নিজস্ব সংবাদদাতা- শিশির অধিকারীকে সরিয়ে গতকাল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতি করা হয়েছে জল সম্পদ মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্রকে। আজ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, “শিশির দা’র অধীনে আমি জেলা সভাপতি। তার নির্দেশেই যাবতীয় কাজ করব।” যদিও বাস্তব পরিস্থিতি যে এরকম মধুর নয় তা জেলা তৃণমূলের অভ্যন্তরে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে। নতুন সভাপতির নেতৃত্বে আগামী কাল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির সভা ডাকা হয়েছে। সেই সভায় শিশির অধিকারীর পাশাপাশি তার বড় ছেলে হলদিয়ার সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারীকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বলে জানা গিয়েছে।

শিশির অধিকারী গতকাল ‘শিকল ছিঁড়ে গেলেও গলায় পুরানো বকলসটা রয়ে গিয়েছে’ বলেছিলেন! তার কথা শুনলে বোঝাই যায় দলে থাকতে ইচ্ছে না থাকলেও দীর্ঘদিনের ‘টান’ তিনি অস্বীকার করতে পারছেন না। এই গোটা পর্ব সম্বন্ধে দিব্যেন্দু অধিকারী একেবারে চুপ। শেষ মুখ খুলেছিলেন ভাই সৌমেন্দুকে কাঁথি পুরসভার প্রশাসকের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার সময়। তারপর থেকে হাজার প্রশ্ন করা হলেও অধিকারী পরিবারের বড় ছেলে একটিও কথা বলেননি।

রাজনৈতিক মহলে নানান সম্ভাবনা নিয়ে জল্পনা চলছে। অনেকের মতেই অধিকারী পরিবারের কর্তা এবং বড় ছেলে চাইছেন দল থেকে তাদের বের করে দেওয়া হোক। সে ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নিতে সহজ হবে। দল সাসপেন্ড করলে বা বহিষ্কার করলে সাংসদ পদে থেকে যাবে তারা। তখন লোকসভায় নির্দলীয় সংসদ হিসেবে স্বীকৃত হবেন এই দুজন।

আগামী লোকসভা নির্বাচন ২০২৪ সালে। তার আগে এখনই যদি শিশির অধিকারী, দিব্যেন্দু অধিকারী দল ছাড়েন সে ক্ষেত্রে হয় তাদের সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দিতে হবে, না হলে তৃণমূল আবেদন করলে সাংসদ পদ খারিজ হয়ে যাবে। এই পরিস্থিতিতে শিশির বাবু গতকাল তৃণমূলকে ইঙ্গিত করে বলেন, “একবার যদি এদের কবল থেকে মুক্তি পাই, তাহলে বেঁচে যাব। এদের ছায়াও মারাব না। তখন আমি মুক্ত, যা ইচ্ছা তাই করতে পারব।” তাহলে কি এখন তৃণমূল থেকে ‘মুক্তি’ পাওয়াই একমাত্র চাহিদা কাঁথির বিখ্যাত অধিকারী পরিবারের?