ভোটের আগের দিন এক তরুণীর আনা ধর্ষণের অভিযোগে তুলকালাম বনগাঁ। গতকাল রাতে স্থানীয় এক তরুণের হাতে ধর্ষিত হন বলে নামজাদা বেসরকারী রাজনৈতিক পরামর্শদাতা সংস্থায় কর্মরত বছর বাইশের এক তরুণী অভিযোগ আনেন। সকাল থেকে নানাভাবে সেই তরুণী অসুস্থ শরীর নিয়ে তাঁর হেনস্থা ও ধর্ষণ হওয়ার ঘটনার অভিযোগ জানানোর সঠিক প্রক্রিয়া কী হবে তা নিয়ে স্থানীয়দের সাহায্য চান। কিন্তু ভোট বড় বালাই। রাত পোহালেই ভোট। তাই স্থানীয় বেশ বড়োবড়ো রাজনৈতিক ক্ষমতাবান নেতারা কেউই তরুণীকে সাহায্য করেননি বলে অভিযোগ। অসমর্থ শরীর নিয়ে তরুণীটি কোথাও যাওয়ার সাহসও পাচ্ছিলেন না। এরপর সেই তরুণী যোগাযোগ করেন বনগাঁ কেন্দ্রের নির্দল প্রার্থী দীনেশ দাসের সঙ্গে। ভোটে প্রচারের জন্য পুরো বনগাঁ উত্তর কেন্দ্র জুড়ে প্রচারপত্র ছড়িয়েছিলেন দীনেশ দাস। সেই প্রচারপত্রে দীনেশ দাসের ফোন নম্বর দেখেই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন সেই তরুণী।
আরও পড়ুন: করোনা প্রতিরোধে ডবল মাস্কিং কার্যকরী? কি বলছেন বিশেষজ্ঞরা?
তরুণীর ফোন পেয়েই ঝাঁপিয়ে পড়েন বনগাঁ উত্তরের এই নির্দল প্রার্থী। ভোটের সমীকরণের কথা মাথায় না রেখে, তরুণীটিকে সমস্তরকম সাহায্য করেন দীনেশ দাস। অন্যরা এড়িয়ে গেলেও তরুণীর পাশে দাঁড়ানো দীনেশ দাসকে সাহায্যের আশ্বাস দেন এলাকার এক তৃণমূল নেতা-প্রাক্তন পুরপ্রধান। পুলিশের কাছে গতকাল রাতের ঘটনার কথা জানিয়ে এফআইআর-ও করেন সেই তরুণী। তাঁর মেডিক্যাল টেস্টও করা হয়েছে। সাংবাদিকদের সামনে ধর্ষণের অভিযোগের কথা জানিয়ে তরুণী ন্যায়বিচার দাবি করেন। দিনের শেষে তরুণীকে সাহায্য করে সবার মন জিতলেন দীনেশ দাস। ভোটে জেতা হারার ভয়ে সবাই যখন পিছিয়ে গিয়েছেন, তখন জিতি-হারি মানুষের পাশে দাঁড়াব, এমন কথা বলা দীনেশ মানবিকতার পরিচয় দিলেন। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী অভিযুক্ত হাজতে ঠাই পেয়েছে।
এই বিষয় নিয়ে দীনেশ দাস বলেন,”তরুণীর আনা ধর্ষণের অভিযোগ সত্যিই বিস্ফোরক। তবে সবচেয়ে হতাশার স্থানীয় নেতাদের মনোভাব। এক অসহায় মহিলার অভিযোগ শুধু ভোট বলে এড়িয়ে যাবো তা আবার হয় নাকি! সবাই ভোটের আগের দিন বলে ভোট খোয়ানোর ভয় করছে। আমি সেসব না ভেবেই ঝাঁপিয়েছিলাম তরুণীটির সাহায্যে। ভোটে জেতা-হারাটা বড় কথা নয়। মানুষের পাশে দাঁড়াতে গেলে অত হিসেব করলে চলে না। সত্যি বলতে ব্যবসায়ী হয়ে রাজনীতিতে নেমে ভোটে দাঁড়ানোর পিছনে এই কারণটাই বড় ছিল। যাতে প্রচলিত রাজনীতির ছক ভাঙি। ভোটের হিসেব করতে গিয়ে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে ভুলব না। ” সোশ্যাল মিডিয়ায় অনুপ্রেরণার কথা, বনগাঁর উন্নয়নের বিকল্প মডেলের কথা বলে দীনেশ দাস এলাকায় বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছেন। মোর নাম এই বলে খ্যাত হোক, আমি বনগাঁর লোক-এই স্লোগান নিয়ে ভোটে লড়া দীনেশ দাস কিন্তু ভোটের আগের দিন বড় মানবিকতার পরিচয় দিয়ে অনেকের কুর্নিশ আদায় করলেন।