চাকরি পাওয়ার 5 টি উপায়ঃঃ
চাকরির বাজারে নিজেকে অপরিহার্য করে তোলার মধ্যেই রয়েছে আসল সাফল্য। দিন যত বদলাবে, সময় যত এগোবে, ততই বাড়বে প্রতিযোগিতা। আর চূড়ান্ত প্রতিযোগিতার এই ইঁদুর দৌড়ে সামিল হয়ে চাকরি না পাওয়ার পর, নিজের ভাগ্যকে দোষারোপ করে থাকেন অনেকেই। একের পর এক চাকরি পাওয়ার চেষ্টার পরেও ব্যর্থতা আপনাকে অবসাদগ্রস্ত করে তুলছে কি? বিভিন্ন রকম চাকরির আবেদন করার পরেও চাকরি পাওয়ার আশা কি আপনার অধরাই থেকে গেল? চাকরির ইন্টারভিউ এর ফলস্বরূপ প্রত্যাখ্যান ই কি আপনার একমাত্র সঙ্গী হয়ে উঠেছে?? চাকরি না পাওয়ায় যে আর্থিক এবং সামাজিক অনিশ্চয়তা আপনাকে শঙ্কিত করে তুলছে, তা থেকে মুক্তি পেতে হলে, গ্রহ রত্ন ধারণ করে ভাগ্য বদলানোর দুরাশার চেয়ে বরং, সময় এসেছে নিজেকে পরিবর্তন করার। স্থিতধী হয়ে একটু আত্মবিশ্লেষণ করলেই আপনি বুঝতে পারবেন, চাকরি পাওয়া না পাওয়ার সাথে ভাগ্যের কোনো সম্পর্কই নেই। কোনো একটি বিশেষ চাকরি পাওয়ার জন্য যেসকল গুণাবলী অপরিহার্য,সেই সকল বৈশিষ্ট্য এবং আপনার কর্মদক্ষতার মধ্যে অনেকখানি ফাঁক থেকেই যাচ্ছে। মনে রাখবেন, বর্তমান বাজারে চাকরি পাওয়া কঠিন হলেও কাজের পরিসর এবং পরিধির বৈচিত্র আগের তুলনায় বহুগুণ বেড়েছে। সুতরাং, বিশেষ বিশেষ চাকরির জন্য প্রয়োজনীয় গুণাবলী আয়ত্ত করতে পারলেই, যোগ্যতম প্রার্থী হওয়ার সুযোগ আপনার ক্ষেত্রে অনেকটাই বেড়ে যাবে। আপনার কর্মদক্ষতা বা কর্মকুশলতা, ব্যক্তিত্ব, জ্ঞান, সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা, পরিশ্রম করার মানসিকতা, জনসংযোগ এবং ভাষাগত দক্ষতা চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে যে উল্লেখ্য ভূমিকা পালন করে থাকে, এ কথা বলাই বাহুল্য। তাই দিগভ্রান্ত হয়ে বিবিধ চাকরির আবেদন করার চেয়ে নিজের যোগ্যতার গুণগতমান বাড়িয়ে নেওয়া প্রকৃত বুদ্ধিমানের কাজ। আর, যে কোন চাকরির ক্ষেত্রে নিজেকে যোগ্যতম প্রার্থী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে গেলেই এই পাঁচটি বিষয় আপনাকে মাথায় রাখতেই হবে। আর বলাই বাহুল্য, আপনাকে সাফল্যের পথে কয়েক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে চূড়ান্ত প্রয়োজনীয় এই বিষয়গুলি।
Image courtesy: totaljob
বায়োডেটা
▪️চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে চূড়ান্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আপনার বায়োডাটা। আপনার সম্পর্কে প্রাথমিক ভাবমূর্তি তৈরি করে আপনার বায়োডাটা। এটি সঠিক না হলে প্রাথমিক বাছাই পর্ব থেকেই আপনি ছিটকে যেতে পারেন। এর ভাষা হবে সাবলীল এবং ঝরঝরে। আপনার বায়োডাটায় সঠিক, সংক্ষিপ্ত এবং প্রাসঙ্গিক তথ্য দিন। মিথ্যা তথ্য দিয়ে চাকরিদাতাকে বিভ্রান্ত করলে আখেরে লাভের চেয়ে আপনার ক্ষতির সম্ভাবনাই বেশি। বায়ো ডাটা সচিত্র হওয়া বাধ্যতামূলক। বায়োডাটার প্রথম অংশে আপনার নাম, বয়স, যোগাযোগ নম্বর, ঠিকানা এমনভাবে লিখুন যা খুব সহজেই চোখে পড়ে। এমন কোন ফন্ট ব্যবহার করবেন না, যা পড়তে গেলে অসুবিধা হয়। বায়োডাটার শেষ অংশে রেফারেন্স হিসেবে দায়িত্বশীল ব্যক্তির যোগাযোগ নম্বর দিয়ে রাখুন, যা চাকরিদাতার ভরসা অনেক বাড়িয়ে তুলবে
ভাষার দক্ষতা
▪️চাকরির ক্ষেত্রে লিখিত এবং মৌখিক ভাষাগত দক্ষতা আপনাকে অন্যান্য চাকরিপ্রার্থীর চেয়ে বহুগুণ এগিয়ে রাখবে। অন্তত দুটি ভাষায় অত্যন্ত সাবলীল ভাবে জনসংযোগের ক্ষমতা চাকরি পাওয়ার বিষয়ে আপনাকে চূড়ান্ত সহায়তা প্রদান করবে।
image courtesy: IE conferences
তথ্যপ্রযুক্তি
▪️বিশ্বায়নের অনুষঙ্গে এই যান্ত্রিক সভ্যতার অতি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি হয়ে উঠেছে তথ্যপ্রযুক্তি। কম্পিউটার এবং বিভিন্ন গণমাধ্যম এর সঠিক ব্যবহার জানলে আপনি অচিরেই চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে অত্যন্ত যোগ্য প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হতে পারেন। বলাই বাহুল্, তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর কুশলতা আপনার চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক উজ্জ্বল করে তোলে।
image courtesy: People matters
সাধারন জ্ঞান
▪️আপনার চারপাশে ঘটে চলা ঘটনাপ্রবাহের দিকে নিরন্তর নজর রাখুন। রাজনীতি- অর্থনীতি -পরিবেশ ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সম্পর্কে খবর সংগ্রহে রাখুন। সাধারন জ্ঞান সম্পর্কে দক্ষতা চাকরির ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।
আত্মবিশ্বাস
▪️যথার্থ আত্মবিশ্বাস এবং দৃঢ়নিশ্চয়তা চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে আপনাকে সাফল্যের শিখরে পৌঁছে দিতে পারে। চাকরি দাতা সংস্থা কখনোই ভীরু, দুর্বল এবং এবং দিশাহীন চরিত্রের কর্মীর সন্ধান করে না। সংকটের মোকাবিলা করার সহজাত ক্ষমতা বা সমস্যা সমাধানের স্বতঃস্ফূর্ততা, কিংবা কাজের ক্ষেত্রে চূড়ান্ত আত্মবিশ্বাস প্রকৃতার্থেই আপনাকে যোগ্যতম প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত করবে।
image courtesy : thejakart.com
আর তাই চাকরি পাওয়ার লক্ষ্যমাত্রায় এই বিষয়গুলোকে মাথায় রাখতে পারলেই আপনি অন্যান্য চাকরিপ্রার্থীদের চেয়ে অনেকটাই এগিয়ে থাকবেন, এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না।