নিজস্ব সংবাদদাতা: জোরকদমে ভোটের প্রচার চালাচ্ছেন প্রতিটি রাজনৈতিক দলেরই প্রার্থীরা। তেমনই বেহালা পূর্ব বিধানসভার বিজেপি প্রার্থী পায়েল সরকারও গতকাল প্রচারে বেরিয়েছিলেন। আর রবিবাসরীয় সকালে সেই প্রচারে বেরিয়ে বিজেপি-র এই তারকা প্রার্থী বাধার সম্মুখীন হয়েছেন বলে অভিযোগ। গতকাল সকালে বেহালা-পূর্ব বিধানসভা এলাকার ঠাকুরপুকুর ২৮০ নম্বর বুথ এলাকায় কর্মী সমর্থকদের নিয়ে প্রচারে যান পায়েল। বিজেপি-র অভিযোগ, সেখানেই তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা তাঁদের প্রার্থীকে লক্ষ্য করে গালিগালাজ শুরু করেন। শাসকদলের কর্মীরা বিজেপি-র মহিলা কর্মীদের ব্যাপক মারধর করেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। যদিও ওই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী রত্না চট্টোপাধ্যায় একে ‘অভিনয়’ বলে কটাক্ষ করেছেন।

বিজেপির তরফে গতকাল প্রচারের পরই অভিযোগ তোলা হয়েছে যে, ওই এলাকায় প্রচার চালাতে দেওয়া হবে না বলে তাঁদের প্রথমে হুমকি দেওয়া হয়। তৃণমূল কর্মীদের মারধরে প্রচারে আসা গেরুয়া শিবিরের বেশ কিছু মহিলা কর্মী সমর্থক গুরুতর আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ। বাধা পেয়ে বিজেপি কর্মী সমর্থকরা বাখরাহাট রোড অবরোধ করেন। বিজেপি প্রার্থীও কর্মীদের সঙ্গেই রাস্তায় দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ জানাতে থাকেন। বিষয়টি নির্বাচন কমিশনে জানানো হবে বলেও সংবাদমাধ্যমকে জানায় বিজেপি নেতৃত্ব।

যদিও, বিজেপি প্রার্থীর এই অভিযোগ নস্যাৎ করে দেন বেহালা-পূর্ব কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী রত্না চট্টোপাধ্যায়। নাম না করে পায়েলকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘‘নাটক বা অভিনয়- সব কিছুই সিনেমা বা রঙ্গম়ঞ্চে চলে। রাজনীতির ময়দানে এ সব চলে না। বিজেপি প্রার্থী মিথ্যে অভিযোগ করছেন। তিনি তাঁর কাজে ফিরে গিয়ে অভিনয় করুন। বেহালা-পূর্ব নাটকের জায়গা নয়।’’ এরপর বিজেপির দিকে পাল্টা অভিযোগের আঙুল তুলে রত্না বলেন, ‘‘আমাদের কর্মীরা কেউই ওদের প্রার্থীকে প্রচার করতে বাধা দেননি বা মারধর করেননি। বরং ওদের লোকেরাই আমাদের একজনকে ব্যাপক মারধর করায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে।’’

এরপরে ঠাকুরপুকুর থানায় গিয়েই দু’পক্ষের নেতারা পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। পরে বেহালা-পূর্বের ঠাকুরপুকুর এলাকার জেনেক্স ভ্যালি-তে প্রচার করেন পায়েল। প্রচার শেষে বিজেপির কলকাতা জোনের সহ আহ্বায়ক শঙ্কুদেব পণ্ডা বলেন, ‘‘তৃণমূল শুধু বেহালা-পূর্ব কেন্দ্রেই নয়, সারা রাজ্যেই আমাদের প্রার্থীদের প্রচারে বাধা দিচ্ছে। যদিও গেরুয়া শিবিরের এহেন অভিযোগ ফুৎকারে নস্যাৎ করে দিচ্ছে ঘাসফুল শিবির। তাদের বক্তব্য, গোটা বিজেপি দলটাই এখন রাজনীতি ছেড়ে অভিনয়ের দিকে মন দিয়েছে। এইজন্য সকলের সামনে নাটক করছে।’’ সবমিলিয়ে পায়েল সরকার ও রত্না চট্টোপাধ্যায়ের এই দ্বন্দ্বে সরগরম বেহালা পূর্ব এলাকা। এখন দেখার শেষ অবধি ওখানে কে বাজিমাত করতে পারেন!