পুলিশ

পুলিশ মানে ঘুষখোর !

পুলিশ মানে সরকারের দালাল ! 

পুলিশ মানে লিগাল গুন্ডা !

 হ্যাঁ এ ধরনেরই আরো কত  সমার্থক শব্দ বন্ধ জুড়ে গেছে আমাদের সামাজিক স্তরে | বাড়িতে যদি আপনার ছেলে বা মেয়ে পুলিশে চাকরি করে তার জন্য পাত্র-পাত্রী পাওয়াটাও বেশ কঠিন। প্রতিটি  পুলিশ পরিবারের সন্তান সন্ততিরা  তাদের স্কুল কলেজ সহপাঠী এবং সহকর্মীদের থেকে কি ধরনের আচরণ  নিত্য  পেয়ে চলেছে তা একমাত্র তাদের একান্ত অভিজ্ঞতায় বলতে পারবে |

যাইহোক থাক এসব তো সেন্টিমেন্টাল কথা ( সত্যও বটে),  আজকে পুলিশ দিবস।আর পশ্চিমবঙ্গে পুলিশের ইজ্জত কতখানি আমরা সবাই জানি। অন্তত পুলিশের উপস্থিতিতে আর তাদের অনুপস্থিতিতে এই সম্মানের ফারাক টুকুও কারুর অজানা নয়। 

 আজকে যেখানে  সমগ্র পশ্চিমবঙ্গ সহ  অপামর ভারতবাসী ক্ষোভে এবং ঘৃণাই ভেঙে পড়েছে  পশ্চিমবঙ্গের আরজিকরের  অভয়াকাণ্ডকে ঘিরে |  চারিদিকে যে দাবানল জ্বলেছিল আজও তা তুষের আগুনের ন্যায় নানা মনের অন্তরালে অবস্থানরত। অনেকের পক্ষে এটা হয়তো বোঝাটাও মুশকিল হয়েছিল যে রাজনৈতিক কলকাঠির প্ররোচনায় কিভাবে মুখ্য ঘটনা থেকে দোষীদের সাজা ঘোষণা করা থেকে বিষয়ের কেন্দ্রবিন্দু নানাদিকে ঘুরিয়ে অগোছালোভাবে সমাজে বিভ্রান্তি এবং সমাজের একটি বিরাট অংশকে নানা স্বার্থে ব্যবহার করা হয়েছিল |  আজও যার প্রকৃত বিচার নিয়ে মানুষের মনে ধন্ধ | প্রশ্নচিহ্ন রয়ে গেছে পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা এমনকি তাদের বিষয় কেন্দ্রিক অবস্থানকে নিয়েও | 

 ঠিক তেমনি, এমন কি বলা চলে তার থেকেও নৃশংসতম অপর একটি অভয়াকাণ্ড ঘটে গেছিল পশ্চিমবঙ্গেরই তথ্যপ্রযুক্তি শহর বিধান নগরের নিউটাউন অঞ্চলে | ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ এমনই একটি কলঙ্কতম দিবস এই শহরের ইতিহাসে যেখানে  রিয়াত পায়নি মাত্র ১৩ বছর বয়সের একটি নিষ্পাপ অভয়া | 

বাড়ি থেকে আবেগের বসে বেরিয়ে যাওয়া ছোট্ট খুদে শিশু কন্যাটির আর ফিরে আসা হয়নি কোনদিন…
এমন এক নৃশংস ঘটনার শিকার সে হয় যার ব্যক্ত করার শব্দ যতটা দুর্লভ ততোটি অসম্ভব তার বেদনা যাতনা এবং কাতরাণীর সত্যতা অনুভব করা যেকোনো কারোর পক্ষেই | এমন এক নৃশংস জঘন্য ব্যক্তিত্বের কবলে সে পড়েছিল যে আদতে ছিল একেবারে পরিপক্ক এবং অভিজ্ঞ আসামি এবং পূর্বেও তার মহিলা  বিরোধী অসামাজিক কার্যকলাপের পাশবিকতায় বলিয়ান |
সদ্য আরজিকর থেকে জনমানুষের রোষ তখনও মিটে যায়নি উর্দিধারীদের মধ্যেও থেকে গেছে নিজ-ঘৃণা ভাববোধ। প্রকৃত আসামিকে এমত পরিস্থিতিতে হাজির করাটা ছিল যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং এবং দ্বিধাগ্রস্থতা ছিল এতটাই যে কোন মতে এটি যেন রাজনৈতিক তথা সাংবাদিকতার শিকার হয়ে ন্যায় বিচার থেকে আড়াল না হয়ে পড়ে | এমত অবস্থায় … 

