নিজস্ব সংবাদদাতা: করোনা ভাইরাসের মারণ সংক্রমণ গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বিশ্ব জুড়ে চালিয়েছে তান্ডব। করোনা শুধু যে বহু মানুষের প্রাণ নিয়েছে তাই নয়, মানুষের দৈনন্দিন জীবনের স্বাভাবিক ছন্দকেও এলোমেলো করে দিয়েছে এই ভাইরাস। তবে করোনার এই সর্বগ্রাসী প্রকোপ পশ্চিমের দেশগুলোর তুলনায় এশিয়ায় যে অনেকটাই কম, বলাই বাহুল্য। কেন আমেরিকা, ইতালি, ব্রিটেনে ধ্বংসলীলা চালানো করোনা তেমন প্রভাব ফেলতে পারল না এশিয়াতে? কারণ সন্ধান করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

এশিয়া মহাদেশের দেশ গুলিতে করোনার অপেক্ষাকৃত কম সংক্রমণের কারণ হিসেবে বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি চিহ্নিত করেছেন এক প্রোটিনকে। জানা গেছে, পশ্চিমবঙ্গেরই এক বায়োকেমিক্যাল ইন্সটিটিউটের বিশেষজ্ঞরা এ ব্যাপারে গবেষণা চালিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, এক বিশেষ ধরণের প্রোটিনের অভাবই এশিয়ায় করোনার ভয়াবহতা হ্রাসের অন্যতম কারণ। ওই বিশেষ প্রকার প্রোটিন সাধারণত ইউরোপ ও আমেরিকার মানুষের শরীরেই বেশি দেখা যায়। এর উপস্থিতি তুলনামূলক কম হওয়ায় ভারত তথা এশিয়ায় যতটা ভাবা হয়েছিল ততটা প্রভাব ফেলতে পারে নি করোনা।

করোনা

পশ্চিমবঙ্গের কল্যাণীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ বায়োকেমিক জেনোমিক্সের একটি গবেষক দল এশিয়ায় করোনার অবস্থান সম্পর্কে এই জৈবিক কারণ আবিষ্কার করেছেন। জানা গেছে, এই বিশেষ প্রোটিনটির নাম নিউট্রোফিল এলাসটেস। করোনা ভাইরাসকে মানুষের শরীরের কোষে প্রবেশ করাতে এই প্রোটিনের জুড়ি নেই। শুধু তাই নয়, এটি ভাইরাসের বৃদ্ধি ও প্রসারের জন্যেও দায়ী বহুলাংশে।

বিজ্ঞানীরা বলেছেন, এই প্রোটিনকে নিয়ন্ত্রণে রাখে আলফা-১ অ্যান্টিট্রিপসিন (AAT) নামের আরেকটি প্রোটিন। নিউট্রোফিল এলাসটেসের পরিমাণ আমেরিকা ও ইউরোপীয় দেশগুলিতে বেশি এবং আলফা-১ অ্যান্টিট্রিপসিনের অভাব সেসব দেশে প্রকট। ‘ইনফেকশন, জেনেটিক্স অ্যান্ড এভলিউশন’ নামক জার্নালে কল্যাণীর ওই সংস্থার রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, পূর্ব এশিয়ায় ৫০% সংক্রমণ ছড়াতে সময় লেগেছে সাড়ে ৫ মাস। আর ইউরোপ ও আমেরিকার ক্ষেত্রে এই সময় যথাক্রমে ২.১৫ মাস এবং ২.৮৩ মাস।”