নিজস্ব সংবাদদাতা- রাম মন্দির নির্মাণকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে হিন্দুত্বের যে ঢেউ তুলতে চেয়েছিল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও আরএসএস তা যে অনেকটাই সফল হতে চলেছে তা আজ সাংবাদিক সম্মেলন করে জানিয়ে দিল শ্রী রাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্ট। ট্রাস্টের কোষাধ্যক্ষ গোবিন্দদেব গিরি জানিয়েছেন এখনও পর্যন্ত ১,৫০০ কোটি টাকা রাম জন্মভূমি নির্মাণের লক্ষ্যে তাদের হাতে অনুদান হিসেবে জমা হয়েছে। এই অনুদানের পরিমাণ আগামী দিনে আরও অনেকটাই বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি জানান।

সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের পর বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও আরএসএসের কর্মীরা অনুদান সংগ্রহের লক্ষ্যে ভারতের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েন। মূল লক্ষ্য যত বেশি সম্ভব অনুদান সংগ্রহ করে এনে জমকালো রাম মন্দির নির্মাণ করা। এই বিষয়ে গোবিন্দ গিরি বলেন, “প্রায় ৪৯২ বছর পর ধর্মের জন্য দেশের মানুষ কোনো কিছু করার সুযোগ পেয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই মানুষের মধ্যে ব্যাপক উন্মাদনা আছে এই নিয়ে।”

বোঝাই যাচ্ছে রাম মন্দিরকে কেন্দ্র করে ধর্মীয় উন্মাদনা জাগিয়ে তোলার পাশাপাশি ভারতবর্ষের মুসলমান শাসনকে বারবার নিশানা করে চলেছেন হিন্দুত্ববাদী নেতারা। যদিও রাম জন্মভূমি নির্মাণের লক্ষ্যে অনুদান সংগ্রহকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু দুর্নীতির অভিযোগ সামনে এসেছে। দুর্নীতির অভিযোগ সবচেয়ে বেশি উঠেছে রামের নিজের জন্মস্থান নামে পরিচিত উত্তরপ্রদেশে।

উত্তরপ্রদেশের পিলভিত জেলায় কয়েকদিন আগেই জানা যায় রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের প্রতিনিধিরা অনুদান তুলতে যাওয়ার আগেই ভুয়ো রিসিট ছাপিয়ে একদল জালিয়াত অনুদান সংগ্রহ করে নিয়ে গিয়েছে। এই বিষয়ে অজ্ঞাত পরিচয় পাঁচজনের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করে শ্রী রাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র মন্দির নির্মাণ ট্রাস্ট।

সাধারণ মানুষের কাছ থেকে ন্যূনতম দশ টাকা করে গ্রহণ করা হচ্ছে রাম মন্দির নির্মাণের লক্ষ্যে। তবে অনেকেই লক্ষাধিক টাকা পর্যন্ত অনুদান হিসেবে জমা দিয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে। সমাজতত্ত্ববিদদের মতে এ দেশে যে মানুষ এখনও ধর্মের নামে মেতে ওঠে তা রাম মন্দির নির্মাণের লক্ষ্যে সংগৃহীত অনুদানের পরিমাণ দেখেই বোঝা যাচ্ছে। অথচ দেশের একটা বড় অংশের মানুষ করোনা সংক্রমনের ফলে হওয়া লকডাউনের পর কাজ হারিয়ে ঠিক করে দুবেলা খেতে পর্যন্ত পারছে না।