Bow Barracks
https://www.google.com/url?sa=i&url=https%3A%2F%2Fenglish.kolkata24x7.com%2Fbow-barracks-set-christmas-season-giving.html%2F&psig=AOvVaw29e2SEtchBUFROTVONneLF&ust=1609433998026000&source=images&cd=vfe&ved=2ahUKEwj6lZr_lvbtAhWGISsKHZ0qDW8Qr4kDegUIARDQAQ

‘Bow Barracks’ নাম টার সাথে কলকাতাবাসী অল্প বিস্তর সকলেই পরিচিত।পুরানো শহরগুলির একটা মনোমুগ্ধকর আবরণ রয়েছে যা কালের করাল গ্রাস কে অতিক্রম করেও স্বমহিমায় নিজ অস্তিত্ব জানান দেয়। ।প্রতিটি পুরোনো অ্যাভিনিউ একটি পুরানো উত্তরাধিকারের চেতনার বহন করে চলে যা বর্তমান কে স্মৃতিমেদুরতায় আচ্ছন্ন করে।এই শহরগুলি, সর্বোপরি, কেবল ভৌগলিক সত্তা নয়, ইট কাঠ পাথরের ইমারতের আড়ালে এগুলো এক দীর্ঘ জীবনের গল্প_যেখানে ইতিহাস শ্বাস ফেলে প্রতিনিয়ত, বর্তমান যেখানে ইতিহাস ঘিরে বেঁচে থাকে।

আসুন জেনে নিই আজ এমনিই একটি ইতিহাসের জীবন্ত সাক্ষী,Bow Barracks -এর গল্প

Bow Barracks -এর ইতিহাসঃ

download 89
maverickbird . com

প্রায় চার শতাব্দী আগে, ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির এজেন্ট জোব চার্নক হুগলি নদীর তীরে সুতানুটি, গোবিন্দপুর এবং কালিকাতা_ তিনটি জলাবদ্ধ গ্রামে নিয়ন্ত্রণ স্থাপন করেছিলেন এবং এগুলিকে একত্রিত করে একটি শহরের জন্ম হয়েছিল।(তথ্যটি বিতর্কিত)। অতীতে এটি ছিল একটি পাট, আফিম এবং মসলিনের জন্য একটি সমৃদ্ধ বন্দর। এটি বিদেশী, এক্সপ্লোরার, ব্যবসায়ী, বিদ্বান এবং লেখকদের দলকে আকর্ষিত করেছিল বারবার।


বিশ্বযুদ্ধের সময় যে দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে নির্মম হত্যাকাণ্ড এবং গণহত্যা চলেছিল, ভারত সেসময় ব্রিটিশদের অধীনে ছিল। ব্রিটেন, রাশিয়া ও ফ্রান্সের সাথে Triple Entente নামে একটি জোট গঠন করেছিল এবং জার্মানির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল। মার্কিন সেনা প্রাথমিক ভাবে যুদ্ধ থেকে বিরত ছিল, জার্মান বাহিনী তাদের নৌবাহিনীকে সাবমেরিন যুদ্ধে লিপ্ত করলে পরে বিশ্বব্যাপী রক্তপাতের খেলায় আমেরিকাও জড়িয়ে পড়েছিল।আমেরিকান সেনাদের একটি গ্যারিসন এই যুদ্ধের দিনগুলিতে কলকাতায় পোস্ট করা হয়েছিল, এবং তাদের জন্য Meeru Jauney গলির উভয় দিক ধরে মধ্য কলকাতায় একটি বাসস্থান তৈরি করা হয়েছিল। মার্কিন সেনারা অবশ্য এ জাতীয় আবাসে থাকা তাদের মানদণ্ডের জন্য উপযুক্ত মনে করেননি। তারা সম্মিলিত ভাবে এই ব্যারাক থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে ফোর্ট উইলিয়ামে স্থানান্তরিত হতে সম্মত হয়েছিল। সেনাবাহিনী প্রত্যাখ্যান করা এই বাড়ি গুলি Calcutta Improvement Trust এর হাতে হস্তান্তর করা হয়েছিল, যারা এই ফ্ল্যাটগুলি ভাড়া দিয়ে শহরের অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান জনতার হাতে ছেড়ে দেয় এবং বিপুল পরিমাণে ইজারা লাভ করতে থাকে। সেদিনের সেই বাড়িগুলিই হলো আজকের Bow Barracks।

আজকের Bow Barracks:

images 14
sthapatya . com

Bow Barracks সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ এবং চাঁদনী চৌক মেট্রো স্টেশন থেকে মাত্র দুই মিনিটের হাঁটার দূরত্বে। ফ্ল্যাটগুলি, যা মূলত অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান ভাড়াটিয়াদের ভাড়া হিসাবে দেওয়া হয়েছিল, তা উত্তরাধিকারে তারা গ্রহণ করেছে। বর্তমানে Bow Barracks -এ প্রায় ৪৫০ টি নেটিভ এবং biracial পরিবার রয়েছে এবং এর বেশিরভাগ অংশই অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান। কয়েকটি পরিবার গত পাঁচ দশক ধরে এখানে বসবাস করছে। জায়গাটি বহু সংস্কৃতির মিলনস্থলে পরিণত হয়েছে।

আজকের Bow Barracks:

bow barracks 05
blog. savaari . com

Bow Barracks এর দিনগুলো ক্রিসমাস এবং ইংরাজি নববর্ষ উদযাপন ব্যতীত বছরজুড়ে একটি বর্ণহীন সাদামাটাভাবে চলে। উতসবের দিনে বিদেশে কাজ করার জন্য পরিবারকে ছেড়ে যাওয়া নতুন প্রজন্মর উদযাপনে যোগ দিতে ফিরে আসে।Bow Barracks-এর সাথে নিবিড়ভাবে জড়িত একটি জিনিস হ’ল খাবার – ঘরে তৈরি কেক, কুকিজ এবং ওয়াইন। এই অঞ্চলের ভ্রমণকারী এই খাবারগুলি স্বাদ না নিয়ে বাড়ি ফেরেন না। জে এন বড়ুয়া (মন্টু)-এর মালিকানাধীন এখানে একটি বিখ্যাত বেকারি রয়েছে । এখানকার অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান এবং খ্রিস্টান পরিবারগুলি বছরের পর বছর ঐতিহ্য হিসাবে বাড়িতে ওয়াইন তৈরি করে আসছে। পাড়ার মহিলাদের ঘরে ঘরে তৈরি ওয়াইন-এর চাহিদা এখানে প্রবল।

Colonial Hangover নিয়ে এখনো ঘিরে রয়েছে কলকাতার বিখ্যাত এই অঞ্চলটি। Bow Barracks শুধু কয়েকটি পুরোনো লাল ইটের বসতি নয়,এটি অতীতের সাথে বর্তমানের মেলবন্ধনের সূত্র। Bow Barracks ইতিহাসকে সাক্ষী রেখে কালের যাত্রার পথ চলছে, চলবে।