নিজস্ব সংবাদদাতা- একের পর এক বিতর্কিত রায় দেওয়ার পর বেশ বড়সড় ধাক্কা খেলেন মুম্বাই হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি পুষ্পা গানেরিওয়ালা। কয়েকদিন আগেই সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদের নেতৃত্বাধীন কলেজিয়াম কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে গানেরিওয়ালার স্থায়ীকরণের জন্য সুপারিশ করে। কিন্তু তার ওপর সুপ্রিম কোর্টের বর্ষীয়ান বিচারপতিদের একাংশ ক্ষুব্দ হয়ে ওঠায় সেই সুপারিশ প্রত্যাহার করে নিল কলেজিয়াম।

পুষ্পা গানেরিওয়ালা গত কয়েকদিন ধরেই শিশু নির্যাতন এবং ধর্ষণ নিয়ে একের পর এক বিতর্কিত রায় দেন। একটি শিশু নির্যাতন মামলার রায়দানের সময় মন্তব্য করেন ১২ বছর বয়সী কোনো শিশুর জামা কাপড় না খুলে পোশাকের ওপর দিয়ে যদি সেই শিশুর বুক অথবা গোপন অঙ্গে হাত দেওয়া হয় তাহলে তা শিশু নির্যাতন আইনের ‘তক স্পর্শ’ করার আওতায় পড়ে না! এক্ষেত্রে অভিযুক্তকে তিনি শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ আইনের আওতায় থেকে মুক্তি দেন।

পস্কো আইন সংক্রান্ত এই বিতর্কিত রায়দানের কয়েকদিনের মধ্যেই একটি ধর্ষন মামলার রায় দিতে গিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন। বলেন অভিযুক্ত একই সঙ্গে নিজের এবং নির্যাতিতার শরীরের পোশাক খুলতে সক্ষম হয় না। সে ক্ষেত্রে সম্মতির ভিত্তিতেই দুজনের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হয়ে থাকে। এমনকি সবাইকে অবাক করে দিয়ে তিনি ধর্ষণের অভিযোগে ধৃতকে বেকসুর খালাস করে দেন। এছাড়া আরেকটি মামলার রায় দিতে গিয়ে বলেন কারোর হাত ধরে টানা বা স্পর্শ করা যৌননিগ্রহের অন্তর্গত নয়!

একের পর এক বিতর্কিত রায়দান এবং আইনের ব্যাখ্যা দেওয়ার মুম্বাই হাইকোর্টের নাগপুর বেঞ্চে কর্মরত অস্থায়ী বিচারপতি পুষ্পা গানেরিওয়ালার ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন অন্য বিচারপতিরা। শোনা যাচ্ছে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি চন্দ্রচূড় এবং খান‌উলকর অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন এই বিষয়ে। তাদের ক্ষোভের কথা জানতে পেরেই প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন কলেজিয়াম এই মহিলা বিচারপতির চাকরি স্থায়ীকরণের সুপারিশ প্রত্যাহার করে নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে।

পুষ্পা গানেরিওয়ালা এর আগে জেলা আদালতের বিচারপতি ছিলেন। ২০০৭ সালে তিনি মুম্বাই হাই কোর্টের রেজিস্ট্রার হন। পরবর্তীকালে তাকে মুম্বাই হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসাবে নিয়োগ করা হয়। নিয়ম মেনে মুম্বাই হাইকোর্টের তরফ থেকে তার স্থায়ীকরণের সুপারিশ করা হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়ামের কাছে। যদিও একের পর এক বিতর্কিত রায়দানের ফলে এই মহিলা বিচারপতির স্থায়ীকরণের বিষয়টি আপাতত আটকে গেল।