নিজস্ব সংবাদদাতা: গতকাল, সাধারণতন্ত্র দিবসের দিন কৃষকদের ট্র্যাক্টর মিছিলকে কেন্দ্র করে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি হল দেশের রাজধানীর। কাঁদানে গ্যাস, লাঠিচার্জ, শূন্যে গুলিবর্ষণ- বাদ ছিল না কিছুই। এভাবেই একদিকে যখন দিল্লীর বুকে কৃষকদের ট্র্যাক্টর র্যালিকে ঘিরে সঙ্ঘর্ষের জেরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত, অন্যদিকে তখন সম্পূর্ণ আলাদা ছবি দেখা গেল চিল্লা সীমান্তে। সেখানে পুলিশকে গোলাপ দিলেন কৃষকরা। খাবার ভাগ করেও খেলেন তাঁরা।
গতকাল চিল্লা সীমান্তের ছবিটা সবার থেকে আলাদা ছিল। সেখানে পুলিশের তরফে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় তারা আন্দোলন স্থলে আসার জন্য ভারত কিষাণ ইউনিয়নের সদস্যদের আটকাবে না। তারপরেই নয়ডার অ্যাডিশনাল ডেপুটি কমিশনার অফ পুলিশ রণবিজয় সিংকে গোলাপ উপহার দেন ভারত কিষাণ ইউনিয়নের উত্তরপ্রদেশ শাখার সভাপতি যোগেশ প্রতাপ সিং। এরপর একসঙ্গে বসে খাবারও খান তাঁরা।
উল্লেখ্য, গত দু’মাস ধরেই চিল্লা সীমান্তে আসার জন্য কৃষকদের আটকাচ্ছিল রাজ্য পুলিশ। মীরাট ও আগ্রাতে ট্র্যাক্টর আটকে দেওয়া হয়। তার ফলেই ২৬ জানুয়ারির মিছিলে উত্তরপ্রদেশ থেকে কৃষকদের যোগদান অনেকটাই কম ছিল। কিন্তু এদিন রণবিজয় সিংয়ের মৌখিক প্রতিশ্রুতির পরে এক সুন্দর দৃশ্য দেখা গেল সেখানে।
তবে মিছিলে ভয়ানক সঙ্ঘর্ষের জেরে রাজধানীর রাজপথ রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল। পরিস্থিতি সামলাতে হিমশিম খেতে হয় প্রশাসনকে। একদিকে যেমন পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে, কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছে, অন্যদিকে তেমনই পুলিশের দিকে ট্র্যাক্টর নিয়ে তেড়ে যেতে দেখা গিয়েছে কৃষকদের। আহত হয়েছেন বেশ কিছু পুলিশ কর্মীও। লালকেল্লায় পৌঁছে সংগঠনের পতাকা তুলতে দেখা গিয়েছে কৃষকদের। এই ঘটনা নিয়ে আবার কৃষকদের সমালোচনা করতে দেখা গিয়েছে অনেককে। তবে কৃষক সংগঠন বলেছে, সমাজ বিরোধীরা ঢুকে পড়াতেই এই সমস্যা হয়েছে।
কৃষক সংগঠন সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার তরফে একটি বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, “প্রজাতন্ত্র দিবসের মিছিলে যোগ দেওয়ার জন্য আন্দোলনকারী কৃষকদের অনেক ধন্যবাদ জানাই। সেইসঙ্গে আজকের মিছিলে যে অবাঞ্ছিত ও নিন্দনীয় ঘটনা ঘটেছে তার নিন্দাও করছি আমরা। সেইসঙ্গে এই ঘটনার সঙ্গে যারা যুক্ত ছিল তাদের সঙ্গে নিজেদের সম্পর্ক ছিন্ন করছি আমরা।” তবে এদিনের রক্তক্ষয়ী সঙ্ঘর্ষের জন্য কেন্দ্রের অসংবেদনশীল আচরণকেই দোষারোপ করেছে রাজনৈতিক মহল।