স্বাধীন ভারতের প্রথম ভোটার তিনি। ১৯৫২ সালের নির্বাচনে লাইনে দাঁড়িয়ে প্রথম ভোটটি দিয়েছিলেন পছন্দের দলকে। সঙ্গে ছিল বুক ভরা আশা। নতুন ভারতে স্বাধীনভাবে জীবন কাটানোর আশা। তিনি শ্যাম সরণ নেগি। স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে নিজের গণতান্ত্রিক অধিকার ফলাতে তিনি কখনো পিছু হটেন নি।

ভোট
Yourstory

হিমাচল প্রদেশের বাসিন্দা ভারতের প্রথম ভোটার শ্যাম সরণ নেগি ৫২-র যৌবন পেরিয়ে এখন এসে দাঁড়িয়েছেন জীবনের শেষ বেলায়। বার্দ্ধক্য প্রতি মুহূর্তে জানান দিচ্ছে বয়সের ভার- ১০৩! তবু যৌবনের সেই অধিকার বুঝে নেওয়ার অভ্যেসটা আজও ছাড়তে পারেন নি শ্যাম সরণ নেগি। ১০৩ বছরের প্রৌঢ়ত্বের বোঝা মাথায় নিয়েও তাই ভোট দিতে যান তিনি। সম্প্রতি হিমাচল প্রদেশের কিন্নায়ুর অঞ্চলের পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোটার হিসেবে দেখা গেছে এই শ্যাম সরণ নেগিকে। বয়সকে পাত্তা না দিয়ে ভারতের প্রথম ভোটারের অদম্য ‘স্পিরিট’ দেখে মুগ্ধ দেশবাসী।

গত রবিবার, হিমাচল প্রদেশের কাপলার পোলিং বুথে গিয়ে শ্যাম সরণ নেগি যখন ভোট দিচ্ছিলেন, তখন জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে এই প্রৌঢ় ভোটারকে অভিবাদন জানানো হয়। সূত্রের খবর, তাঁর চলার পথে লাল কার্পেট বিছিয়ে দিয়েছিলেন প্রশাসনের আধিকারিকরা। এখানেই শেষ নয়, এলাকার ডেপুটি কমিশনার হেমরাজ বৈর বৃদ্ধ শ্যাম সরণ নেগিকে একটি কন্নৌরি ‘টুপি’ এবং শালও উপহার দিয়েছেন। তরুণ প্রজন্মের ভোটাররা এই বৃদ্ধকে দেখে উদ্বুদ্ধ হবেন বলেও আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।

14 06 03 images
Wikibio

দেশের জনগণের উদ্দেশ্যে কী বার্তা দিয়েছেন ভারতের প্রথম ভোটার শ্যাম সরণ নেগি? তাঁর মতে, দেশের সরকারে উপযুক্ত ব্যক্তিদের নির্বাচন করার জন্য প্রত্যেক নাগরিকের ভোট দেওয়া আবশ্যক। পঞ্চায়েত হোক, বিধানসভা হোক, বা লোকসভা, সারাজীবনে কখনোই একটাও ভোট দেওয়ার সুযোগ বাদ দেন নেগি।

কয়েক বছর আগে বলিউডের ‘সানাম রে’ ছবিতেও একটি ছোট্ট দৃশ্যে অতিথি হিসেবে দেখা গিয়েছিল শ্যাম সরণ নেগিকে। নিজের রাজ্যের বাসিন্দাদের কাছে পঞ্চায়েতে সৎ, যোগ্য ব্যক্তিকে নির্বাচন করার অনুরোধ করেছেন তিনি। অফিসিয়াল রেকর্ড অনুযায়ী, ১৯১৭ সালের ১ জুলাই জন্মগ্রহণ করেছিলেন শ্যাম সরণ নেগি। পেশায় তিনি ছিলেন একজন স্কুল শিক্ষক। এদিন সংবাদমাধ্যমের কাছে ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের সেই ভোটের স্মৃতিচারণও করেছেন ১০৩ বছরের বৃদ্ধ। সেবার অক্টোবরের শীতে ভোট হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা এগিয়ে ফেব্রুয়ারিতে নিয়ে আসা হয় বলে জানিয়েছেন তিনি।