নিজস্ব সংবাদদাতা: মাঝে আর মাত্র ১ দিন বাকি। তারপরই আগামী শনিবার, বাংলায় শুরু হবে ভোট উৎসব। ২৭ মার্চ রাজ্যের তিরিশটি আসনে নির্বাচন রয়েছে৷ তার মধ্যে আটটি আসন এমন রয়েছে, যেগুলির দিকে বাড়তি নজর রাখতেই হচ্ছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের৷ কারণ হয় সেখানে রয়েছেন তারকা প্রার্থী, নয়তো এই আসনগুলির রাজনৈতিক সমীকরণই আলাদা কৌতূহল তৈরি করেছে মানুষের মধ্যে৷

সবার প্রথমেই এই তালিকায় নাম উঠেছে কাঁথি উত্তর এবং কাঁথি দক্ষিণের। এই দুই কেন্দ্রে কোনো তারকা প্রার্থী না থাকলেও প্রথমে শুভেন্দু অধিকারী এবং দিনকয়েক আগে শিশির অধিকারীর বিজেপি-তে যোগদানের পর গোটা পূর্ব মেদিনীপুরের ফলাফল নিয়ে এ রাজ্য তো বটেই, গোটা দেশের রাজনৈতিক মহলেই আলাদা আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে৷ নিজেদের গড় কাঁথির দুই কেন্দ্র শাসক দল তৃণমূলের থেকে ছিনিয়ে নেওয়াও অধিকারী পরিবারের কাছে বড় অগ্নিপরীক্ষা৷ লোকসভা ভোটের ফল অনুযায়ী অবশ্য দুই কেন্দ্রেই এগিয়ে ছিল তৃণমূল কংগ্রেস৷

এরপর রয়েছে মেদিনীপুর। এই কেন্দ্রে এবছর বিধানসভা নির্বাচনে বাংলা সিনেমা জগতের জনপ্রিয় অভিনেত্রী জুন মালিয়াকে প্রার্থী করেছে তৃণমূল কংগ্রেস৷ জুন মালিয়া প্রার্থী হওয়ায় এই কেন্দ্রটিকে ঘিরে আমজনতার আগ্রহ দ্বিগুণ বেড়ে গিয়েছে৷ লোকসভা নির্বাচনের ফল অবশ্য বলছে, এই কেন্দ্র থেকে ১৬ হাজারের বেশি ভোটে এগিয়ে ছিল বিজেপি৷ ফলে কাজটা কঠিন রয়েছে জুনে মালিয়ার পক্ষে।

তালিকায় থাকছে শালবনির নামও। বাম আমলে বরাবর গড়বেতা থেকে লড়লেও এবার শালবনি কেন্দ্র থেকে লড়ছেন হেভিওয়েট সিপিএম নেতা সুশান্ত ঘোষ৷ তাঁর বিরুদ্ধে তৃণমূলের হেভিওয়েট প্রার্থী শালবনি কেন্দ্রের দু’ বারের বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতো৷ তবে লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে জঙ্গলমহলের এই আসনেও দু’ নম্বরে উঠে এসেছিল বিজেপি৷ তবে এগিয়ে ছিল তৃণমূলই৷ কিন্তু সুশান্ত ফ্যাক্টর কাজ করতে পারে বলেই মত বিরোধীদের।

অন্যদিকে, ঝাড়গ্রাম কেন্দ্রে এবার তৃণমূলের প্রার্থী সাঁওতালি সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী বিরবাহা হাঁসদা৷ এর আগে প্রতিবেশী ঝাড়খণ্ডে নির্বাচনে লড়লেও জয়ের মুখ দেখেননি বিরবাহা৷ তাই ঝাড়গ্রামে তাঁর শিঁকে ছেঁড়ে কি না, তা জানা যাবে ২ মে৷ বিজেপি এবং শুভেন্দু অধিকারীর শক্ত ঘাঁটি ঝাড়গ্রামেও অবশ্য কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হবেন বিরবাহা৷ লোকসভা ভোটের ফল বলছে, এই কেন্দ্রেও সামান্য হলে এগিয়ে রয়েছে বিজেপিই৷

এছাড়াও, পুরুলিয়ার বলরামপুর কেন্দ্র থেকে এবারও লড়ছেন রাজ্যের মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো৷ তবে এবার কাজটা যথেষ্ট কঠিন প্রবীণ এই মন্ত্রীর পক্ষে৷ কারণ লোকসভা ভোটের ফল বলছে, বলরামপুর কেন্দ্র থেকে ৩৫ হাজারের বেশি ভোটে এগিয়ে ছিল বিজেপি৷ তাই এবার কি হবে, সেই নিয়ে কিছুটা চিন্তিত তৃণমূল শিবির। সবমিলিয়ে ভোট শুরুর ১ দিন আগে থেকেই সরগরম এই সবকটি কেন্দ্রই। এখন দেখার, কোন সমীকরণে কে বাজিমাত করতে পারে এবারের ভোটে।