নিজস্ব সংবাদদাতা: গত শনিবারই রাজ্যে প্রথম দফার ভোট সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে। পরশুদিন রাজ্যে দ্বিতীয় দফার নির্বাচন। এই ভোটের উত্তাপে যখন গোটা বাংলা নতুন করে ফুটতে শুরু করেছে, ঠিক তখনই ২০০৭ সালে নন্দীগ্রামে গুলি চালানোর প্রসঙ্গ নিয়ে নতুন বিবৃতি জারি করলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। নন্দীগ্রামের জমি আন্দোলনকে ‘কুটিল চিত্রনাট্য’ অখ্যা দিলেন তিনি। সঙ্গে নানা ইস্যুতে একযোগে সমালোচনা করলেন তৃণমূল ও বিজেপি- উভয়েরই।
গত রবিবার নন্দীগ্রামের রেয়াপাড়ায় এক সভায় ১৪ মার্চের গুলিচালনার জন্য অধিকারী পরিবারকে কাঠগড়ায় তোলেন মমতা। বলেন, ‘বাপ-ব্যাটার অনুমতি ছাড়া পুলিশ ঢুকতে পারত না।’ সেইসময় নন্দীগ্রামে চটিপরা পুলিশও অধিকারীদেরই পাঠানো বলে ইঙ্গিত করেন তিনি। মমতার এই বক্তব্যের পর থেকেই তোলপাড় রাজ্য-রাজনীতি। বাম সরকারের যে সেইসময় কোনো ভূমিকাই ছিল না গুলি চালনার ক্ষেত্রে, মমতা যেন সেটাই বলে দিলেন। একইসঙ্গে সিবিআইয়ের মতো সিপিএম-কে ক্লিনচিট দিয়ে ফেললেন তিনিও। এরপরই সোমবার বিকেলে সিপিআইএম রাজ্য কমিটির তরফে জারি এক বিবৃতিতে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য কারও নাম না করলেও স্পষ্ট করে দিয়েছেন, ১৪ বছর পরেও নিজের অবস্থানে অনড় রয়েছেন তিনি।
বুদ্ধবাবু লিখেছেন, “নন্দীগ্রাম ও সিঙ্গুরে এখন শ্মশানের নীরবতা। সেই সময়ের কুটিল চিত্রনাট্যের চক্রান্তকারীরা আজ দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে পরস্পরের বিরুদ্ধে কাদা ছোঁড়াছুড়ি করছে। আর তাঁদের দোষে কর্মসংস্থানের সুযোগ হারিয়েছেন বাংলার যুব সমাজ।” একই সঙ্গে সংযুক্ত মোর্চাই রাজ্যের পরিস্থিতির পরিবর্তন করতে পারবে বলে দাবি করে তাদের প্রার্থীদের জয়ী করার আহ্বান জানিয়েছেন বুদ্ধবাবু। তবে বুদ্ধবাবুর এই চিঠি সিপিএমের ভোটবাক্সে ঠিক কতটা প্রভাব ফেলবে, তা এখনও পরিষ্কার নয়।
![নন্দীগ্রাম আন্দোলনের পর্দাফাঁস! ভোটবাক্সে কতটা প্রভাব ফেলবে বুদ্ধ বাবুর চিঠি? 1 IMG 20210330 WA0000](https://www.banglakhabor.in/wp-content/uploads/2021/03/IMG-20210330-WA0000-750x1024.jpg)
উল্লেখ্য, ২০০৭ সালের ১৪ মার্চ নন্দীগ্রামে গুলিচালনার পিছনে চক্রান্ত রয়েছে বলে তখনই জানিয়েছিলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। নন্দীগ্রামে মানুষের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছিলেন তিনি। তবে তৃণমূলের দাবি ছিল, বুদ্ধবাবুর নির্দেশেই নন্দীগ্রামে গুলি চালিয়েছে পুলিশ। সেই আন্দোলনের ওপর ভিত্তি করেই ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় তৃণমূল। অবসান ঘটে ৩৪ বছরের বাম শাসনের। তবে সেইসময় পুরোপুরি মিথ্যার রাজনীতি আর সাধারণ মানুষের লাশের ওপর দিয়ে হেঁটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন, তা এখন তাঁর বক্তব্যের মাধ্যমেই পরিষ্কার হয়ে গেল।