নিজস্ব সংবাদদাতা- কৃষকদের দাবির মুখে পড়ে পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে দিল্লি পুলিশ। তারা আগামীকাল অর্থাৎ প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন দিল্লির রাজপথে ট্রাক্টর মিছিলের ক্ষেত্রে ছাড়পত্র দিয়েছে। শর্ত হিসেবে দিল্লি পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ট্রাক্টর নিয়ে কৃষকরা মিছিল করলেও প্রজাতন্ত্র দিবসের সরকারি প্যারেডে কোনোরকম বিঘ্ন সৃষ্টি যাতে না হয় সেই দিকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে আন্দোলনরত কৃষক সংগঠনগুলিকে।

ট্রাক্টর মিছিলে ছাড়পত্র দিলেও বিতর্কিত তিন কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে আন্দোলনরত কৃষক সংগঠনগুলির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয় বিজেপি উত্তরপ্রদেশ ও হরিয়ানা প্রশাসনকে ব্যবহার করে ট্রাক্টর মিছিলে বাধা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। কৃষক সংগঠনগুলি সুনির্দিষ্টভাবে উত্তরপ্রদেশের দিল্লি সীমান্তবর্তী জেলা গাজীপুর প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে তারা পেট্রল পাম্পগুলিকে নোটিশ পাঠিয়ে ট্রাক্টরের মালিকদের ডিজেল বিক্রি করার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে কৃষক সংগঠনগুলির পক্ষ থেকে জানানো হয় তারা যাতে ২৬ জানুয়ারির ট্রাক্টর মিছিলে যোগ দিতে না পারে তাই এরকম নির্দেশ জারি করেছে যোগী আদিত্যনাথ প্রশাসন। যদিও বিতর্কের মুখে পড়ে আজ সকালে ডিজেল বিক্রি সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে গাজীপুর প্রশাসনের তরফ থেকে।

দিল্লি পুলিশের তরফ থেকে দাবি করা হয় পাকিস্তান পরিকল্পিতভাবে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে আন্দোলনরত কৃষকদের উস্কানি দেওয়ার চেষ্টা করছে। কৃষকদের ট্রাক্টর মিছিল থেকে অশান্তি সৃষ্টি করাই নাকি পাকিস্তানের ষড়যন্ত্রকারীদের উদ্দেশ্য। রাজধানীর পুলিশ প্রশাসনের দাবি কৃষকদের উস্কানি দিতে পাক গোয়েন্দা বাহিনী আইএসআই সোশ্যাল মিডিয়ায় ৩০৮ টি ফেক অ্যাকাউন্ট তৈরি করেছে।

এদিকে পাঞ্জাবের জলন্ধরের কংগ্রেস সাংসদ রবনীত সিং বিট্টু দাবি করেন গতকাল দিল্লির সিঙ্গু সীমান্তে হাজির হয়ে তিনি আন্দোলনরত কৃষকদের সঙ্গে ধর্নায় সামিল হলে একদল দুষ্কৃতী তার ওপর আক্রমণ করে। দুষ্কৃতীরা তাকে প্রাণে মেরে ফেলতে চেয়েছিল বলেও এই কংগ্রেসের সংসদের দাবি। অভিযোগ প্রথমে বিট্টুর মাথার পাগড়ী খুলে বেধড়ক মারধর করতে শুরু করে আক্রমণকারীরা।

এর আগে সিঙ্গু সীমান্তেই মুখোশধারী এক আততায়ী কৃষকদের হাতে ধরা পড়ে। পরে সে স্বীকার করে দিল্লি পুলিশের তরফ থেকে তাকে পাঠানো হয়েছে আন্দোলনে সাবোতাজ করার উদ্দেশ্যে। এরপরেই আন্দোলনরত কৃষকরা অনেক বেশি সতর্ক হয়ে গিয়েছে। প্রজাতন্ত্র দিবসের ট্রাক্টর মিছিলকে কেন্দ্র করে যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সে বিষয়ে সতর্ক আছে কৃষক সংগঠনগুলি।