নিজস্ব সংবাদদাতা- বিতর্কিত তিন কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে আজ আবার মুখোমুখি আলোচনায় বসতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার এবং আন্দোলনকারী কৃষকরা। এই বৈঠকের দিকে অধীর আগ্রহে তাকিয়ে আছে দেশের সাধারণ মানুষ, কারণ আগামী প্রজাতন্ত্র দিবসের আগে এটিই সম্ভবত শেষ বৈঠক যুযুধান দু’পক্ষের মধ্যে। আজকের বৈঠকে যদি কোনো সমাধান সূত্র না মেলে তাহলে স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে এই প্রথম প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন ট্রাক্টর মিছিল হবে দিল্লি সীমান্তে!

দিল্লির বিজ্ঞানভবনে কৃষক প্রতিনিধিদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের আজকের বৈঠকেও কোনো সমাধান সূত্র বেরিয়ে আসার সম্ভাবনা যথেষ্ট কম। কারণ কেন্দ্রীয় সরকার যেমন আইন প্রত্যাহার না করার দাবিতে অনড় আছে, তেমনই আন্দোলনরত কৃষকরাও পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে কৃষি আইন প্রত্যাহার করা না হলে তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবে। এদিকে আন্দোলনরত কৃষকনেতা বলবিন্দর সিং রাজেওয়ালকে এনআইএ তলব করার পর কৃষক নেতারা আরও ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছেন। তারা কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিহিংসামূলক পদক্ষেপ নিয়ে ইতিমধ্যেই সরব।

সুপ্রিম কোর্ট নির্ধারিত বিশেষজ্ঞ কমিটিও আজ থেকেই তাদের কার্যকলাপ শুরু করবে। যদিও আন্দোলনরত কৃষকরা কমিটির মুখোমুখি হবেন না বলে ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন। তাদের বক্তব্য আইন প্রণয়ন করেছে কেন্দ্রীয় সরকার, তাই একমাত্র কেন্দ্রের সঙ্গেই আলোচনা চলতে পারে। সেই সঙ্গে একাধিক কৃষকনেতা কমিটির সদস্যদের উদ্দেশ্য নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলেছেন।

সামনেই পশ্চিমবঙ্গ ও তামিলনাড়ু বিধানসভা নির্বাচন এই নির্বাচনের আগে বিজেপিও চাইছে দ্রুত কৃষকরা তাদের আন্দোলন প্রত্যাহার করে নিক। কারণ তারা বুঝতে পারছে এই আন্দোলনের প্রভাব এই দুই রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে পড়ার সম্ভাবনা যথেষ্ট বেশি। সে ক্ষেত্রে তাদের কাঙ্ক্ষিত ফলাফল বাধাপ্রাপ্ত হওয়ার সম্ভাবনাই যে বেশি তা বুঝে গিয়েছে বিজেপি নেতৃত্ব।

হরিয়ানা, পাঞ্জাবের পাশাপাশি মধ্যপ্রদেশ ও উত্তরপ্রদেশের স্থানীয় স্তরের বিজেপি নেতারা ইতিমধ্যেই সরকারের কাছে দরবার করতে শুরু করেছে যাতে বিতর্কিত তিন কৃষি আইন নিয়ে দ্রুত কোনো সমাধানে পৌঁছানো সম্ভব হয়। কারণ এই সমস্ত জায়গার বিজেপি নেতারা দীর্ঘদিন ধরে বাড়িতে থাকতে পারছেন না, পরিবার নিয়ে তাদের গ্রাম ছাড়তে হয়েছে। বিজেপি-র আশঙ্কা দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব না হলে দেশের একটা বড় অংশ থেকে তাদের রাজনৈতিক প্রভাবে চিরতরের জন্য মুছে যেতে পারে!