খাদ্যে কার্বোহাইড্রেট,প্রোটিন ও ফ্যাট জাতীয় মৌল ছাড়াও আর যে এলিমেন্ট গুলি আমাদের শরীরের প্রয়োজন তার মধ্যে অন্যতম হলো ভিটামিন। বিজ্ঞানি ক্যাসিমির ফাংক এগুলির নামকরণ করেন ভিটামিন। আমাদের দৈনন্দিন গৃহীত খাদ্য গুলির মধ্যে এই ভিটামিন গুলি স্বল্প পরিমাণে উপস্থিত থেকে আমাদের পুষ্টি বৃদ্ধি এবং রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
দেখে নেওয়া যাক আমাদের শরীরে এই ভিটামিন গুলির কি রূপ প্রয়োজনীয়তা।
ভিটামিন-এ

উৎস:সাধারণত গাজর, বাঁধাকপি, পেঁপে,পালং শাক ইত্যাদি শাকসবজি ভিটামিন এ -র প্রধান উৎস. এছাড়াও দুধ,মাখন, ডিমের কুসুমে স্বল্প পরিমাণে ভিটামিন এ পাওয়া যায়।
কাজ: ভিটামিন এ আমাদের দেহের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। ভিটামিন এ-র প্রধান কাজ হলো আমাদের চোখের সুস্থতা রক্ষা।এটি রেটিনার রড সেল উৎপন্ন করে রাতকানা রোগ থেকে আমাদের রক্ষা করে। ভিটামিন এ-এর অভাবে চোখ সংক্রান্ত নানা সমস্যা ছাড়াও দেহের গঠনগত নানা অসুবিধা আসতে পারে।
ভিটামিন -বি কমপ্লেক্স

ভিটামিন বি ওয়ান টু, থ্রি, ফোর, ফাইভ,সিক্স এবং ভিটামিন টুয়েলভ একত্রে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স তৈরি হয়।
উৎস: সবুজ,শাকসবজি,অঙ্কুরিত ছোলা, দুধ,মাখন ইত্যাদি হল ভিটামিন বি কমপ্লেক্স এর প্রধান উৎস।
কাজ: মানবদেহের বৃদ্ধিতে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স অন্যতম প্রধান ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও রক্তাল্পতা নিরাময়ে এই ভিটামিন আবশ্যক। এই ভিটামিনের অভাবে জিভে মুখে ঘা, স্নায়ুবিক দুর্বলতা, অ্যানিমিয়া এই জাতীয় রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটে।
ভিটামিন -সি

উৎস: পাতিলেবু, কাঁচালঙ্কা, আমলকি ইত্যাদি টক জাতীয় ফলে এবং মাতৃদুগ্ধে অত্যধিক পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে।
কাজ: ভিটামিন সি স্কার্ভি রোগ প্রতিরোধ করে। এছাড়াও রেড ব্লাড সেল গঠনে এবং ক্ষতস্থানে রক্ত তঞ্চনে ভিটামিন সি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ভিটামিন-ডি

উৎস: বাঁধাকপি, সবুজ শাকসবজি, ডিমের কুসুম, দুধ, মাখন ইত্যাদি হল ভিটামিন ডি এর প্রধান উৎস।এছাড়াও সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি দ্বারা মানবদেহে ভিটামিন উৎপন্ন হয়।
কাজ: ভিটামিন ডি মানবদেহে অস্থি গঠনে প্রধান ভূমিকা পালন করে। এই ভিটামিন ক্ষুদ্রান্তে ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাস শোষণের একমাত্র সহায়ক। ভিটামিন ডি এর অভাবে নানা অস্থিজনিত রোগ হয়। শিশুদের ক্ষেত্রে রিকেট এবং বয়স্কদের ক্ষেত্রে অস্টিওম্যালেসিয়া এর মধ্যে অন্যতম। এছাড়াও এই ভিটামিনের অভাবে মানুষের দাঁতের ক্ষয় ত্বরান্বিত হয়।
ভিটামিন- ই

উৎস: লেটুস শাক, মটরশুঁটি, দুধ, ডিম জাতীয় খাদ্য ভিটামিন ই এর প্রধান উৎস।
কাজ: ভিটামিন ই স্তন দুগ্ধ ক্ষরণে, ভ্রূণের বৃদ্ধি, বন্ধ্যাত্ব প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। ভিটামিন ই এর অভাবে বন্ধ্যাত্ব ঘটতে পারে।
ভিটামিন খুব অল্প মাত্রায় আমাদের দেহে প্রয়োজন কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় সামান্য অভাবেই নানা বিরূপ প্রভাব আমাদের স্বাস্থ্যের লক্ষ্য করা যেতে পারে। তাই প্রয়োজন অত্যধিক পরিমাণে ভিটামিন সমৃদ্ধ আহার গ্রহণ করা। প্রয়োজনে বিভিন্ন মাল্টিভিটামিন ট্যাবলেট ও গ্রহণ করা যেতে পারে।
আরও পড়ুনঃ
https://banglakhabor.in/wp-admin/post.php?post=5440&action=edit