নিজস্ব সংবাদদাতা: বাংলায় আট দফা ভোট গতকালই সম্পূর্ণ হয়েছে। এবার ভোটের ফলাফল প্রকাশের জন্য আর মাত্র একদিন বাকি। কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা। তবে তার আগে গতকাল ভোট শেষ হওয়ার পর থেকেই একের পর এক বুথফেরত সমীক্ষা তুলে ধরেছে সংবাদমাধ্যমগুলি। কে আসবে ক্ষমতায়? কেই বা হবে সেকেন্ড বয়? মমতা ম্যাজিকে কি এবারও তৃণমূল ক্ষমতা অর্জন করবে নাকি মোদী-শাহের কথা মতই প্রথমবার ক্ষমতায় আসবে বিজেপি? সবই এক এক করে দেখানো হয় সমীক্ষায়। উল্লেখ্য, গত ৮ দফায় রাজ্যের ২৯৪টি আসনের মধ্যে ২৯২টি আসনে ভোট হয়েছে। সামসেরগঞ্জ ও জঙ্গিপুর আসনে সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ায় ভোটগ্রহণের দিন পিছিয়ে গিয়েছে। এই দুই কেন্দ্রে আগামী ১৬মে ভোট হবে। ফলাফল প্রকাশ হবে ১৯মে।

ভোট শুরু হওয়ার কয়েক সপ্তাহ আগেই নন্দীগ্রামে গিয়ে আহত হন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে আহত হওয়ার পর বাড়িতে বসে থাকেননি। বরং ভাঙা পায়ে ব্যান্ডেজ বেঁধেই ভোটের ময়দানে নেমে পড়েন তিনি। রাজ্যের প্রতিটি প্রান্তে, জেলায় জেলায় হুইল চেয়ারে বসেই তিনি প্রচার সারেন। বিজেপি এই নিয়ে বেশ কয়েকবার মমতাকে কুরুচিকর ভাষায় আক্রমণ করে। মমতার আহত হওয়ার সেই প্রভাব কি ভোটে পড়বে? তার হালকা আভাস মিলেছে এক্সিট পোলে।

এবারের ভোটের সবথেকে হেভিওয়েট প্রার্থী ছিলেন নন্দীগ্রামের দুই প্রার্থী। একজন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অপরজন ভোটের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া শুভেন্দু অধিকারী। দুজনেই দাঁড়িয়েছিলেন ২০১১ সালের পরিবর্তনের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু থেকে। নন্দীগ্রাম শুভেন্দুর গড় বলে পরিচিত। সেখানেই ভোটে দাঁড়ানোর চ্যালেঞ্জ নেন মমতা। তিনি কি পারবেন, সেখান থেকে জিততে? না কি শুভেন্দুই তাঁর গড় দখলে রাখবে? সেটাই দেখার।

এদিকে, এবারের নির্বাচনে ৫ জন সাংসদকে দাঁড় করায় বিজেপি। তালিকায় ছিলেন বাবুল সুপ্রিয়, লকেট চট্টোপাধ্যায়, স্বপন দাশগুপ্ত, নিশীথ প্রামাণিক ও জগন্নাথ সরকার। তাঁদের দিকেও আলাদা করে নজর থাকবে। বিধানসভা ভোটে তাঁরা জিততে পারবেন কিনা, সেটাই দেখার। উল্লেখ্য, ভোট শুরু হওয়ার কিছুদিন আগে বিজেপিতে যোগ দেন তৃণমূলের অন্যতম মুখ রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। হাওড়া জেলার দায়িত্ব তাঁকেই দেয় গেরুয়া শিবির। রাজীব এবার বিজেপির অন্যতম মুখ। এছাড়াও সব্যসাচী দত্ত, মুকুল রায়ের মতো নেতারা এবারের ভোটে গেরুয়া শিবিরের হয়ে লড়েছেন। তাঁদের দিকেও নজর থাকবে।

তবে শুধুই হেভিওয়েট নেতা-মন্ত্রী-সাংসদরা নন, ২০২১-এর বিধানসভা ভোটে সেলুলয়েডের তারকারাও ভিড় করেছিলেন। তৃণমূল ও বিজেপি-দুই শিবিরই বিভিন্ন কেন্দ্রে টলিউড তারকাদের প্রার্থী করেন। সেই তালিকায় ছিলেন অভিনেত্রী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, পার্নো মিত্র, তনুশ্রী চক্রবর্তী, কৌশানী মুখোপাধ্যায়, সায়নী ঘোষ, পায়েল সরকার, শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়, অভিনেতা কাঞ্চন মল্লিক, রুদ্রনীল ঘোষ, সোহম চক্রবর্তী, যশ দাশগুপ্ত, হিরণ চট্টোপাধ্যায়, পরিচালক রাজ চক্রবর্তীরা। এঁদের দিকে বিশেষ নজর থাকবে ভোটের ফলাফল প্রকাশের দিন।