গিরগিটির রং পাল্টাতে পারে তা জানা আছে,তবে তার থেকেও বেশী দ্রুত রাজনীতির রং পাল্টাতে পারে রাজনৈতিক নেতারা। রাজনীতিতে দলবদল কোনো নতুন ব্যাপার নয়। নিজের স্বার্থ সুরক্ষিত করতে দলবদল রাজনীতি হরদম ঘটে থাকে। আজ দেখে নেওয়া যাক এমনই কিছু নেতার নাম যারা একসময় তৃণমূল-কংগ্রেসের আস্থাভাজন নেতৃত্ব পদে থাকলেও, এখন ভোল পাল্টে আস্থা দেখিয়েছেন মোদি ম্যাজিকে।

তৃণমূল থেকে বিজেপিতে গেছেন যে সকল হেভিওয়েট নেতারা-

মুকুল রায়

download 34
indiatoday . in

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একসময়ের অন্যতম বিশ্বস্ত ছায়াসঙ্গী মুকুল রায় 2017 সালে বিজেপিতে যোগদান করেন। তৃণমূল নেতা হিসেবে শেষ কয়েক দিনে নারদা স্ট্রিং অপারেশন ও সারদা চিটফান্ড স্ক্যানে তিনি জড়িয়ে পড়েছিলেন। এর কিছুদিন পরেই কৈলাশ বিজয় বর্গীয়র উপস্থিতিতে মুকুল রায় কে গেরুয়া শিবিরের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বিজেপিতে যোগদান করে মুকুল রায় জানান প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদি এবং অমিত শাহের অনুগামী হয়ে কাজ করা তার জন্য এক গর্বের সুযোগ। মুকুলের বিজেপিতে যোগদান পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক আমূল পরিবর্তন ঘটাতে সাহায্য করে, রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে। 2019 এর লোকসভা ভোটে বাংলায় গেরুয়া প্রাধান্য চমকপ্রদ বৃদ্ধিতে মুকুল রায়ের অবদান অনস্বীকার্য। বর্তমানে তিনি বিজেপির জাতীয় স্তরের ভাইস প্রেসিডেন্ট।

অর্জুন সিং

download 35
theprint . in

2019 এর লোকসভা নির্বাচনের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অপর এক বিশ্বস্ত সেনানী অর্জুন সিং তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেন। তৃণমূল থেকেই তিনি চারবার ভোটে জয়লাভ করেন। কিন্তু 2019-এর নির্বাচনের আগে কৈলাস বিজয়বর্গীয় এবং মুকুল রায় উপস্থিতিতে বিজেপিতে যোগদান করেন এবং ভাটপাড়া থেকে বিজেপির টিকিটে তিনি জয়লাভ করেন। বিজেপিতে যোগদান করে অর্জুন সিং জানান যে তিনি দীর্ঘ 30 বছর ধরে মমতা ব্যানার্জির জন্য কাজ করেছেন কিন্তু পুলওয়ামা হামলায় মমতা ব্যানার্জির প্রতিক্রিয়ায় তিনি কিছুতেই মন থেকে মেনে নিতে পারছেন না।

শোভন চট্টোপাধ্যায়

images 4
m . economictimes . com

দীর্ঘদিন কলকাতা পৌর কর্পোরেশনের মেয়র এর পদ সামলেও 2019 সালে বিজেপিতে যোগদান করেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। একদা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্যতম ঘনিষ্ঠ নেতা ছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়।শুধুমাত্র মেয়র নয়,তিনি সামলেছেন মন্ত্রীত্বও। কিন্তু তৃণমূলের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় তিনি একে একে মন্ত্রীত্ব এবং পরে কলকাতা কর্পোরেশনের মেয়র পদে ছেড়ে দেন। তিনি তার বন্ধু অধ্যাপিকা বৈশাখে বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে একত্রে বিজেপিতে যোগদান করে। যদিও বর্তমানে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক জীবন টালমাটাল। বিজেপির সঙ্গেও অসন্তোষের সূত্রপাত হয় তার। ভবিষ্যতে আবার ঘাসফুল শিবিরের দিকে তিনি ঝুঁকবেন কিনা তা সময়ের অপেক্ষা।

সৌমিত্র খাঁ

download 36
catchnews . com

বিষ্ণুপুর লোকসভায় সৌমিত্র খাঁ নিজের রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন জাতীয় কংগ্রেসের হাত ধরে।2013 সালে তিনি তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেন এবং 2014 লোকসভা ভোটে তিনি বিষ্ণুপুর লোকসভা থেকে ঘাসফুল চিহ্নে জয়লাভ করেন।কিন্তু 2019 সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে তিনি বিজেপিতে যোগদান করেন এবং ব্যাপক ভোটে বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রে তিনি পদ্মফুল চিহ্নে জয়ী হন। বর্তমানে তিনি পশ্চিমবঙ্গের বিজেপির যুব মোর্চার প্রেসিডেন্ট।

অনুপম হাজরা

download 37
the hindu . com

2019 সালের জানুয়ারি মাসে দল বিরোধী কর্মকান্ডের জন্য বোলপুরের সাংসদ পদ থেকে বহিষ্কৃত হন। মার্চ মাসে অনুপম হাজরা বিজেপিতে যোগদান করেন।বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর অনুপম হাজরা জানান দলের সত্যতা সম্পর্কে মুখ খোলার জন্য তিনি দল থেকে বহিষ্কৃত হন।2020 সালের 26 শে সেপ্টেম্বর অনুপম হাজরা বিজেপির জেনারেল সেক্রেটারি পদে নিযুক্ত হয়।

এই দলবদল-এর খেলার শুরু আছে তবে কোনো শেষ নেই। বেশ কিছুদিন ধরে তৃণমূল কংগ্রেসের অপর এক আস্থাভাজন নেতা শুভেন্দু অধিকারীর দলবদল নিয়ে উত্তপ্ত হচ্ছে রাজনৈতিক মহল।অনেকের মতে শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগদান শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা। আপাতত সেই দিকেই চোখ রাখছে সব শিবির।