নিজস্ব সংবাদদাতা: এই অভিযোগ দীর্ঘদিনের। মাঝে বেশ কয়েকবার মুখ্যমন্ত্রীর তরফে ঘোষণা হলেও, তা পুরোপুরি মিটছে না। এখনও অবধি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার তাঁদের প্রাপ্য মহার্ঘ ভাতা দিচ্ছে না বলেই জানিয়েছে বেশ কয়েকটি সরকারি কর্মী সংগঠন। এর ফলে তাঁদের মধ্যে একটা ক্ষোভ সঞ্চার হয়েছে। আর তা ভোটেও প্রতিফলিত হয়েছে। ২০১৯ সালে পোস্টাল ব্যালটে দেখা গিয়েছে বিজেপি ৩৯টি কেন্দ্রে এগিয়েছিল। তৃণমূল, কংগ্রেস এবং সিপিআইএম ১টি করে কেন্দ্রে এগিয়েছিল।
তবে একুশের ভোটে তার কেমন প্রভাব পড়বে? যেখানে বিধানসভা মানেই সরাসরি রাজ্য পরিচালনার সঙ্গে সম্পর্ক। তা জানতে বাংলার শাসকদল তৃণমূল, বিরোধী বাম এবং বিজেপি প্রভাবিত সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে তা জানার চেষ্টা করা হয়েছে। তৃণমূল প্রভাবিত পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের দাবি, এই কঠিন পরিস্থিতিতেও রাজ্য ৩ শতাংশ মহার্ঘ্য ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতেই সরকারি কর্মীরা খুশি। তবে বাম প্রভাবিত রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটি এবং বিজেপি প্রভাবিত রাজ্য সরকারি কর্মচারী পরিষদের দাবি, পোস্টাল ব্যালটে এর জবাব পাওয়া যাবে যে, এই ঘটনায় কর্মীরা কতটা খুশি।
গতকাল রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজয়শঙ্কর সিনহা বলেন, গত ১০ বছর এবং তার আগের ৩৪ বছরের অভিজ্ঞতা থেকে বাংলার মানুষ বিরক্ত, তাঁরা তিক্ত। বিদ্যাসাগর, রামমোহনের রাজ্যে সাম্প্রদায়িকতা ভোটের বিষয় হয়ে দাঁড়াচ্ছে। আমরা আলাদা কোনও লোক নই। সবাই যা ভাবছেন, আমিও তাই ভাইছি। রাজ্যের মানুষ যেমন ভোট বাক্সে প্রভাব ফেলবেন, তেমন সরকারি কর্মীরাও করবেন। মহার্ঘ্য ভাতা বিষয় হয়ে দাঁড়াবে বলেই আমার মনে হয়।
এদিন বিজেপি প্রভাবিত সরকারি কর্মচারী পরিষদের সভাপতি দেবাশিস শীল রাজ্য সরকারকে রীতিমত তুলোধনা করেছেন। তাঁর দাবি, স্যাট-এর রায় মানছেই না রাজ্য। ফের আদালতে যেতে হবে। বোঝা যাচ্ছে, ডিএ দিতে রাজি নয় রাজ্য। যেখানে ডিএ-কে সাংবিধানিক অধিকার বলে রায় দিয়েছে আদালত। ফলে ভোটে এর প্রভাব নিঃসন্দেহে পড়বে। যেমন দেখা গিয়েছিল লোকসভা ভোটে।
অন্যদিকে, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের আহ্বায়ক দিব্যেন্দু রায়ের দাবি, কেন্দ্র বন্ধ করে দিয়েছে। অন্য কোনও রাজ্য দিয়েছে বলতে পারবেন। এর মাঝে রাজ্য ৩ শতাংশ দিয়েছে। এমন উদাহরণ নেই। রাজ্যের ষষ্ঠ বেতন কমিশন কেন্দ্রীয় সরকারের সপ্তম কমিশনের সমান। এটা শুধু এ রাজ্য নয়, যে কোনও রাজ্যের জন্যই। মহার্ঘ্য ভাতা দেওয়ার জন্য কর্মীরা খুশি। সবাই দেখেছেন, জানেন কোন রাজ্য কী দিয়েছে। তাই সবাই খুশি।