নিজস্ব সংবাদদাতা: গত রবিবার, ২মে বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলে অভূতপূর্ব সফলতা অর্জন করে রাজ্যে তৃতীয়বার ক্ষমতায় এসেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল তৃণমূল। ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনের থেকে এবার বড় সাফল্য পেয়েছে তৃণমূল। ২১৩টি আসন দখল করেছে ঘাসফুল শিবির। বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের এই বিপুল জয়ই উস্কে দিয়েছে, দিদিকে সামনে রেখে আগামী ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি বিরোধী জোটের ভাবনা।

তৃণমূল নেত্রী অবশ্য এই বিষয়টিকে ‘ভবিষ্যতের’ উপরেই ছেড়ে দিয়েছেন। তবে সেই সঙ্গেই ‘বার্তা’ দিয়েছেন, বিজেপির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়েরও। একটি সর্বভারতীয় টিভি চ্যানেলের সাক্ষাৎকারে মমতার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে তিনিই বিরোধী জোটের ‘মুখ’ হবেন কি না। সেই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘অনেক সময়ই আপনি তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না। ভোটের সময় অভিন্ন নূন্যতম কর্মসূচি থাকতে হয়। এখন কোভিড পরিস্থিতির বিরুদ্ধে একজোট হয়ে লড়াইয়ের সময়। লড়াই শেষ হলে আমরা এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব। আমাদের পরামর্শ দেওয়ার জন্য বিশেষজ্ঞদের একটি দলও গড়ব।’’

জাতীয় স্তরে বিজেপি-বিরোধী লড়াই জোরদার করতে পরামর্শদাতাদের সাহায্য নেওয়ার কথা জানালেও বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের বিপুল জয়ের নেপথ্যে ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের ভূমিকা নিয়ে এখনও অবধি সরাসরি কোনও মন্তব্য করেননি মমতা। এই সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে তাঁর সংক্ষিপ্ত জবাব, ‘‘আমি এই জয় মানুষের সঙ্গে ভাগ করে নিতে চাই। এটা তাঁদের জয়, তাই তাঁদের কাছেই উৎসর্গ করছি।’’

ওই সাক্ষাৎকারে বিজেপি-র বিরুদ্ধে রাজ্যে বিধানসভা ভোটে ধর্মীয় মেরুকরণের চেষ্টারও অভিযোগ এনেছেন তিনি। পাশাপাশি, প্রধানমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ এনে বলেছেন, ‘‘সিবিআই, ইডি-র মতো সরকারি সংস্থাকে ব্যবহার করে যে রাজনীতি নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহরা করছেন, এবার তার অবসান হওয়া উচিত। বিজেপির পুরনো নেতারাও মোদী-শাহের রাজনীতির ধরনকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। দেশকে আর এমন রাজনীতির মুখোমুখি হতে দেওয়া যায় না। মোদী-শাহের থেকে অনেক যোগ্যরা রয়েছেন।’’

প্রসঙ্গত, বিধানসভা ভোটের প্রচারপর্বের সময়ই মার্চ মাসে দেশের পনেরোটি বিরোধী দলের নেতাকে চিঠি দিয়ে বিজেপি-র বিরুদ্ধে একজোট হওয়ার আবেদন জানিয়েছিলেন মমতা। উল্লেখ্য, শুধু কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা নয়, রাজ্যে বিধানসভা ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভূমিকাকেও নিশানা করেছেন মমতা। তাঁর কথায়, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনী বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে।’’ একই ভাবে ভোটে তৃণমূলের বিপুল জয়ের পরেও নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ফের ‘পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের’ অভিযোগ তুলেছেন তিনি।