নিজস্ব সংবাদদাতা- জম্মু-কাশ্মীর আবার রাজ্যের মর্যাদা ফিরে পাবে বলে প্রতিশ্রুতি দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আজ লোকসভায় বিরোধী সাংসদদের কাশ্মীর সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “জম্মু কাশ্মীর থেকে যখন ৩৭০ ধারা তুলে নিয়ে তাকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করা হয়েছিল তখন কোথাও বলা হয়নি এটি আর রাজ্যের মর্যাদা ফিরে পাবে না। তাহলে এইসব অবান্তর প্রশ্ন তোলা হচ্ছে কেন? ঠিক সময় এলেই জম্বু কাশ্মীরকে আবার রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়া হবে।”
শাহী বচনের পর পরিষ্কার হয়ে গেল এই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের পূর্ণাঙ্গ রাজ্যের মর্যাদা ফিরে পাওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে বিজেপির শীর্ষস্তরের কয়েকজন নেতার ওপর নির্ভর করছে। অমিত শাহ জানিয়েছেন এর আগেও ভারতের বেশ কয়েকটি কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলকে পূর্ণাঙ্গ রাজ্যের মর্যাদা যেমন ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল তেমনি জম্মু-কাশ্মীরকেও পূর্ণাঙ্গ রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়া হবে। এর পাশাপাশি তিনি কংগ্রেসকে আক্রমণ করে বলেন, “যারা দীর্ঘদিন ধরে এই রাজ্যটির শাসন ক্ষমতা নিজেদের দখলে রেখে ছিল তারাই এখন কুমিরের কান্না কাঁদছে।”
লোকসভার কংগ্রেস দলনেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে প্রশ্ন তোলেন জম্মু-কাশ্মীরকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করা সত্বেও কেন সে রাজ্য থেকে বিতাড়িত কাশ্মীরি পণ্ডিতদের ফিরিয়ে নিয়ে আসা এখনও পর্যন্ত সম্ভব হল না। তিনি বলেন, “মাত্র আড়াইশো-তিনশো একর জমি ফিরিয়ে দেওয়া গেল না কাশ্মীরি পণ্ডিতদের। তাহলে কি বিজেপির নির্বাচনী ইশতেহারের প্রতিশ্রুতি কেবলমাত্র প্রতিশ্রুতি হয়ে থেকে যাবে? ভোট মিটেগেলেই কি তবে বিজেপির ইশতেহারে দেওয়া প্রতিশ্রুতির আর কোনো মূল্য থাকে না?
অধীর চৌধুরীর সমালোচনার জবাব দিতে গিয়ে তাকে তীব্র আক্রমণ করেন অমিত শাহ। বলেন, “এত দ্রুত ধৈর্য হারাচ্ছেন কেন, সবেতো ১৭ মাস হল জম্মু-কাশ্মীরের কর্তৃত্ব আমরা হাতে তুলে নিয়েছি। অপেক্ষা করুন, সমস্ত প্রতিশ্রুতি পালন করা হবে।” এর পাশাপাশি তিনি কংগ্রেসের অপর সংসদ মণীশ তিওয়ারিকে নিশানা করে বলেন, “আমরা জম্মু-কাশ্মীরের সেই রক্তাক্ত দিনগুলির কথা আর মনে করতে চাই না। আমাদের সরকার সেই রক্তের ইতিহাস আর কোনোদিন ফিরে আসতে দেবেনা জম্মু-কাশ্মীরে। আপনারা এতদিন চুপচাপ বসে সবকিছু দেখেছেন এবার দেখতে থাকুন আমরা কি কি কাজ করি।”
আজ লোকসভায় জম্মু কাশ্মীর রাজ্য পুনর্গঠন বিল (২০২১) ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠতায় পাশ হয়ে যায়। এই বিলকে কেন্দ্র করে বিরোধী শিবিরের মধ্যে ফাটল ধরেছে। মায়াবতীর বহু জন সমাজবাদী পার্টি কেন্দ্রীয় সরকারের আনা এই বিলটিতে সমর্থন করে। অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী জগনমোহন রেড্ডির ওয়াইএসআর কংগ্রেসও এই বিলটিতে সমর্থন জানিয়েছে।