নিজস্ব সংবাদদাতা: গতবছর করোনা সংক্রমণ শুরুর সময় থেকেই বন্ধ বিশ্ববিদ্যালয়। অনলাইনেই ক্লাস চলছে। কিন্তু এই পরিস্থিতিতেও মানুষের পাশে এসে দাঁড়াতে চায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। কারণ বিদ্যা অর্জন করা শুধুমাত্র অর্থ রোজগারের উপায় কখনোই হতে পারে না। বরং শিক্ষা মানবিকতার দাবিও রাখে। তাই করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ গোটা দেশের পাশাপাশি বাংলাতেও আছড়ে পড়ার পর থেকেই করোনা যুদ্ধে মাঠে নেমে পড়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়।

ইতিমধ্যেই একটি অ্যাপ তৈরি করে সকলকে চমকে দিয়েছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়েরই দুই পড়ুয়া। ইউনিভার্সিটির ল্যাবের সিলিন্ডারগুলি অক্সিজেন ভরে মানুষের সাহায্যার্থে পাঠানোর কাজ আগেই শুরু করেছিল ছাত্র সংগঠন এসএফআইয়ের সদস্যরা। আর এবার করোনা মোকাবিলায় ক্যাম্পাসের মধ্যেই সেফ হোম তৈরির দাবি তুলল পড়ুয়ারা।

২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চে করোনা প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকে মানুষের পাশে দাঁড়াতে যাদবপুরের পড়ুয়াদের উদ্যেগেই তৈরি হয় ‘যাদবপুর কমিউন’‌। তখন রাজনৈতিক দূরত্বকে দূরে সরিয়ে রেখে সেখানে অংশ নেয় কমবেশি প্রায় সমস্ত ছাত্র সংগঠনই। এই কমিউনের পক্ষ থেকেই এবার ক্যাম্পাসের ভিতরে সেফ হোমের দাবি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাসকে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে খবর মিলেছে। এমনকী পড়ুয়াদের এই দাবিকে সাধুবাদও জানিয়েছেন অনেক শিক্ষাবিদরা।

করোনা পরিস্থিতির জেরে প্রায় ১ বছরের বেশি সময় ধরে পঠনপাঠন বন্ধ রয়েছে রাজ্যের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রশাসনিক বিভাগ খোলা থাকলেও অন্যান্য কাজকর্ম বন্ধ রয়েছে যাদবপুরেও। তাই পড়ুয়াদের দাবি, কাজে লাগছে না যেসব ক্লাস রুম, অব্যবহৃত ঘর, সেগুলিকে সেফ হোমের জন্য ব্যবহার করুক বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। প্রয়োজনে পরামর্শ করা হোক রাজ্য সরকার ও স্বাস্থ্যভবনের সঙ্গে। একইসঙ্গে অভিজ্ঞ ডাক্তারদের নিয়ে এসে সেফ হোম পরিচালনা করার দাবিও তোলা হয়েছে।

যাদবপুরের অসংখ্য প্রাক্তনী, যাদবপুর কমিউনের সদস্য-সহ একাধিক অভিজ্ঞ চিকিৎসক, স্বাস্থ্য কর্মীদের মতামত নিয়ে সেফ হোমের জন্য একটি খসড়া পরিকল্পনাও তৈরি করা হয়েছে। এই কাজে বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামী ৫ মে’‌র মধ্যে যাবতীয় সুবিধা সহ সেফ হোম, আইসোলেশন ওয়ার্ড তৈরির উপরেই বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে। সেফ হোম তৈরি হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত কর্মী, অধ্যাপক, গবেষক-সহ সমস্ত সাধারণ পড়ুয়াও যাতে এর সুবিধা ভোগ করতে পারে, তাও নিশ্চিত করতে উপাচার্যের কাছে দাবি জানিয়েছে পড়ুয়ারা। এখন দেখার পড়ুয়াদের এই উদ্যোগকে সফল করতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এগিয়ে আসে কিনা।