Russia

রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলমান যুদ্ধের কারণে চিপের সংকট আরও গভীর হতে পারে। গত দেড় বছর ধরে বিশ্বে চিপসের ঘাটতি চলছে। এখন এই সংকট ঘনীভূত হলে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। একটি প্রতিবেদন অনুসারে, বিশ্বব্যাপী প্যালাডিয়াম সরবরাহের 44 শতাংশ রাশিয়ার। এর বাইরে নিয়ন সরবরাহের প্রায় ৭০ শতাংশই ইউক্রেন থেকে। এ দুটিই যেকোনো চিপ তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল এবং ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধ তাদের সরবরাহ ব্যাহত করতে শুরু করেছে। এর থেকে স্পষ্ট যে আগামী দিনে চিপ অর্থাৎ সেমিকন্ডাক্টর কমার প্রভাব সারা বিশ্বে দেখা যেতে পারে।

মুডি’স তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, বাজার বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, করোনা মহামারীর পর শুরু হওয়া এই বৈশ্বিক সংকট আরও বাড়তে চলেছে। প্যালাডিয়াম এবং নিয়ন এমন দুটি সংস্থান, যেগুলি যে কোনও চিপ অর্থাৎ সেমিকন্ডাক্টর তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। এই সেমিকন্ডাক্টরগুলি গাড়ি, মোবাইল ফোন এবং অন্যান্য পণ্যের মতো যেকোনো ইলেকট্রনিক আইটেম পাওয়া যায়। বৈদ্যুতিক আইটেমগুলি তাদের ছাড়া কাজ করা কঠিন। প্রকৃতপক্ষে, তারা বিদ্যুতের পরিবাহী এবং খারাপ পরিবাহী হিসাবে কাজ করে। এমন পরিস্থিতিতে সেমিকন্ডাক্টর ছাড়া গাড়ি থেকে শুরু করে মোবাইল অকেজো। এ কারণেই তাদের সরবরাহ শৃঙ্খলে বিঘ্নিত হওয়ায় সারা বিশ্বে সংকটের পরিস্থিতি। এ কারণে গাড়ি থেকে মোবাইলের উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

রাশিয়া - ইউক্রেন

সংকট এখানেই থামছে না, বরং ইউক্রেনের আগ্রাসনের ফলে ভারতের মতো দেশেও মূল্যস্ফীতি বাড়তে চলেছে। বিশ্বে অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেল প্রতি 110 ডলার ছাড়িয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে আগামী সপ্তাহ থেকে ভারতে পেট্রোল ও ডিজেলের দামও বাড়তে পারে। ৪ নভেম্বর থেকে দেশে কোনো দাম না বাড়ানো হলেও আবারও আন্তর্জাতিক বাজারে তাদের দাম হস্তান্তর করা হতে পারে। মুডি’স প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়া ছাড়া অন্য দেশগুলো সরবরাহ বাড়াতে পারে, কিন্তু তার পরেও দাম কমবে না।

মুডি’স অনুসারে, রাশিয়া বিশ্বের অপরিশোধিত তেল সরবরাহের 12 শতাংশের জন্য দায়ী। এ ছাড়া প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহে এর অংশীদারিত্ব রয়েছে 17 শতাংশ, কয়লায় 5.2 শতাংশ এবং তামার সরবরাহে 4.3 শতাংশ। এই সংকট এখানেই শেষ নয়। অ্যালুমিনিয়াম, দস্তা, সোনা, রৌপ্য এবং প্ল্যাটিনামের মতো ধাতু সরবরাহেও রাশিয়া একটি বড় ভূমিকা পালন করে। রাশিয়াও গম রপ্তানীর 11 শতাংশের জন্য দায়ী। এটা স্পষ্ট যে এই সংকট তেল, খাদ্যশস্য থেকে ধাতু পর্যন্ত বাড়তে চলেছে। অন্যদিকে, ইউক্রেনের নিয়ন সরবরাহে 70 শতাংশ অংশীদারিত্ব রয়েছে, যা সংকটকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। এর আগে 2014 সালে, যখন দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়েছিল, তখন একই রকম সংকট দেখা গিয়েছিল।