নিজস্ব সংবাদদাতা- প্রতিদিনই পেট্রোল-ডিজেলের দাম একটু একটু করে বাড়ছে। বিরোধীরা যা নিয়ে নিয়মিত সমালোচনা করছে কেন্দ্রীয় সরকারের। অর্থনীতিবিদরাও জানিয়েছেন পেট্রোল-ডিজেলের দাম যত বাড়বে ততই জিনিসপত্রের দামও বাড়তে থাকবে। এদিকে দেশের কাজের বাজার ভাল নয়, অনেক মানুষ কাজ হারিয়েছেন অনেকের বেতন হয়ে গিয়েছে অর্ধেক। এই পরিস্থিতিতে জীবন ধারণ করাই দুর্বিষহ হয়ে উঠছে। মানুষের ক্ষোভ যে দিন দিন বেড়েই চলেছে তা বুঝতে পারছিল নরেন্দ্র মোদি সরকার। পরিস্থিতি সামলাতে এবার সাফাই দিলেন কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান।
গতকাল সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী দাবি করেন বিশ্ববাজারে তেলের দাম বাড়ছে বলেই ভারতে প্রতিদিন দাম বাড়াতে হচ্ছে। তার যুক্তি, “করোনা মহামারীর ফলে তেল উৎপাদক দেশগুলিতেও উৎপাদন মার খেয়েছে। দৈনিক উৎপাদন অনেকটাই কমে যাওয়ায় বিশ্ববাজারে তেলের দাম হুহু করে চড়ছে। তাই বাধ্য হয়ে দেশের তেল কোম্পানিগুলিকেও দাম বাড়াতে হচ্ছে।”
তিনি বলেন, “কয়েক মাস আগেও বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম ছিল ৩৫-৩৮ ডলার। অথচ সেই দাম বেড়ে এখন হয়েছে ৫৪-৫৫ ডলার। অপরিশোধিত তেলের দাম এতটা বেড়ে যাওয়াতেই বাধ্য হয়ে পেট্রোল-ডিজেলের দাম বাড়াতে হচ্ছে।”
ধর্মেন্দ্র প্রধানের দাবি বিশ্ব বাজারে অপরিশোধিত তেলের দামের এই ওঠাপড়ার প্রভাব থেকে দেশের অর্থনীতিকে রক্ষা করতে কেন্দ্রীয় সরকার অপ্রচলিত শক্তির ওপর জোর দিচ্ছে। বৈদ্যুতিক গাড়ির প্রচলন এই উদ্দেশ্যেই প্রথম বড় পদক্ষেপ বলে তিনি উল্লেখ করেন। তার দাবি ইথানল উৎপাদন ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার আগে চাহিদার মাত্র ১ শতাংশ ছিল। কিন্তু তাদের সরকার তা বাড়িয়ে ৯ শতাংশে নিয়ে গিয়েছে বলে জানান তিনি।
ভারতে চাহিদার ৮০ শতাংশ অপরিশোধিত তেল বিদেশ থেকে আমদানি করতে হওয়ায় এখানে তেলের দামের ওপর প্রভাব অনেক বেশি পড়ে বলে কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী যুক্তি দিলেও, তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের ক্রমবর্ধমান কর বৃদ্ধির প্রসঙ্গ এড়িয়ে যান। বিরোধীরা বেশ কিছুদিন ধরে অভিযোগ করছে কেন্দ্রীয় সরকার ক্রমাগত অপরিশোধিত তেলের ওপর কর বৃদ্ধি করায় দেশের মানুষ এক ফোঁটাও স্বস্তি পাচ্ছেনা।
ঘটনা হল এখন বিশ্ব বাজারে তেলের দাম বাড়ার ফলে দেশেও তেলের দাম যেমন বাড়ছে তেমনটা কিন্তু কয়েক মাস আগে হয়নি। তখন বিশ্ব বাজারে তেলের দাম হুহু করে পড়ে যাচ্ছিল, অথচ কেন্দ্রীয় সরকার কর বৃদ্ধি করে বাজারে পেট্রোল-ডিজেলের দাম প্রায় একই রেখে দেয়। যার ফলে দাম কমার সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয় দেশবাসী। সেই সময় এই নিয়ে কেন্দ্রের সমালোচনা হলেও সরকারের শীর্ষস্তরের মন্ত্রীরা কোনো প্রতিক্রিয়া দেননি।