কি ছিল ভারতের সবচেয়ে পুরোনো ব্যাঙ্ক?
কত সালে শুরু হল? কবেই বা তা হারিয়ে গেল? নাকি আজও আছে ভারতের সেই সবথেকে পুরোনো ব্যাঙ্কটি? এইসব কথা জানতে হলে পড়তে হবে আজকের এই খবর।

ভারতের ব্যাঙ্কের ইতিহাস ( https://www.quora.com/Which-is-the-oldest-bank-in-India ) ঘাটলে দেখা যায়, ভারতে ব্যাঙ্ক শুরু হয়েছিল আজ থেকে প্রায় চার হাজার বছর আগে। ১৮ শতকের শেষ দশকে ১৭৭০ সালে পথ চলা শুরু করে ভারতের প্রথম ব্যাঙ্ক। ১৮৩২ সালে বন্ধ হওয়া এই ব্যাঙ্কের নাম ছিল “ব্যাঙ্ক অফ হিন্দুস্থান”। ১৭৮৬ সালে এরই দোসর হয়ে আসে “জেনারেল ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া”। ১৭৯১ সালের মধ্যেই এই ব্যাঙ্কটিও বন্ধ হয়ে যায়।
ভারতের তৃতীয় ব্যাঙ্ক হিসেবে যার পরিচয় পাওয়া যায় সেটি হল ১৮০৬ সালে শুরু হওয়া “ব্যাঙ্ক অফ ক্যালকাটা”। ১৮০৯ সালে এই ব্যাঙ্কটিই নাম বদলে হয় “ব্যাঙ্ক অফ বেঙ্গল”। ১৮৪০ সালে “ব্যাঙ্ক অফ বম্বে” ও ১৮৪৩ সালে “ব্যাঙ্ক অফ মাদ্রাস” প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৯২১ সালে বাংলা, বোম্বাই ও মাদ্রাসের এই তিনটি ব্যাঙ্ক সংযুক্ত হয়ে তৈরি হয় “ইম্পেরিয়াল ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া”। ভারতের স্বাধীনতার পর ১৯৫৫ সালে নাম পরিবর্তন করে হয় “স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া”।

ইম্পেরিয়াল ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার হাতেই সব ক্ষমতা ন্যস্ত ছিল যতদিন না “রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া” স্থাপিত হয়। ১৯৩৪ সালের রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া অ্যাক্ট গঠনের পরে ১৯৩৫ সালে স্থাপিত হয় “রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া”। এটি সারা ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে অবস্থিত ব্যাঙ্কের মধ্যে নিয়মের ও আইনের যথার্থতা পালকের কাজ করে। ভারতীয় মুদ্রা বা টাকার জোগান ও ভারতীয় ব্যাঙ্কিং পরিষেবার দায়ভার থাকে ভারতের কেন্দ্রীয় তথা মুখ্য ব্যাঙ্ক “রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া”র উপর।
“স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া” হওয়ার পর এর অধিনস্ত আটটি সহায়ক ব্যাঙ্ক সংযুক্ত হয় ১৯৬০ সালে। ভারতের অর্থনীতির অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে ভারতীয় সরকার ১৯৬৯ সালে ১৪ টি বে-সরকারি ব্যাঙ্কের রাষ্ট্রীয়করণ করেন যার মধ্যে সবথেকে বড়ো ব্যাঙ্ক হল “ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া”। ১৯৮০ সালে আরও ৬ টি বে-সরকারি ব্যাঙ্ককে এর সাথে রাষ্ট্রীয়করণ করা হয়। পরবর্তীকালে এদের বিশাল নেটওয়ার্কের কারণে ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রকে এরাই নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া, রিজিওনাল রুরাল ব্যাঙ্ক, ফরেন ব্যাঙ্ক, ও অন্যান্য ভারতীয় প্রাইভেট ব্যাঙ্ক মিলে বর্তমানে ব্যাঙ্কিং পরিষেবা চালিত হচ্ছে।
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া অ্যাক্ট,১৯৩৪ অনুযায়ী সিডিইউল্ড ব্যাঙ্কগুলি হল –
০ন্যাশানালাইসড ব্যাঙ্ক
০স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস
০রিজিওনাল রুরাল ব্যাঙ্ক
০ফরেন ব্যাঙ্ক
০ইন্ডিয়ান প্রাইভেট ব্যাঙ্ক
নন-সিডিইউল্ড ব্যাঙ্কগুলি হল –
সিডিইউল্ড ব্যাঙ্কগুলি ছাড়া বাকি ব্যাঙ্ক (যেমন – সমবায় ব্যাঙ্ক) হল নন-সিডিইউল্ড ব্যাঙ্ক। ব্যাঙ্কিং রেগুলেশন অ্যাক্ট,১৯৪৯ অনুসারে সিডিইউল্ড ও নন-সিডিইউল্ড সব ব্যাঙ্কই কমার্শিয়াল ব্যাঙ্ক হিসেবে গণ্য হয় এবং এই অ্যাক্টের আওতাভুক্ত।
বর্তমানের ডিজিটালাইজেশনের যুগে ব্যাঙ্কিং পরিষেবা অনেক বেশি আধুনিক হয়ে উঠেছে। এ.টি.এম থেকে ইন্টারনেট ব্যাঙ্কিং ২১ শতাব্দীর প্রযুক্তি এই আধুনিকাতায় অন্য মাত্রা যোগ করেছে। ভারতীয় ব্যাঙ্কিং পরিষেবা ছোট ছোট ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে এখন অনেক বৃহৎ আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। এর দ্বারাই ভারতীয় অর্থনীতি বেড়ে উঠেছে ও উন্নতির পথিকৃতও বটে।
অজানা আরও তথ্য সমৃদ্ধ খবরের জন্য পড়তে থাকুন বাংলা খবর। দেশ থেকে বিশ্ব সব খবর এখন বাংলা খবরের মারফৎ হাতের সামনেই।