পুলিশ মানেই সুঠামো পেশীর,  দীর্ঘাকার এবং উচ্চকন্ঠে কর্কষ শব্দের উপস্থিতিকেই মুখ্যত আমাদের মনে ধরা হয়। যেটি একেবারে মিথ্যা নয়। 

কিন্তু আজকের এই  সত্য ঘটনাটি  একটি অন্য ব্যক্তিত্ব কে নিয়ে এবং এই ব্যক্তিত্ব ছাড়াও ঘটনাটির গুরুত্ব সমসাময়িক সময়ের পরিপেক্ষে  খুবই প্রয়োজনীয় |

ক্ষীণদেহ – গৌরবর্ণ, পাতলা একটি গোঁফ, উচ্চতা কোনমতে পুলিশের মত, অর্ধ দশকেরও কম যার চাকরি অভিজ্ঞতা… কাকতালীয়ভাবে পেয়ে গেল এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ  তদন্ত করার  দায়িত্বভার,  যদিও অনেকে বলে এটি মোটেও কাকতালীয় ছিল না অনেকাংশে ছিল এমন একটি সিদ্ধান্ত যেখানে সে ছিল নানাবিধ কারণে উপযুক্ত ব্যক্তিত্ব সে তার নিষ্ঠা কর্তব্য পরায়ণতা অথবা দুঃসাহসিক এবং  দৃঢ় মেধা  নাকি কর্তব্যের প্রতি অগাধ শ্রদ্ধা যে তাকেই নির্ধারণ করা হয়েছিল এই সময়ের শ্রেষ্ঠ Alfred Dreyfus  হিসাবে যদি কোন অঘটন ঘটে |

যদিও সত্য হলো এটি আজকের এই পুলিশ দিবসে  সে পুরস্কৃত হয়েছে এমনই একটি নিষ্ঠুর পাশবিক এবং সংবেদনশীল ঘটনার পূর্ণ তদন্ত সম্পূর্ণ করে প্রায় ৪১১ পাতার চার্জশিট জমা করা এবং সেই কেসের নেতৃত্ব প্রদান করে | হয়তো তার এই কাজের সুবাদে বলিয়ান হবে আরো শত সহস্র আগামী দিনের  প্রশাসনিক কাজকর্মে কর্মরত যোদ্ধারা |  যাদের মধ্যে অনেকেই আমরা চিনি শুধুমাত্র “ পুলিশ” রূপে…
 

এই পুলিশ নামের প্রাণীরা  হয়তোবা  কঠোরতার সাথে লড়ে যাবে তাদের প্রতি সমাজের প্রদর্শিত। নানা উপমা ব্যাঙ্গমা এবং ব্যঞ্জনিত শব্দ ধ্বনি গুলিকে,  হয়তো এতটাই পাশবিক এবং হৃদয়হীন হতে পারবে যে শত সহস্র অপবাদ সহ্য করেও নিষ্ঠার সাথে নিজেদের শত শতাংশ দিয়ে লড়ে যাবে যাতে করে সমাজের  অমঙ্গলকামী  প্রতিরোধী  শক্তিরুপে উচ্ছসিত হয়ে পড়বে নব প্রেরণা রূপে |

পরিশেষে,  শুধু বলতে পারি এই গল্পের আঙ্গিকে ন্যায় প্রতিষ্ঠাকারী সেই ব্যক্তি বর্তমানেও কর্মরত বিধান নগর পুলিশ কমিশনার এটি অন্তর্গত কোন একটি থানাতে…. এবং তার এই কঠিন এবং জীবনের অন্যতম নিষ্ঠুর তদন্তের  পরিসরে একটি ছোট্ট আলোকপাত যদি আপনারাও  অনুভব করতে চান  তবে নজর রাখুন আমাদের পূজা সংখ্যায়…  এই নির্দিষ্ট ‘পুলিশ’ প্রাণীর ন্যায় বিচারের  তদন্ত প্রক্রিয়া এবং  আরো অনেক তথ্য বিস্তারিতভাবে আসছে…