

শরীরে জলের অভাবে আর একটি যে সমস্যা দেখা দিতে পারে তা হলো ওজন বৃদ্ধি। আমরা সকলেই চাই আমাদের দৈহিক ওজন যেন স্বাভাবিকের থেকে বেশি না হয় কেননা ওজন বৃদ্ধি পেলেই শরীরে বাসা বাঁধে নানা ধরণের রোগ। আর জল কম খাওয়ার কারণে আমাদের শরীরে মেটাবলিজম প্রক্রিয়ার গতিকে কম করে দেয় ফলে শরীরে প্রচুর পরিমানে মেদ জমে। তাই দৈনিক পরিমান মতো জল পান করা আমাদের অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

আমাদের দেহে জলের পরিমান দুই-তৃতীয়াংশ তাই সচেতন মানুষ হয়ে আমাদেরকে জল পান করতে হবে পরিমাণমতো না কম না বেশি। তাই সারাদিনে ৩-৪ লিটার জল পান করুন। আমরা আমাদের জীবনে শারীরিক ভাবে সুস্থ থাকলে তবেই মানসিক ভাবেও সুস্থ থাকতে পারবো। জীবনের নানা বাধা বিপত্তিকে অতিক্রম করার জন্য আমাদের শারীরিক ও মানসিক দুভাবেই সুস্থ থাকাটা অতি প্রয়োজনীয়। সেই কারণে আজ থেকে শত ব্যাস্ততার মধ্যেও আমাদের জল পান করতে হবে নিয়মিত মনে করে।