নিজস্ব সংবাদদাতা: গত শনিবার স্পেশাল চার্টার্ড ফ্লাইটে দিল্লী উড়ে গিয়ে অমিত শাহের হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন তিনি। তারপর থেকেই রাজ্যের প্রাক্তন বনমন্ত্রী তথা প্রাক্তন তৃণমূল নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছেন তৃণমূলের সাধারণ কর্মী-সমর্থকরাই। সেই ক্ষোভেরই বহিঃপ্রকাশ হল আজ, মঙ্গলবার। বারুইপুরে বিজেপির যোগদান মেলায় যাওয়ার পথে শুভেন্দু অধিকারী এবং রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে কালো পতাকা দেখায় কর্মীরা। তবে তা নিয়ে কোনও গোলমাল বা সমস্যা হয়নি।

রাজীব

এদিন কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা নিয়ে নির্বিঘ্নেই সভাস্থলে পৌঁছন রাজ্যের দুই প্রাক্তন মন্ত্রী। উল্লেখ্য, আজ
বিজেপির এই দুই নেতার কনভয় যাওয়ার সময় তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে শান্তিপূর্ণ ভাবেই কালো পতাকা দেখান। বারুইপুরের সেই সভায় গিয়েছিলেন মুকুল রায়ও। পরে রাজীব বলেন, ‘‘হতাশা থেকে তৃণমূলের লোকজন এখন আমাদের কালো পতাকা দেখাচ্ছে। তৃমমূল শেষ হয়ে গিয়েছে। তৃণমূল দেউলিয়া হয়ে গিয়েছে। কালো পতাকা দেখানো তারই পরিচয়।’’

এরপরই তার পাল্টা দেন তৃণমূলের প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায়। রাজীবের বক্তব্যের জবাবে সৌগত বাবু বলেন, ‘‘এতদিন সরকারে থেকে যাঁরা দুধ-মধু খেয়ে দল ছেড়েছেন, তাঁদের প্রতি দলের নীচুতলার কর্মীদের ক্ষোভ থাকাটাই স্বাভাবিক। আর তারা তো কোনও গোলমাল করেনি। শান্তিপূর্ণ ভাবে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে কালো পতাকা দেখিয়েছে।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘এতদিন এই কর্মীদের কাঁধে ভর করেই এগিয়েছেন। আজ তাঁরা ক্ষোভপ্রকাশ করবে, এটা তো অস্বাভাবিক নয়। আপনি ওঁদের বিশ্বাস ভেঙেছেন। বিশ্বাসঘাতকদের সঙ্গে এমনই হয়।’’

বারুইপুরের ওই সভার আয়োজন করা হয়েছিল বিজেপি-তে যোগদানের জন্য। যে সমস্ত সভাকে বিজেপি ‘যোগদান মেলা’ বলে অভিহিত করে থাকে। অর্থাৎ, যেখানে মেলা লোকজন বিজেপি-তে যোগ দেন। মঙ্গলবারের সভায় তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দেন ডায়মন্ড হারবারের বিধায়ক দীপক হালদার-সহ অনেকে। কিন্তু যোগদানের পর্ব সরিয়ে রাখলে বাকিটা পুরোই রাজনৈতিক আক্রমণ সংক্রান্ত। বারুইপুরের সভা থেকে রাজ্য সরকার এবং প্রশাসনকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন রাজীব-শুভেন্দু।

রাজীব এদিন বলেন, ‘‘বিজেপি ক্ষমতায় এলে বেকারদের জন্য স্থায়ী চাকরির ব্যবস্থা হবে। এখন চুক্তিভিত্তিক চাকরি দিয়ে বেকারদের হতাশা মোছার চেষ্টা করছে রাজ্য সরকার।’’ তাঁর কথায়, ‘‘কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারকে যৌথ ভাবে কাজ করতে হবে। আপনাদের অনেক ধমক-চমক দেবে। ভয় দেখাবে। আপানার কোনও প্ররোচনায় পা দেবেন না।’’ পাশাপাশিই রাজীব ডুমুরজলার সভার মতোই এদিনও স্লোগান তোলেন, ‘‘চলো পাল্টাই!’’ তার পর জনতার সঙ্গে স্লোগান দেন, ‘‘চুপচাপ, পদ্মে ছাপ!’’

রাজীব যখন নীতিগত দিক দিয়ে তাঁর প্রাক্তন সহকর্মীদের রাজনৈতিক আক্রমণ করেছেন, তখন শুভেন্দু কঠোরতর আক্রমণ করেছেন মমতার সাংসদ ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তাঁর অভিযোগ, ‘‘তৃণমূল তো একটা রাজনৈতিক দল নয়, প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি। দু’জন মিলে দল চালান। তাঁদের একজন হলেন তথাকথিত ভাইপো। এই দল চালাতে বিহার থেকে লোক আনা হয়েছে।’’